খুলনা বিভাগীয় গণঅবস্থান কর্মসূচিতে শামসুজ্জামান দুদু
বিনাভোটের সরকারের সময় শেষ : কখন কি হয় বলা যায়না
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৫১ এএম, ১১ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ১১:৩৯ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা দাবি জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বিনাভোটের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময় শেষ। দেশের মানুষ জেগে উঠেছে, কখন কি হয় বলা যায় না। অবিলম্বে পদত্যাগ না করলে করুন পরিনতি হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশ ও শাসক দলের ক্যাডার দিয়ে গণতন্ত্র মুক্তিকামী বিএনপির নেতাকর্মীদের আর দমিয়ে রাখা যাবে না। দেশের জনগণ এদেরকে প্রতিরোধ করতে মাঠে নেমে পড়েছে। অবৈধ সরকার সবকিছুকে নিয়ন্ত্রণ করে আবারো একদলীয় শাসন কায়েম করার যে ষড়যন্ত্র করছে দেশের জনগণ সেটা হতে দিবো না! আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো। আমাদের নেতা দেশনায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনবো। বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে দেশের জনগণ ও সকল পেশাজীবিরা জেগে উঠেছে।
সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে লুটপাটে ব্যস্ত রয়েছে। যে চেতনায় দেশ স্বাধীন হয়েছিলো আজ তা ভুলুন্ঠিত। অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ বুধবার (১১ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় সারাদেশের ন্যায় খুলনায় বিভাগীয় শহরের কেডি ঘোষ রোডে অনুষ্ঠিত গণঅবস্থান পালন কর্মসুচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
দুদু আরো বলেন, এ সরকারের অধিনে আর কোন নির্বাচন নয়; যেকোন মুহুর্তে সরকারের পদত্যাগের সংবাদ পাবে দেশের জনগণ। আগামীর বাংলাদেশ বেগম খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ। আগামী দিনের বাংলাদেশ দেশনায়ক তারেক রহমানের বাংলাদেশ হবে। বিদ্যু, তেল, গ্যাসসহ দ্রব্যমুল্যবৃদ্ধির সীমাহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আগামী ১৬ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসুচি পালিত হবে। সেই কর্মসুচি থেকে সরকার পতনের পরবর্তী বৃহত্তর কর্মসুচি ঘোষণা করা হবে বলে তিনি জানান।
গণঅবস্থান কর্মসুচিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য মেহেদী আহমেদ রুমি বলেন, জনবিচ্ছিন্ন এই সরকার এখন কাগজের বাঘ, দেশ এখন পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এমপি মন্ত্রীরা পুলিশ ছাড়া চলাচল করতে পারছে না। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের চ্যালেঞ্জ করে তিনি বলেন কোনো বাহিনীর সদস্য ছাড়া মাঠে নামলে বাংলার জনগণের রোষানলে তারা পালাবার পথ খুজে পাবে না।
বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা সরকারকে হটিয়ে গণেতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত শহীদ জিয়ার সৈনিকেরা ঘরে ফিরবে না। ক্ষমতা দখলের জন্য নয়; দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
বিএনপির তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, ১৯৭১ সালে এদেশের মুক্তিকামী জনতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে দেশকে স্বাধীন করে ছিলো। তাঁর নেতৃত্বে দেশকে হানাদারমুক্ত করা হয়েছিলো। সেভাবে তাঁর সুযোগ্য উত্তরসুরি আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের জনগণ হাসিনা হটাও আন্দোলনে রাজপথে নেমেছে। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন না ঘটিয়ে জনগণ ঘরে ফিরবে না।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি সদস্য অ্যাড. শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে এবং জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান, মহানগর সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন ও জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পির পরিচালনায় গণঅবস্থান কর্মসুচিতে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ মাহমুদ হাসান খান বাবু, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামিম, সহ তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান শিমুল, সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাশ অপু, যশোর জেলার আহবায়ক অধ্যাপিকা নার্গিস বেগম, সাবেক সংসদ সদস্য মফিদুল ইসলাম তৃপ্তি, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী আলাউদ্দিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল আলম, সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন, কেন্দ্রীয় সদস্য সাবিরা নাজনীন, কেন্দ্রীয় সদস্য আয়শা সিদ্দিকা মানি, মেহেরপুর জেলা সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুন, সাবেক সংসদ্য রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা, ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি এম এ মজিদ, নড়াইল বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম, বাগেরহাট জেলা আহবায়ক ইঞ্জি. আকরাম হোসেন তালিম, সাতক্ষীরা জেলা আহবায়ক সৈয়দ ইফতেখার আলী, মাগুরা জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আহসান হাবীব কিশোর, ঝিনাইদ জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা, যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সাবিরুল ইসলাম সাবু, বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোজ্জাফর আহমেদ আলম, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরিফুজ্জামান শরিফ, কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা, জাহিদুজ্জামান মনা, মোজাফ্ফর আলম প্রমূখ। সকাল থেকে খুলনা মহানগর, জেলা ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে কেডি ঘোষ রোডে জড়ো হতে শুরু করেন। স্লোগানে-স্লোগানে বিএনপির চেয়ারপরসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছেন নেতাকর্মীরা। গণ অবস্থান কর্মসুচিতে মহানগর ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত জাসাস নেতাকর্মীরা সরকার বিরোধী গণসঙ্গিত পরিবেশন করেন। মহানগরী ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের গনঅবস্থান কর্মসুচিতে আগত বিএনপির নেতাকর্মীদের পুলিশ সদস্যরা তল্লাশী ও হয়রানি করেন। আগত নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে কে ডি ঘোষ রোড, স্যার ইকবাল রোড, ক্লে রোড, হেলাতলা রোড, স্টেশন রোড লোকে লোকরন্য হওয়ায় দুপুরের পর থেকেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সমাবেশ থেকে কারাবন্দি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলার নেতাকর্মীদের নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়।