বিএনপি নেতা সোহরাব মৃত্যুতে গাজিপুর জেলা নেতৃবৃন্দ ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের শোক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১২ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:৩৬ এএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
না ফেরার দেশে চলে গেলেন গাজীপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক বিশিষ্ট শিল্পপতি দৈনিক আজকের জনতার সম্পাদক ও প্রকাশক মো. সোহরাব উদ্দিন। ২৩ দিন রাজধানীর এভার কেয়ার হসপিটালে লাইফ সাটেপার্টে থাকার পর আজ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না-ইলাইহি রাজিউন)। তিনি দেশের অন্যতম যমুনা শিল্পগোষ্ঠির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম বাবুলের সহোদর ছোট ভাই। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। তিনি স্ত্রী, সন্তান, আত্নীয়-স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী ও দলীয় কর্মী সমর্থক রেখে গেছেন।
সোহরাব উদ্দিন চলতি বছরের ৪ অক্টোবর থেকে ১৫ আক্টোবর পর্যন্ত তাঁর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে ছিলেন। এরই মধ্যে ১০ অক্টোবর গাজীপুর জেলা বিএনপির শোক মিছিলে হামলার ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় তিনি ৬ নম্বর আসামী হন। দেশে ফিরে তিনি ১৭ অক্টোবর ওই মামলায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্নসমর্পণপূর্বক জামিন প্রার্থনা করলে দুই দফা শুনানী শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। পাসপোর্ট ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র আদালতে দেখানোর পরেও তার মুক্তি মিলেনি। ২৩ অক্টোবর আদালত তাকে জামিন দিলে ওই দিন সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে তিনি গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন। এর আগে পোস্টারিংসহ তার মুক্তির দাবিতে দলীয় নেতাকর্মীরা রাজপথে একাধিকবার মিছিল সমাবেশ করেছেন। তার মুক্তির জন্য মিছিল সমাবেশ করার কারণেও দলীয় নেতাকর্মীরা মামলার আসামী হয়েছেন।
তাঁর ছেলে রায়হান আহমেদ হৃদয় সাংবাদিকদের জানান, গত ২০ নভেম্বর বিকেলে ঢাকায় বিএনপি’র দলীয় সভা শেষে একটি রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত কারণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ঢাকায় সিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপিটালে ভর্তি করা হয়। তিনি ২৩ দিন ওই হাসপিটালে নিবির পরিচর্চাকেন্দ্রে (আইসিও) চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মো. সোহরাব উদ্দিন রয়েল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দেশের শিল্প উন্নয়নে ব্যাপক অবধান রাখেছেন। গাজীপুর মহানগর বিএনপির একজন সফল সংগঠক হিসেবে চলতি বছরের ৩১ আগস্ট মহানগর বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্ব দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। তিনি কেন্দ্রীয় জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি, গাজীপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক আজকের জনতা’র সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় অনুদান দেয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
আগামীকাল বুধবার সকাল ১০টায় গাজীপুর শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে জানাযা শেষে বিকালে তার গ্রামের বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জে পারিবারিক কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। তার মৃত্যুতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি হাসান উদ্দিন সরকার, গাজীপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শওকত হোসেন সরকার, যুগ্ম আহবায়ক মঞ্জুরুল করিম রনি, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির মহাসচিব দেলোয়ার হোসেন, গাজীপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি খায়রুল ইসলাম, সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান, গাজীপুর প্রিন্ট মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন, সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
এদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শোক জানিয়ে বলেছেন, “মরহুম আলহাজ্ব মোঃ সোহরাব উদ্দিনের মৃত্যুতে তার শোকাহত পরিবারবর্গ, দলের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর ন্যায় আমিও গভীরভাবে ব্যথিত হয়েছি। মরহুম সোহরাব উদ্দিন মহানগর বিএনপি’র আহবায়ক পদ সহ নিষ্ঠার সাথে দলের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম-এর নীতি আদর্শ এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দর্শনে বিশ্বাসী আলহাজ্ব মোঃ সোহরাব উদ্দিন গাজীপুর মহানগর বিএনপিকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে যে ভূমিকা পালন করেছেন তা চির স্বরণীয় হয়ে থাকবে। তার মতো একজন আদর্শবান রাজনীনৈতিক নেতার মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত হয়েছি। তার মতো বলিষ্ট নেতাকে হারিয়ে দলের যে ক্ষতি হয়েছে তা সহজে পূরণ হবার নয়। মহান আল্লাহ যেন তাকে বেহেস্ত নসিব করেন।”
আমি তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকাহত পরিবারবর্গ ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।