বিএনপি নেতা আরেফিনকে সাপের মত পিটিয়ে হত্যা করেছে পুলিশ : গয়েশ্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৪০ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:৩৫ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
পঞ্চগড়ে বিএনপির গণমিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত 'বিএনপি নেতার মৃত্যু হৃদরোগে'- তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদের এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এসময় জাতির সামনে তথ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে বলেন তিনি।
আজ বুধবার বিকেলে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার পাথরাজে নিহত বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ আরিফিনের বাড়িতে তার পরিবারকে সমবেদনা জানাতে এসে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি।
তিনি বলেন, সেদিন বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ আরিফিনকে পুলিশ লাঠিচার্জ করে সাপ পেটানোর মত মেরেছে। আর তথ্যমন্ত্রী বলছে তিনি হার্টফেল করে মারা গেছে। মূলত তথ্যমন্ত্রী অমানবিক, তার মুখে মনুষত্ব্যবোধের কোনো শব্দ উচ্চারণ হয়না। একটি জীবন কেড়ে নেয়ার পর এমন বাণী এক নিষ্ঠুরতা। মূলত হত্যার দায় বহন করার সৎ সাহস তাদের নেই। তাই মিথ্যাচারের মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিলেন তথ্যমন্ত্রী।
গয়েশ্বর বলেন, গত ২৪ ডিসেম্বরে বিএনপির দেশব্যাপী গণমিছিল কোনো সহিংস আন্দোলন ছিলনা। সাংবিধানিক নিয়মের মধ্যে এবং পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পন্থায় সেদিনের কর্মসূচি ছিলো। সেখানে বিনা উস্কানিতে পুলিশের লাঠিচার্জ কোনভাবেই কাম্য ছিলোনা, এটা মেনে নেয়া যায়না।
তিনি বলেন, যেই ডিসেম্বর মাসে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দেখার জন্য যুদ্ধ হয়েছিলো একাত্তর সালে। সেই বিজয়ের মাসেই গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গিয়ে বিএনপি নেতা আরেফিন জীবন দিলেন। লাখো শহীদের বিনিময়ে আমরা যে দেশ স্বাধীন করেছি ; আজকে সেই দেশের গণতন্ত্র পূণরূদ্ধারে গুম, খুন এবং একের পর এক জীবন বলি হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা বিশ্বাস করি জনগণের সামনে কোন শক্তি অতিতে টিকেনি, সফল হয়নি। এই সরকারও যাবে, যেতে হবে, তার থাকার কোনো রকম সুযোগ নাই। আমি মনে করি নির্যাতনের মাত্রা যত বাড়বে সরকারের যাবার পথ তত স্বল্প হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, রংপুর বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু, সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, নিহত বিএনপি নেতার স্ত্রী নাসরিন আক্তার, ছেলে আব্দুল্লাহ আল মাহিসহ বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
গত শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে গণমিছিলের প্রস্তুতি নেয় বিএনপি। বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা-কর্মীরা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকে সেখানে। পরে দলটি গণ মিছিল বের করলে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হন। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এঘটনায় গণমিছিলে আসা আব্দুর রশিদ আরেফিন (৫১) নামে এক বিএনপি নেতা নিহত হন বলে অভিযোগ করে বিএনপি। বিএনপির এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ এবং পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা আলাদা পৃথক বিবৃতি দিয়েছেন। তারা উভয়ই দাবি করেছেন বিএনপি নেতার মৃত্যু সংঘর্ষে নয়, হৃদরোগে হয়েছে। এছাড়া পুলিশ বাদী হয়ে সহস্রাধিক বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ৫টি পৃথক মামলা দায়ের করেছেন।