তারা ডান্ডা মেরে ২০৪১ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চায় : সাকি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:১০ এএম, ২৪ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৫৩ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারি জোনায়েদ সাকি বলেছেন, আওয়ামী লীগ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারি দল। কিন্তু এ দলের বর্তমান নেতৃত্ব আইয়ুব-ইয়াহিয়া-টিক্কা খানের পথ ধরেছে। তারা ভোট ছাড়া ক্ষমতায় আছেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে পিটিয়ে, গুম করে, মামলা, হামলা করে তারা ক্ষমতায় আছেন। হাত কড়া ডান্ডা বেড়ি পড়ে মানুষকে মায়ের জানাজায় অংশ নিতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ নিষ্ঠুরতার সীমা অতিক্রম করেছে। সীমা অতিক্রম করছে টিকে থাকার জন্য। ডান্ডা মেরে তারা দুই হাজার একচল্লিশ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। কিন্তু তারা ভুলে গেছে ডান্ডা মেরে এ দেশে টিকে থাকা যায়না। মানুষকে ভয় দেখিয়ে তারা টিকে থাকতে পারবে না।
গতকাল শুক্রবার রারে গনসংহতি আন্দোলনের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন এর দুইদিনব্যাপী জেলা সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
এ সময় জুনায়েদ সাকি আরও বলেন, শুধুমাত্র তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়ে দেশের পরিবর্তন হবেনা। রাষ্ট্র পরিচালনা পদ্ধতি সংস্কার করতে হবে। দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ লাগবে। দুই কক্ষের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য লাগবে। যে ভোট বেশি পেলো সে পুরো দেশের মালিক, বাকিরা কেউ না - এটা বাংলাদেশে আর চলবে না। তিনশ আসনে তিনশজন এমপি নির্বাচিত হবে।
আর দলগুলোর মোট প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে দ্বিতীয় কক্ষে এমপি হবেন। এমপিরা নির্বাচিত হলেও তারা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেননা। দলেই নির্দেশে তাকে ভোট দিতে হয়। এটির অবসান করতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেছিল। অগ্নিসন্ত্রাস আওয়ামী লীগের কর্মসূচি থেকেই শুরু। আমরা দেখেছি কীভাবে গান পাউডার দিয়ে ১১ জন মানুষকে তারা পুড়িয়ে মেরেছিল।
বিএনপি তখন তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল। অথচ ২০০১-২০০৬ সাল আমরা দেখলাম তত্বাবধায়ক ব্যাবস্থাও কাজে আসল না। মাত্র দুটো নির্বাচনের মাথায় এমন ঘটনা ঘটল।
সাকি আরও বলেন, আপনারা ঢাকা প্রেসক্লাবের সামনে গেলে দেখবেন শিক্ষকরা শুয়ে আছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছেন বেতন বাড়ানোর জন্য, চাকরি স্থয়ী করার জন্য। এটা হলো অবস্থা। একটা দেশে উন্নতি কাকে বলে। সরকার যদি উন্নতি করতে চাইত, আওয়ামী লীগ এক শিক্ষা ক্ষেত্রেই ধারেকাছেও যেতে পারেনি।
শিক্ষার মানে উপরের দিকে নয় আমরা নিচের দিকে যাই। বাংলাদেশে শিক্ষার মান আর নেই। আজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের শিক্ষার অবস্থা আমাদের বুঝিয়ে দেয় শিক্ষার কী অবস্থা। কথায় আছে একটা জাতিকে ধ্বংস করতে হলে শিক্ষা ব্যাবস্থাকে ধ্বংস করে দিন। এ সরকার দেশকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, ওরা খেলতে চায়। খেলা মানে ওরা মাইরপিট করতে চায়। প্রতিপক্ষের হাত-পা বেঁধে পুলিশের রাইফেলের সামনে দাঁড় করিয়ে তারা বলে খেলা হবে। আমরা বলি এটি কাপুরুষের পরিচয়। আওয়ামী লীগের মতো দলকে আজ যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা দলটিকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন। জনগণকে ভয় দেখচ্ছেন। হাত ভেঙে দিতে বলছেন জ্বালিয়ে দিতে বলছেন।
মানুষকে পুলিশ গুন্ডাপান্ডার ভয় দেখান। এ শাসন টিকবে না। আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে এদেশের মানুষ লড়াই করেছে। আজ ভয় দেখিয়ে শাসন করা ও লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করা এই আপনাদের শাসন। এভাবে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। এ দল ক্ষমতায় থাকলে আমাদের ভবিষ্যৎ ভয়াবহ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তা ছিলেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগি অধ্যাপক শ্যামলী শীল। ছাত্র ফেডারেশনের জেলা শাখার সভাপতি ইলিয়াস জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন গনসংহতি আন্দোলনের জেলা শাখার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, পপি রানী সরকার, মশিউর রহমান খান রিচার্ড, সৈকত আরিফ, তাকবীর হোসেন, ফারহানা মুনা প্রমুখ।