আওয়ামী লীগের শুধু লুটপাটের ও গণতন্ত্রকে হত্যার ইতিহাস : ডা. জাহিদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫২ পিএম, ২৫ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ০৪:২০ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, বিএনপি সব সময় গণতন্ত্রের কথা বলে, মানুষের মুক্তির কথা বলে। তাই বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ১০ দফা আন্দোলন করছে। কিন্তু স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ মাত্র তিন বছরে দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করে লুটপাটতন্ত্র কায়েম করেছিল। আওয়ামী লীগের ইতিহার লুটপাটের ইতিহাস, গণতন্ত্রকে হত্যা করার ইতিহাস। মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশল সিরাজ শিকদারকে রক্ষিবাহিনী হত্যা করেছিল। তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু মনে প্রাণে তা বিশ্বাস করে না। তারা শুধুমাত্র আওয়ামীতন্ত্রে বিশ্বাস করে। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের ন্যায় তারা আবারো ভোটচুরির প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের এই ষড়যন্ত্র সফল হবে না।
আজ বুধবার বিকেলে যুগপৎ আন্দোলনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গণতন্ত্র হত্যা দিবসে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা দাবীতে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
৪ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো দিনই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। কারন বাকশালের বিল সংসদে আসার পর ৬ জন এর বিরোধীতা করেছিলেন। কিন্তু মাত্র ১১ মিনিটের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী হয়ে সংসদে প্রবেশ করা শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি হয়ে সংসদ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। রাষ্ট্রপতি হতে কোনো ভোটের প্রয়োজন হয়নি। এখনো ভোটের প্রয়োজন হয় না। দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে প্রচার করে আজ কানাডা, মালয়েশিয়া ও লন্ডনে বেগমপাড়া তৈরি হচ্ছে, সেকেন্ডহোম তৈরি হচ্ছে। আর দেশে তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বার বার বাড়ানো হচ্ছে। দেশে শুধুমাত্র আওয়ামিলীগ ছাড়া আর কেউ ভালো বেই। তাই এই পরিস্থিতি মুক্তি পেতে গণঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। কেবলমাত্র গণঐক্য সৃৃষ্টি করতে পারলেই দেশে গণতন্ত্র কায়েম হবে, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে, বেগম জিয়াকে মক্ত করা যাবে, দেশের মানুষ শান্তিতে বাঁচতে পাবরে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে সম্মূখসমরে যুদ্ধ করেে দেশকে শত্রুমুক্ত করেছিলেন। আমরাও দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না করে রাজপথ ছাড়বনা।
সিলেট রেজিষ্ট্রারী মাঠে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
সিলেট মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হুমাইয়ুন কবির শাহীন ও রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, দেশের ইতিহাসের কালো অধ্যায় ২৫ শে জানুয়ারী। এই দিনই মুলত গণতন্ত্র হত্যার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওয়মানী সেদিন আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করে এর প্রতিবাদ করেছিলেন। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র, মানুষের মুক্তির কথা বলে অতচ তারা মাত্র তিন বছরের মাথায় গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল, দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। রক্ষীবাহিনী বেপরোয়া ভাবে খুন, গুম, ধর্ষণ সহ সকল অপকর্ম বীরের বেশে চালাত। তারা আবারো দেশকে বাকশালের দিকে নিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে সব কিছু করতে পারে। দেশের প্রতি তাদের কোনো মমত্ববোধ নেই, তারা যেকোনো মূল্যে নিজেদের দখলদারত্ব বজায় রাখতে চায়। তাই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য, দেশে আইনের শাসন কায়েম করার জন্য ১০ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে এই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিকল্প নেই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন বলেন, আজ সেই কলঙ্কময় ২৫শে জানুয়ারি, বাংলাদেশের ইতিহাসের কালো অধ্যায়। ১৯৭৫ সালের এই দিনে দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল। তারা দেশের মানুষের কণ্ঠরোধ করার জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় মাত্র ৪টি পত্রিকা রেখে দেশের সকল পত্রিকাকে বন্ধ করে দিয়েছিল। রক্ষিবাহিনীকে মানুষ হত্যার লাইসেন্স দিয়েছিল, তারা হাজার হাজার বিরোধী মতের নেতাকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছিল। সেই পেতাত্মারা আজো দেশে বাকশাল কায়েম করতে চায়। বর্তমান সরকারও গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। তাই দশ দফা আন্দোলন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে দেশের মানুষ অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছে। অনেক মানুষ এখন দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষ কষ্টে আছে। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা সার্বভৌমত্য ও গণতন্ত্র চায় না। তারা শুধু ক্ষমতা চায়। বিএনপি জনগণকে নিয়ে মাঠে থাকবে, আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। তাই সরকারের অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে সবাই কে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সহ হাজার হাজার নেতা কর্মী কে তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে কারাগার থেকে মুক্ত করতে হবে। এই দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করতে হবে, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নজিবুর রহমান নজিব, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা যুবদলের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন, মহানগর যুবদলের সভাপতি শাহনেওয়াজ বক্ত চৌধুরী তারেক, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদ মকসুদ, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মির্জা সম্রাট হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শাকিল মোর্শেদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আফসর খাঁন, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি সুরমান আলী, মহানগর শ্রমিক দলের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন জীবন, জেলা মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক একেএম তারেক কালাম, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব তাজরুল ইসলাম তাজুল, জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির শেপী, মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা জামান রুজি, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এ্যাষ, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার, জেলা জাসাসের সদস্য সচিব রায়হান এইচ খান প্রমূখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নাসিম হোসাইন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হুমাইয়ুন কবির শহীন, এমদাদ হোসেন চৌধুরী, সালেহ আহমদ খসরু, সৈয়দ মিছবাহ উদ্দিন, আহবায়ক কমিটির সদস্য মাসুদ আহমেদ, মাহবুব কাদির শাহী, নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ, আখতার রশিদ চৌধুরী, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম, সিলেট জেলা বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন, মামুনুর রশিদ মামুন, অ্যাডভোকেট হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, আবুল কাশেম, কোহিনুর আহমদ প্রমূখ।