জাতির সামনে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে : মঈন খান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৩৫ পিএম, ১৪ জানুয়ারী,শনিবার,২০২৩ | আপডেট: ১০:০৬ এএম, ১১ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, একটি দেশের সত্যিকারের পরিচয় হলো সে দেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতি। আজকে সেই সত্যিকারের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ইতিহাস থেকে আমাদের কোমলমতি বালক-বালিকাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার কাজ চালানো হচ্ছে। আমাদের উচিত এখন জাতির সামনে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা। সেজন্য আমাদের কাজ করতে হবে।
আজ শনিবার (১৪ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে প্রফেশনালস মুভমেন্ট অব বাংলাদেশের আয়োজিত ‘শিক্ষা ব্যবস্থায় বিজাতীয় আগ্রাসন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের সরকার দেশ শাসন করে না। তারা বসে বসে ইতিহাস লেখে। কিন্তু সেটা সত্যিকারের ইতিহাস নয়, কাল্পনিক ইতিহাস। আজকে যে পাঠ্যবইয়ের সমস্যা এটি আসলে পাঠ্যবইয়ের সমস্যা না। পাঠ্যবইয়ের প্রথম পৃষ্ঠায় যে ছবি রয়েছে সেটি বাংলাদেশের কোথাও কি দেখা যায়? যদি না দেখা যায় তবে এটি আমাদের কোমলমতি ছেলে-মেয়েদের মধ্যে কিভাবে গেলো?
তিনি বলেন, একটি দেশের পরিচয় শুধু উন্নয়ন দিয়ে হয় না। অথবা উন্নয়নের নামে দুর্নীতি দিয়েও একটি দেশের পরিচয় হয় না। বাংলাদেশের একটি শিশু যখন স্কুল-কলেজে যাবে তখন তাকে মুক্তচিন্তা করার সুযোগ করে দিতে হবে। তার সামনে সব তথ্য তুলে ধরতে হবে। এর ফলে সে যখন বড় হবে তখন সে নিজেই বুঝতে পারবে কোনটা করা ঠিক হবে আর কোনটা করা বেঠিক হবে। আমরা কেন এখন থেকে তাকে বলবো যে, সে কি করবে? সরকার এখন একটা ছোট শিশুর মধ্যে বিষ ঢুকিয়ে দেয়ার কাজ করছে।
সঠিক ইতিহাস লেখার জন্য কমিটির প্রস্তাব করে মঈন খান বলেন, আমরা কি পারি না এখানে ১০-১৫ জনের একটি কমিটি করে সঠিক ইতিহাস লিখে সেটি গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে দিতে। আমরা চাইলেই এটি করতে পারি। আমি চাই আমরা ৩-৪ মাসের মধ্যে সঠিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি আমাদের ছেলে-মেয়েদের সামনে তুলে ধরতে পারবো। আমরা যদি শিক্ষার আদর্শ বিশ্বাস করি, মানবতার আদর্শ বিশ্বাস করি তাহলে আসুন আমরা সেই পথে অগ্রসর হই। হিংসার রাজনীতি পরিত্যাগ করে একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে সামনে অগ্রসর হই।
আলোচনা সভায় বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, যখন বইগুলো ছাপানো হয় তখন আমাদের প্রতিবাদ করা উচিত ছিল। প্রতিবাদ এমন একটি জিনিস সেটা সব সময় করে যেতেই হবে। প্রতিবাদ করলে সমাধান হয় আবার সমস্যারও সৃষ্টি হয়। তাই প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে হয়।
তিনি বলেন, যারা স্বৈরাচারী, যারা ক্ষমতায় লিপ্স, যারা মানুষের অধিকার থেকে মানুষকে বঞ্চিত করে তারা কিন্তু বারবার পৃথিবীর ইতিহাসে আত্মমোচন করেছেন। তবে একটি কথা মনে রাখতে হবে তারা কিন্তু চিরস্থায়ী হয়নি। কেউ হয়তো ৫ বছর, ২০ বছর, ৩০ বছর বা ১০০ বছর থেকেছে। কিন্তু এক সময় তাদেরকে বিতারিত হতে হয়েছে। কাজেই সে কথাগুলো মনে রেখেই আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। প্রতিবাদ আমাদের করেই যেতে হবে।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর আবদুল লতিফ মাসুম। শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন তাজমেরী ইসলাম, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহ্সহ দেশবরণ্য শিক্ষাবিদ ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ।