বাংলাদেশ এখন ফ্যাসিস্ট হয়ে গেছে : আমীর খসরু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৪৭ এএম, ২ জানুয়ারী,সোমবার,২০২৩ | আপডেট: ০৩:১৪ এএম, ১৬ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন কোন দিকে যাবে তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে আছে। দেশ কোন পথে যাবে সেটা নিয়েও দ্বিধায় আছে। বিদেশীরাও উদ্বিগ্ন। কারণ বাংলাদেশ এখন ফ্যাসিস্ট হয়ে গেছে।
আজ সোমবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ২৭ দফা রুপরেখা ঘোষণা দেয়ার পর আওয়ামী লীগের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ প্রত্যেকটি দফা একেকটি ভিন্ন চিন্তা ভাবনা থেকে প্রণয়ন করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে রাজনৈতিক ফিলোসফি। যা খুব কম রাজনীতিবিদ করতে পারেন। সেই জায়গায় তারেক রহমান এই রুপরেখা ঘোষণা দিয়ে নিজের নেতৃত্বের যোগ্যতাকে বিশ্ব দরবারে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রুপরেখা’ ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। অনুষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে ছিল বিএনপির মিডিয়া সেল।
আমীর খসরু বলেন, আজকে নব্বই শতাংশ রাজনীতিবিদ বক্স থেকে বেরিয়ে চিন্তার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। তারা বিজনেস মনে করে শুধু। কিন্তু বিশ্ব যে এগিয়ে যাচ্ছে সেটা ভাবে না। সেই জায়াগাটা উপলব্ধি করেই কিন্তু তারেক রহমান এই রুপরেখা দিয়েছেন। যেমন তার বাবা জিয়াউর রহমান সাহসী কাজের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পরে তার মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মানুষের সব অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। মাঝে স্বৈরাচার সরকার দেশকে পিছনের দিকে নিয়ে যায়।
খসরু বলেন, আজকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে গভীর সঙ্কটে নিপতিত করেছে। যা অনেক গভীরে চলে গেছে। এখান থেকে মুক্তি পেতে হলে ২৭ দফা রুপরেখা বাস্তবায়ন করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত বিএনপি তুলে ধরেছে বলে সাধারণ মানুষ বলছে। বিদেশীদের কাছেও খুব বেশি গ্রহণযোগ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে বিএনপির ২৭ দফা রুপরেখা বাস্তবায়ন না হলে বাংলাদেশ পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। দেশকে গভীর গর্ত থেকে তুলে আনতে হলে ২৭ দফার বিকল্প নাই। এজন্য বিএনপির প্রতিশ্রুত থাকা দরকার।
আমীর খসরু বলেন, আজকে বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি শুরু হয়েছে। দেশের ৬৫ শতাংশ ব্যবসায়ী সংসদে বসে আছেন। তারা তো কোনো ভূমিকা রাখতে পারছেন না। আজকে দেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এটা তো তারাই করছে। আজকে দেশের অর্থনীতি আওয়ামী অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। সুতরাং পরিবর্তন দরকার। আপার হাউসের পরিবর্তন দরকার। যারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী তারা সেখানে যাবেন। তখনই দেশের স্থিতিশীলতা আসবে।
তিনি আরো বলেন, ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে বাঁচাতে হলে জনগণের সাথে কিছু চুক্তি বা ওয়াদা দিতে হবে। সেটাই করেছেন দেশনায়ক তারেক রহমান। যা রাজনীতিবিদরা খুব একটা করতে পারেন না। রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রুপরেখা ঘোষণা দিয়ে তারেক রহমানের নেতৃত্বের যোগ্যতা অনেক উপরে স্থান পেয়েছে।
রেইনবো নেশনের ব্যাখ্যা করে আমীর খসরু বলেন, রেইনবো নেশন হলো- আজকে নতুন প্রজন্মের কাছে ভাষা ও সংস্কৃতি পরিবর্তন হচ্ছে। এখানে অনেক ধর্মের ও বর্ণের মানুষ বাস করে। সবার ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতিকে প্রাধান্য বা সম্মান জানানোর জন্য রেইনবো নেশন। সেই জায়গা থেকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদকে মূলে রেখে নতুনভাবে রেইনবো নেশনের কথা বলা হচ্ছে। যা নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এই ধারণা মূলত দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছে। রেইনবো নেশন সারাবিশ্বকে বোঝায়।
ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপি রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের যে রুপরেখা দিয়েছে তা সময়োপযোগী। আসলে দেশের যে অবস্থা তার মেরামত ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। দেশ ও জনগণকে রক্ষার লক্ষ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাস্তব চিন্তা ধারা থেকে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রুপরেখা দিয়েছেন।
বিকল্পধারার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী বলেন, গণতন্ত্র হলো বুর্জোয়া পদ্ধতি। আজকে ক্ষমতাসীনরা দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো নষ্ট করেছে। তারা লুটপাট করে বিদেশে অর্থ পাচার করছে। আজকে দেশ ও জনগণকে রক্ষা করতে হলে রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের বিকল্প নাই।
স্বাগত বক্তব্যে জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের যে রুপরেখা ঘোষণা করেছেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী। এটি বাস্তবায়ন করা গেলে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার যে উদ্দেশ্য সেটা বাস্তবায়ন হবে। আমাদের লক্ষ্য জনগণের কল্যাণে কাজ করা। ক্ষমতা ভোগ করা নয়। ইতোমধ্যে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রুপরেখা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। সবাই প্রশংসা করছেন।
কাদের গণি চৌধুরী বলেন, লাইফ সাপোর্টে থাকা গণতন্ত্র ও লক্ষচ্যুত দেশকে পুনরুদ্ধার করতে হলে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের বিকল্প নেই। বিএনপি যে রুপরেখা দিয়েছে এটা জাতির মুক্তির সোপান।
অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি বলেন, বিএনপি ঘোষিত ২৭ দফা শুধু রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রুপরেখা নয়, এটা এখন বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির সনদ।
অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, বর্তমান সরকার দেশকে খাদের কিনারায় নিয়ে গেছে। এখান দেশের মানুষ ও দেশকে রক্ষার স্বার্থে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের যে রুপরেখা দিয়েছেন তা হলো আমাদের মুক্তির গাইডলাইন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, দেশ ভালো চললে তো আজকে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রুপরেখা লাগতো না। কিন্তু দেশের কী পরিস্থিতি? এখানে ভোটাধিকার নেই, গণতন্ত্র নেই। আর্থিক খাতে চলে লুটপাট। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ সরকারের লুটপাটে স্বদেশ আজ ধ্বংস প্রায়। এখানে থেকেই দেশ রক্ষার লক্ষ।