কেনাবেচার হাটে যদি কেউ না ওঠে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত : গয়েশ্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০৫ পিএম, ২২ জানুয়ারী,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৬:৩৯ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘জনযুদ্ধ, গণযুদ্ধ, গণতন্ত্রের জন্য যে যুদ্ধ, আশা করি বেঈমানি করবেন না। আমি আশ্বস্ত করতে চাই, বিএনপি বেঈমানি করবে না, খালেদা জিয়া এখনও জীবিত। তিনি বেঈমানিও জানেন না, আপস জানেন না। সে কারণেই তার কপালে এতো কষ্ট। তারেক রহমানের বেঈমানি করার সুযোগ নাই, আঁতাত করারও সুযোগ নাই। কারণ তার জীবন-মরণ মাতৃভূমিকে ঘিরে। তাই কেনাবেচার হাটে যদি কেউ না ওঠে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আজ রোববার বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত আলোচনা সভায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবি এবং জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনার আয়োজন করা হয়। বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘এই সরকারের বিদেশি বন্ধুরা কিছু কিছু দেনদরবার কেনাবেচা করে থাকে। সত্য-মিথ্যা জানি না, কানে আসে। সুতরাং ঐ কেনাবেচার হাটে যদি কেউ না ওঠে তাহলে বিএনপির সাথে বিশ্বাস করে শেখ হাসিনা পতনের আন্দোলন আগামী দিনে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন বাংলাদেশে নিশ্চিত; কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘আমার বই লেখার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। এখন মনে হয় আমার কথাগুলো বলতে হবে। তাই আমি বই লিখব। আজকে সূচনার কিছু কথা বললাম। কারণ আমি আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি নেতাকে চিনি তাজউদ্দীন থেকে শুরু করে। কথাগুলো সবার জানার দরকার।’ শেখ হাসিনার প্রতি ইঙ্গিত করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ভোট চুরি যদি অপরাধ বুঝতে পারেন তাহলে মানে মানে কেটে পড়ুন। সত্যি কথা বললে দেশদ্রোহী, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললেই অপরাধ।’
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়নি উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমি নাকি বলছি স্বাধীনতা বাই চান্স? স্বাধীনতা বাই চান্স আওয়ামী লীগের জন্য হতে পারে। আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। দেশের মানুষ যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে।’ একটি বেসরকারি টেলিভিশনের রিপোর্টের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘একজনের বক্তব্য পুরোপুরি না শুনে, খন্ড খন্ড বক্তব্য কেটে, তা দিয়ে দেশদ্রোহী, রাষ্ট্রদ্রোহী বানাতে পারবেন। যাক এটা নিয়ে আর কথা বলতে চাই না, রাষ্ট্রের অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বললেই রাষ্ট্রদ্রোহী হয়ে যায় না।’
মুক্তিযুদ্ধাদের উদ্দেশে করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, আপনারা মনে করবেন আপনারা স্বাধীনতার যোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা না। কারণ মুক্তিযুদ্ধ তো এখনও চলছে। সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক অধিকারের যুদ্ধ এখনও চলমান। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধ তো এখনও চলছে।
আলাল বলেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে তাদের বলি আপনারা মনে করবেন আপনারা স্বাধীনতার যোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা না। কারণ মুক্তিযুদ্ধ তো এখনো চলছে। সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক অধিকারের যুদ্ধ এখনো চলমান। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধ তো এখনও চলছে। স্বাধীনতার যুদ্ধ হয়েছে। আমরা একটা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি কিন্তু প্রতিটি নাগরিকের যে মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচারের চাহিদা তা এখনও পায়নি।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা নিজে স্বীকার করেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম তার শিক্ষক। তিনি বলেছেন ব্রিটিশের চেয়ে পাকিস্তানের অবস্থা খারাপ ছিল, আর পাকিস্তানের চেয়ে এই সরকারের আমলে অবস্থা খারাপ চলছে।’ শেখ হাসিনার শিক্ষক তাকে নিয়ে সমালোচনা করছেন। তাকে জেলে ভরে দেন।
যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা যেটুকু সমৃদ্ধ, যেটুকু স্বচ্ছ পানি তা জিয়াউর রহমানের অবদান আর যেটুকু ঘোলা পানি, অস্বচ্ছ পানি তা আওয়ামী লীগের অবদান। আজ দেশের অর্থনীতির যতগুলো পিলার তার অবদান জিয়াউর রহমানের। পল্লী বিদ্যুৎ, বিদেশি রেমিটেন্স জিয়াউর রহমানের অবদান। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে বলতে আওয়ামী লীগের মুখে ফেনা উঠে যায় সেই মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। অর্থাৎ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও তার উত্তরসুরিরা বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য অবদান রেখেছেন এবং আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টা করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য নুরুল হক নুরু প্রমুখ। অলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান।