বর্তমানে দেশে তীব্র প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে : গয়েশ্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৫২ এএম, ১৩ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ০৩:১২ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা বাস্তবায়ন ‘অসম্ভব’ নয় বলে মন্তব্য করেছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বিএনপির ২৭ দফার বিষয়ক এক আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘জিয়াউর রহমান কেনো বার বার আমাদের সামনে আসে। হি হেড এ ভিশন। তিনি দেশটাতে কিছু করতে চেয়েছিলেন বলেই এতো কিছু করে দিতে পেরেছেন। তার একটাই কথা ছিলো- কোনো কাজ অসম্ভব নয়।”
‘‘আমাদের মনে রাখতে হবে, শুরু করাটাই কষ্টের। যদি শুরু করতে পারেন, শেষ হবেই হবে। আমরা বিলম্বে হলেও সচেতনভাবে যা শুরু করেছি, অবশ্যই তা বাস্তবায়ন হবে।”
বিএনপির রুপরেখায় পর পর দুই বার প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর বলেন, ‘‘এখানে যে পর পর লেখা আছে-দুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। পরপর প্রধানমন্ত্রীর জন্য বার থাকলে বাকীরা মন্ত্রী হবেন কেনো? আনেন ইকুয়েল প্রিলাইজ এন্ড ইকুয়েল রাইটস, রেসপনসেবেলেটি সব তুলে দেন। আমি মন্ত্রী হইমু ১৪ বার, প্রধানমন্ত্রী হইবো দুই বার। তারপরে চান্স পাইলে হইবো। নো নেভার এগুলো হয় না।”
‘‘আনেন না পার্লামেন্টে দুই বারের বেশি এমপি হতে পারবে না। তাহলে তো অনেকটা চাপ কমে যায়। এগুলো করলে তো পরে অটোমেটিকলি রাজনীতিবিদরা ঠিক হয়ে যাবেন, তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার দারকার হবে না।”
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে, আমরা ক্ষমতায় যাবো যদি দেশে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। ক্ষমতায় গেলে আমরা কি করব এ বিষয়ে সবার পূর্ব থেকে প্রস্তুতি দরকার। কারণ এখানে কেউ কেউ বললো, আমাদের লীডারদের চরিত্র-টরিত্র নিইয়া। তাহলে আমাদেরও বেশি দরকার যে, কার কি চরিত্র তা জেনে রাখা।”
‘‘যারা রাজনীতি করছেন, পদের জন্য দৌঁড়াইতেছেন, যারা ভাবছেন ক্ষমতায় গেলে তো একটা কিছু পামু। আমাদের যারা এক্টিভিস্ট আছে তাদেরকে এ বিষয়টি(রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা) বেশি জানা দরকার, তাদের একটা মানসিক প্রস্তুতি দরকার যে, সব জনগণের জন্য দেশের জন্য, আমার জন্য এক্সট্রা কিছু রাখা হয় নাই-এটা মনে করে আপনাদের কাজ করতে হবে।”
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘‘৭২ সালে এক দলীয় লোকেরা এই সংবিধান তৈরি করেছে। যে ৭জন মেম্বার ছিলো সংবিধান প্রণয়ন কমিটিতে তার মধ্যে দুই জন ছিরো আওয়ামী লীগের বাইরে। ওই দুই জনের একজনও সেই সংবিধানে স্বাক্ষর করেননি। তাদের একজন ছিলেন সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত এবং আরেকজন মানবেন্দ্র লারমা।”
‘‘দুনিয়াতে কেনো দেশ পাবেন না যে একটা সংবিধান প্রণয়নে আলাদা কমিশন গঠিত না হয়। কনষ্টিটিউশনাল যে এ্যাসেম্বলি থাকবে সেই এ্যাসেম্বলিতে দুই তৃতীয়াংশ যদি অনুমোদন না দেয় তাহলে কখনো এটা গ্রহীত হয় না।”
তিনি বলেন, ‘‘এরা(আওয়ামী লীগ) একদল, একদলীয় শাসন কায়েম করবার জন্য সংবিধান প্রণয়ন করেছিলো। যারা সংবিধান প্রনয়ন করেছেন তারা কিন্তু সংবিধান প্রণয়নের উপযুক্ত লোকও ছিল না দুই একজন ছাড়া। উনাদেরকে কেউ ভোট দিয়ে এই কন্টিস্টিটিউশন বানানোর জন্য অথোরিটিও দেয় নাই।”
‘‘এখানে আমাদের সন্মান্বিত স্ট্যাডিং কমিটির সদস্য বসা আছেন। আমি উনাকে অনুরোধ করব তিনি যে এই কথাটা স্ট্যাডিং কমিটির সভায় উঠান। কি দরকার পুরনো একটা জিনিস বার বার টোপ দেয়া। এটাকে ছাড়েন। আপনারা নতুন সংবিধান তৈরি করেন। যে সংবিধান হবে বাংলাদেশের মানুষের জন্য যথোপযুক্ত। আপনারা ঘোষণা দিন ক্ষমতায় গেলে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবেন।”
সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে ‘এগরিকারচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এ্যাব’ এবং বিএনপির মিডিয়া সেলের যৌথ উদ্যোগে ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রুপরেখার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষন’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। সভার শুরুতে রূপরেখার ওপর বিশ্লেষনমূলক বক্তব্য রাখেন বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন।
এ্যাবের আহ্বায়ক রাশিদুল হাসান হারুনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, এ্যাবের অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডী, শামীমুর রহমান শামীম, অধ্যাপক ফজলুল হক ভুঁইয়া, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, গোলাম কাদির দুলাল প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।