গণমিছিল দিয়ে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সূচনা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:২০ এএম, ২৪ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৫২ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ১০ দফা দাবিতে আজ শনিবার সারা দেশে গণমিছিল নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি। এই কর্মসূচিতে একাত্মতা ঘোষণা করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২–দলীয় জোট, এলডিপি, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য বিরোধী দল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, কার্যত এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সরকার হটানোর লক্ষ্যে বিরোধী দলগুলোর যুগপৎ আন্দোলনের সূচনা হচ্ছে।
১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে বিএনপি ঢাকাসহ সারা দেশে ২৪ ডিসেম্বর (আজ) এই গণমিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিল। একই দিন ঢাকায় আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন হওয়ায় বিএনপি ঢাকার গণমিছিলের তারিখ পাল্টে ৩০ ডিসেম্বর করে।
সমমনাদের নিয়ে ২৪ ডিসেম্বর বিএনপির গণমিছিল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন
দলের নেতারা বলছেন, এই কর্মসূচি ঘিরে ১০ ডিসেম্বরের মতো উত্তাপ না থাকলেও সারা দেশে নেতা-কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ৭ ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে দেড় হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাংগঠনিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও সক্রিয় নেতাদের বেছে বেছে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এর আগে থানাভিত্তিক যেসব নেতা-কর্মীর তালিকা তৈরি করা হয়েছে, সেটা ধরেই গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন বিএনপির নেতারা। এর মধ্যেও চলে গণমিছিলের প্রস্তুতি।
বিএনপির সূত্র জানায়, যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি ‘গণমিছিল’ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সারা দেশকে সাংগঠনিকভাবে ২০টি মহানগর ও জেলায় ভাগ করে দলের স্থায়ী কমিটির ৭ সদস্যসহ ২০ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে কর্মসূচি সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা গণমিছিলে নেতৃত্ব দেবেন। বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত এই গণমিছিল হবে।
জানা গেছে, গণমিছিলের কর্মসূচির পর কেন্দ্রীয় নেতারা বিএনপির ‘রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখার’ ২৭ দফা নিয়ে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বসবেন। তাঁরা এ বিষয়ে স্থানীয় নেতাদের ‘ব্রিফিং’ বা ধারণা দেবেন, যাতে তাঁরা বিএনপির প্রস্তাবিত রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারেন। এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে ইতিমধ্যে নেতারা বিভিন্ন জেলা ও মহানগরে পৌঁছে গেছেন।
বিএনপির সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের গণমিছিলের নেতৃত্ব দেবেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন। স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় রাজশাহীতে, আবদুল মঈন খান খুলনায়, নজরুল ইসলাম খান কুমিল্লায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বরিশালে, সেলিমা রহমান গাজীপুরে, ইকবাল হাসান মাহমুদ ময়মনসিংহে থাকবেন। এ ছাড়া সিলেটে মো. শাহজাহান, কিশোরগঞ্জে আবদুল আউয়াল মিন্টু, নোয়াখালীতে শামসুজ্জমান, সুনামগঞ্জে আহমেদ আজম খান, নারায়ণগঞ্জে জয়নুল আবেদীন, ফরিদপুরে নিতাই রায় চৌধুরী, বগুড়ায় আমানউল্লাহ আমান, দিনাজপুরে মিজানুর রহমান (মিনু), চাঁদপুরে জয়নুল আবদিন ফারুক, ভোলায় মুজিবুর রহমান সরোয়ার, যশোরে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন ও রাজবাড়ীতে হাবিব-উন নবী খান গণমিছিলে নেতৃত্ব দেবেন।
এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিএনপির ১০ দফা আন্দোলনের সারকথা হলো, আমরা এই সরকারের পদত্যাগ চাই। অতএব ২৪ ডিসেম্বরের (আজ শনিবার) গণমিছিল হবে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করার জন্য যে আন্দোলন, তার সূচনামাত্র।’
তবে কর্মসূচি ঘোষণা করেও শেষ মুহূর্তে রংপুর মহানগর ও জেলায় আজকের গণমিছিল স্থগিত করা হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ গণমাধ্যমকে জানান, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারণে প্রশাসনের অনুরোধে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। সেখানে ৩০ ডিসেম্বর এই গণমিছিল হবে।