যত অত্যাচার আসুক সরকার পতন ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেই’ হবে : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০৪ পিএম, ১৪ জানুয়ারী,শনিবার,২০২৩ | আপডেট: ০২:১৩ এএম, ১৬ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
যত অত্যাচার আসুক সরকার পতন ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেই’ হবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শনিবার (১৪ জানুয়ারি) বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের এক অনুষ্ঠান তিনি এই প্রত্যায় ব্যক্ত করেন।
বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত বাগেরহাটের নুরে আলম তানু, ঢাকার মকবুল হোসেন এবং পঞ্চগড়ের আব্দুর রশিদ আরেফীনের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নিহত পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। পরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে অর্থ সহযোগিতার চেক পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে একটা দুঃসময় উপস্থিত হয়েছে যখন বর্বর একটা শক্তি, দানবীয় একটা শক্তি আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, তছনছ করে দিচ্ছে। আমাদের দেশনেত্রীকে বছরের পর বছর তারা বন্দি করে রেখেছে। আমাদের প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ছয়'শ নেতা-কর্মীকে গুম করে ফেলা হয়েছে, সহাস্রাধিক নেতা-কর্মীকে খুন করা হয়েছে, আমাদের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী এখন জেলে আছে, এখনো আমাদের শীর্ষনেতারাও অনেকে জেলে আছেন, ছাত্র নেতারা আছে, যুব নেতারা আছে, স্বেচ্ছাসেবক নেতারা আছে। আমি কারো মুখে এতোটুকু ক্লান্তি দেখিনি, হতাশা দেখেনি। সবাই উজ্জীবিত- যত নির্যাতন আসুক, অত্যাচার আসুক, নিপীড়ন আসুক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এই ভয়াবহ দানবকে পরাজিত করবো।
সত্যিকার অর্থে আমরা এখানে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করব। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে যে যুদ্ধে নেমেছি, ইনশাল্লাহ আমরা সেই যুদ্ধে জয়ী হবোই হবো। নিহত নেতাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ‘বিএনপি সবসময় তাদের পাশে থাকবে’ বলে জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, যারা প্রাণ দিয়েছেন তারা একটা আদর্শের জন্যে, একটা লক্ষ্যের জন্যে প্রাণ দিয়েছেন। সেই আদর্শ সেই লক্ষ্য হচ্ছে তার নিজের দেশকে মুক্ত করবার জন্যে, এখানে সকল মানুষের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্যে, বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করবার জন্যে। এবার ২২ আগস্ট থেকে আমরা ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন শুরু করি তখন আমাদের প্রায় ১৫ জন ভাই শহিদ হয়েছেন এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী একনায়কতান্ত্রিক স্বৈরাচারী অনির্বাচিত সরকারের পুলিশের গুলিতে, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে। তারা চলে গেছেন শহীদ হয়েছেন কিন্তু বীরের মতো। তারা কেউ পিছনে পালাতে গিয়ে নিহত হননি, তারা সম্মুখ যুদ্ধে সামনে দাঁড়িয়ে বুকে পেতে দিয়েছেন। আমি তাদের দেশপ্রেমের জন্য যে আত্মোৎসর্গ সেই আত্মোৎসর্গ এদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের পরিচালনায় এই অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরহাদ হোসেন আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানি, বাগেরহাট জেলার স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক নিহত নুরে আলম তানুর স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, পল্লবীর থানার ৫ নং ওয়ার্ডে স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক মকবুল হোসেনের স্ত্রী হালিমা আখতার বর্ষা এবং পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রশিদ আরেফীনের স্ত্রী শিরিন আখতার বক্তব্য রাখেন।
এই অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।