হাতকড়া-ডান্ডাবেড়ি নিয়েই মায়ের জানাজা পড়ালেন বিএনপি নেতা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৪০ এএম, ২১ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:০৯ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ২০, ২০২২, সকালে, গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পান গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আলী আজম। পাবরিয়াচালা এলাকায় নিজ বাড়িতে পৌঁছে তিনি হাতে হাতকড়া আর পায়ে ডান্ডাবেড়ি নিয়েই মায়ের জানাজায় পড়ান। মো. আলী আজমের মা সাহেরা বেগম, ৬৭, বার্ধক্যজনিত কারণে গত রোববার বিকেলে মারা যান।
মৃতের স্বজনেরা জানায়, কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আলী আজমের মা গত রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মারা যান। মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে শেষবার মাকে দেখতে ও মায়ের জানাজা নিজে পড়াতে আইনজীবীর মাধ্যমে সোমবার প্যারোলে মুক্তির আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। তবে সোমবার না দিয়ে আদালত তাকে মঙ্গলবার তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেন। পরে তিনি প্যারোলে মুক্তি পেয়ে হাতকড়া ও পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় নিজ বাড়ির পাশে মায়ের জানাজা পড়ান।
জানাজা চলাকালেও আলী আজমের হাতে থাকা হাতকড়া ও পায়ে ডান্ডাবেড়ি খুলে দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জানাজায় উপস্থিত লোকজন। জানাজার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকার লোকজনের মাঝে ব্যাপক আলোচনা হয়।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদসহ উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ বলেন, ‘মায়ের মৃত্যুর খবরে আলী আজমকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় জানাজার সময়ও তার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খুলে দেওয়া হয়নি।’
মৃতের ছোট ছেলে আতাউর রহমান বলেন, ‘জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করলে তাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি জানাজার নামাজ পড়ানোর সময় তার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খুলে দিতে বললেও পুলিশ খুলে দেয়নি। সম্প্রতি কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় গত ২৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামালার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলায় ২ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় আলী আজমকে। এ মামলায় আলী আজমসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরো ১৫০ জনকে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার কালিয়াকৈর উপজেলা শাখার সভাপতি শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘মানবিক দৃষ্টিতে বিষয়টি খুবই দৃষ্টিকটু। তিনি কোনো দাগী আসামি নন বলে শুনেছি। তাই তাঁকে শুধু হাতকড়া পরিয়ে জানাজায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিতে পারতেন।’