সরকার যেভাবে প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে তা মেরামতের বিকল্প নেই : নজরুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৫৯ এএম, ২৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ১২:১৩ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আসলে সরকার দুদক, নির্বাচন কমিশনসহ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলেছে। সে কারণে এসব মেরামতের বিকল্প কিছু নেই। যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন ও সুবিচার নিশ্চিত করা হবে। এটা তো সংবিধানের প্রস্তাবনায় লেখা আছে। রাষ্ট্র মেরামতের লক্ষ্যেই বিএনপি ২৭ দফা রুপরেখা ঘোষণা করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ বিষয়ক এই পর্যালোচনা সভার আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিল বিএনপির মিডিয়া সেল।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজকে সরকার জনগণকে ভোট দেয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। অথচ তারা নাকি জনগণের ভোটে নির্বাচিত। তাহলে জনগণ ভোট দিলো কোথায়? আগের রাতেই ভোটের বাক্স ভর্তি করা হয়েছে। যা সারাবিশ্বের লোকজন বলেছে। নির্বাচন কমিশনার নিজেও বলেছে। ২০১৪ সালে তো ভোট কেন্দ্রে ভোটার খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, আজকে সরকারী দলের নেতারা বলছেন বিএনপি নাকি রাষ্ট্র ভাঙচুর করেছে। আমাদের রুপরেখা নাকি স্ট্যান্টবাজি? তো রাষ্ট্র কি বস্তু? ধরা যায়? ছোঁয়া যায়? কিন্তু কিছু প্রতিষ্ঠান আছে। তেমনি একটি হলো সংবিধান। যাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। এটা হলো সর্বোচ্চ আইন। এ ধরনের বিষয় নিয়ে রসিকতা করা যায় না।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজকে যে গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছি সেই গণতন্ত্রের অবস্থা কী? গণতন্ত্রের প্রধান বাহন হলো নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে বাংলাদেশে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। বিরোধী দলের প্রার্থীকে ভোট করতে দেয়া হয় না। প্রচারণা চালাতে দেয় না। অর্থাৎ ভোট ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিরোধী দলগুলো সভা সমাবেশ করতে পারে না। আজকে একটি প্রধান বিরোধী দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য কারাগারে বন্দী। কোথায় আজকে ন্যায় বিচার? চারবার আবেদনের পরও জামিন নামঞ্জুর করেছেন।
তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএম কী জিনিস তা মানুষ টের পেয়েছেন। আজকে দেশের প্রধানমন্ত্রী দুর্ভিক্ষের কথা বলেন আবার আট হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ইভিএম কিনতে চাচ্ছেন। আসলে এই সরকার দুদক, নির্বাচন কমিশনসহ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলেছে। সে কারণে এসব মেরামতের বিকল্প কিছু নেই। যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন ও সুবিচার নিশ্চিত করা হবে। এটা তো সংবিধানের প্রস্তাবনায় লেখা আছে।
তিনি বলেন, যে দেশের প্রধান বিচারপতি সরকারের বিরাগভাজন হলে পদচ্যুত ও দেশছাড়া করা হয়, তাহলে সে দেশের বিচার বিভাগ কতোটা স্বাধীন? আমরা এসব বন্ধ করার লক্ষ্যেই রাষ্ট্র মেরামতের রুপরেখা ঘোষণা করেছি।
সাবেক এই রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের রাষ্ট্র মেরামতের রুপরেখা নিয়ে আরো যদি কারো কোনো প্রস্তাব থাকে সেগুলো বিবেচনা করা হবে। ২৭ দফায় বিভিন্ন কমিশন ও কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। সেসব করা হবে যোগ্য ও দক্ষ লোকদের দিয়ে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র মেরামতের যে রুপরেখা দিয়েছে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং তাৎপর্যপূর্ণ। বিএনপি সহনশীল রাজনীতি করে। যা শুরু করেছেন দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।
বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, বিএনপিই প্রথম রাষ্ট্রের দুর্বল বিষয় চিহ্নিত করে মেরামতের রুপরেখা ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশকে একটি যুগোপযোগী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যা প্রয়োজন বিএনপি সরকার গঠন করলে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে তা করা হবে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ যাচাই-বাছাই করে সংস্কার করা হবে।
ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ডা. মেহেদী হাসান ও দফতর সম্পাদক ডা. মোঃ ফখরুজ্জামান ফখরুলের পরিচালনায় বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ইসমাইল জবিউল্লাহ, ড্যাবের সাবেক সভাপতি একেএম আজিজুল ইসলাম, ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি এমএ সেলিম, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, প্রকৌশলী মোঃ হানিফ, ইউট্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, অধ্যাপক সৈয়দ নুরুল ইসলাম সহ সিনিয়র চিকিৎসক ও বিভিন্ন পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ।