মধ্যনগরে যুবলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে সরকারি জায়গায় ভবন দখলের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪৫ এএম, ২২ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৩৩ এএম, ১২ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোস্তাক আহমেদ মধ্যনগর বাজারে সরকারি খাস জমি দখল করে স্থায়ী ৩টি ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। যুবলীগের সভাপতির প্রভাব খাটিয়ে বিনিয়োগ ছাড়াই জলমহাল থেকে অর্থ আদায়, ঠিকাদারি কাজে ভাগ বসানো, তদবির বাণিজ্য করে ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা বানিয়েছেন মোস্তাক।
মোস্তাকের নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলার মধ্যনগর বাজারে ৩ তলা পাকা বাড়ি ছাড়াও তিনি এখন চার-চারটি বাড়ির মালিক। গত ১৩ বছরের ব্যবধানে বহু জমির মালিক হওয়া ছাড়াও হরেক রকম ব্যবসাও দাঁড় করিয়েছেন। সরকারি জায়গা দখলের অভিযোগ তো আছেই। একাধিক ব্যাংক হিসেবে রয়েছে তার লাখ লাখ টাকা। রাজধানী টাকার অভিজাত এলাকায় বসবাস করা ছাড়াও চড়েন দামি গাড়িতে।
মধ্যনগর উপজেলা যু্বলীগের সভাপতি মোস্তাক আহমেদ এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ কথা বলার সাহস পায় না।
দলীয় প্রভাব খাটিয়ে মোস্তাক ২০১২ সালে মধ্যনগর বাজারের ঠাকোরকোনা ট্রলার ঘাট এলাকায় সরকারি খাস জমি দখল করে সেখানে আনোয়ারা ম্যানশন নামে তিন তলা ভবন নির্মাণ করেছেন মোস্তাক। ওই বছরই মধ্যনগর থানার সামনে জনৈক মিনা দে'র সরকারি লিজ জমি জোরপূর্বক দখল করে সেখানেও নির্মাণ করেছেন দুই তলা দালান। এছাড়াও মধ্যনগর মহেশখোলা রোডের হাসপাতালের পাশে সরকারি খাস জমি অবৈধভাবে দখল করে সেখানে টিনশেড বাড়ি করেছেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা ক্ষোভ রয়েছে।
এছাড়াও এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের জন্য মোস্তাকের নিজস্ব বাহিনী রয়েছে বলে এলাকায় অভিযোগ রয়েছে। এবং মোস্তাকের অন্য দুই ভাই রেজাউল ও আল-আমিনের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জনপ্রতিনিধি জানান, মোস্তাকরা ২০০৮ সালের আগে নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেয়া মোস্তাক যুবলীগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে তাদের অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটতে থাকে। নবগঠিত মধ্যনগর যুবলীগের হওয়ায় এখন এলাকায় সবচেয়ে প্রভাবশালী সে। এ ছাড়াও সরকারি খাসজমিতে পাকা ভবন কিংবা ভিত্তি স্থাপনের কোনো সুযোগ নেই। ওই ভবনের উচ্ছেদের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত যু্বলীগের সভাপতি মোস্তাক আহমেদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিককে বলেন, আপনি নিউজ করলে আমি আপনার বিরুদ্ধে মামলা করবো। এই বলে তিনি ফোনটি কেটে দেন।
এ ব্যাপারে মধ্যনগর ইউনিয়নের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. আরমান আলী বলেন, ভবন নির্মাণের বিষটি নিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মধ্যনগর থানার ওসি মো. জাহিদুল হক বলেন, মাদক ব্যবসাহী রেজাউল ও আল-আমিনকে গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদ হাসান খান বলেন, সরকারি খাস জমিতে স্থাপনার কোনো সুযোগ নেই। কিছু অসাধু ব্যক্তি মধ্যনগরে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খাস জমি অবৈধভাবে জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে সে গুলি অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, সরকারি খাসজমিতে পাকা ভবন স্থাপনের কোনো সুযোগ নেই। ইউএনও এবং এসিল্যেন্ডকে নির্দেশ দিয়েছি সরকারি জায়গা অবৈধভাবে দখলদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।