ঢাকায় বিএনপির গণমিছিল ৩০ ডিসেম্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:১৬ এএম, ১৭ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৫৫ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের কথা বিবেচনায় রেখে ঢাকায় ২৪ ডিসেম্বরের গণমিছিলের কর্মসূচি পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর করেছে বিএনপি। তবে অন্যান্য মহানগর ও জেলায় ২৪ ডিসেম্বরে ঘোষিত গণমিছিলের কর্মসূচি ঠিক থাকবে দলটির।
আজ শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এই পরিবর্তিত কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু বিএনপি সংঘাত চায় না, যেহেতু বিএনপি শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংকট নিরসন করতে চায়, সমস্যার সমাধান চায় এবং যেহেতু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব ২৪ তারিখে তাদের কাউন্সিলের কারণে আমাদের যে ঘোষিত কর্মসূচি সেই কর্মসূচির পরিবর্তন প্রত্যাশা করেছেন, চেয়েছেন, আহ্বান জানিয়েছেন আমাদের প্রতি। সেজন্য আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক আচরণ করতে চাই। আমাদের পূর্বঘোষিত ২৪ ডিসেম্বরের যে কর্মসূচি আমাদের ১০ দফা আদায়ের লক্ষ্যে- সেটা আমরা পূনর্বিনাস করেছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যেহেতু ঢাকায় আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য ২৪ তারিখে ঢাকায় আমরা গণমিছিল করব না। ঢাকা বাদে সারাদেশে গণমিছিলের যে কর্মসূচি আছে.. জেলা-মহানগরে সেটা অব্যাহত থাকবে।”
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ঢাকায় ২৪ তারিখের পরিবর্তে আমরা একটা উপযুক্ত দিনের চিন্তা করছিলাম। আমাদের কাছে মনে হয়েছে যে, ৩০ তারিখ সর্বোত্তম একটা চয়েজ, সবচেয়ে ভালো একটা অল্টারনেটিভ হতে পারে। এই কারণে অনির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে যা আমাদের আন্দোলন এবং নির্বাচিত যথাযথভাবে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার যে লড়াই সেই লড়াইয়ে জনগনকে ৩০ ডিসেম্বর স্মরণ করিয়ে দেয়া গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি বলেন, ‘‘কারণ ২০১৮ সালের এই দিনে(৩০ ডিসেম্বর) দিনের ভোট রাতে করে এই সরকার ক্ষমতায় এসছে। সেজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরে আমাদের ১০ দফা্র দাবির আলোকে এবং সেই ভোট জালিয়াতি এবং ভোট চুরির মাধ্যমে জোর করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত এই দুর্নীতিবাজ অগণতান্ত্রিক ও গণবিরোধী সরকারের পদত্যাগ, ওই সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচনের দাবিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদিন ক্রমবর্ধমান ঊধর্বগতির প্রতিরোধ, সরকার ও তাদের ঘনিষ্ঠজনদের সীমাহীন দুর্ণীতি-অনাচার-লুটপাটের অবসানের লক্ষ্যে নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পরিবর্তে জনগনের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার যে লড়াই সেই লড়াইকে আমরা এগিয়ে নেবো ৩০ তারিখের গণমিছিলের মাধ্যমে।”
তিনি আরোও বলেন, ‘‘আজকে আপনাদের(গণমাধ্যম) মাধ্যমে আমাদের সব বিভাগ ও জেলার নেতৃবৃন্দ ও জনগনকে অনুরোধ করব, ২৪ তারিখে গণমিছিলের কর্মসূচি সফল করার। আর ঢাকা মহানগরীর যারা আছেন তাদের প্রতি অনুরোধ করব যে, আগামী ৩০ তারিখে বিকালে সকলে এই গণমিছিলে অংশগ্রহন করবেন। একই সাথে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ সকল গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিও এই গণমিছিলে রয়েছে।”
গণমিছিল ঢাকায় কোথায় হবে তার স্থান পরে জানানো হবে বলে জানান নজরুল ইসলাম খান।
গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ থেকে ১০ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে আগামী ২৪ ডিসেম্বর গণমিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ
বিএনপির ১০ দফার মধ্যে সংসদ বিলুপ্ত করে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন, নুতুন নির্বাচন কমিশন তৈরি, খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দিদের মুক্তি প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ দফা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা মীর নেওয়াজ, কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমূখ নেতৃ্বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।