যুগপৎ আন্দোলনে রাজপথে থাকবে লেবার পার্টি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫১ পিএম, ১০ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:৫০ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফা কর্মসুচীকে স্বাগত ও সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেছেন, জনগন আওয়ামী জুলুম নির্যাতন দুর্নীতি লুটপাট ও অর্থপাচার থেকে মুক্তি চায়। ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের সাইরেন বেজে উঠেছে। তাই সকল দেশপ্রেমিক গনতন্ত্রকামী শক্তিকে বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলন সংগ্রামে শামিল হওয়ার উদাত্ত আহবান জানাই। লেবার পার্টি ১০ দফা দাবী আদায়ে জনমত গঠন ও তীব্র আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলতে রাজপথে সক্রিয় ভুমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। গণতন্ত্র হরণকারী, লুটেরা ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ এখন সময়েরদাবী। অবিলম্বে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, গ্যাস ও পানির মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন, টিসিবিকে কার্যকর, রেশনিং ব্যবস্থা চালু ও কালোবাজারী সিন্ডিকেটকে শাস্তি দিতে হবে। অর্থপাচার, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত ও শেয়ার বাজারসহ রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুন্ঠনকারী চিহিৃত দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। গুমের শিকার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ফেরত, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনে জড়িতদের দ্রুত বিচারের মাধ্যমে শাস্থি নিশ্চিত করতে হবে। গ্রেফতারকৃত আলেম ওলামাদের মুক্তি ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ভাঙচুর এবং সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আজ শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিকাল ৫টায় লেবার পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফ্যাসিবাদী দু:শাসনের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলন জোরদার করার লক্ষ্যে সাংবাদিক সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব লায়ন ফারুক রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ইউসুফ আলী, এডভোকেট আমিনুল ইসলাম রাজু, হিন্দুরত্ম রামকৃষ্ণ সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম ইসলাম, মেজবাউল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক মোঃ রাসেল সিকদার, প্রচার সম্পাদক মনির হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য মোহাম্মদ রুমান সিকদার, ছাত্রমিশন সভাপতি সৈয়দ মোঃ মিলন ও প্রচার সম্পাদক হাফিজুর রহমান রিফাত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ১০ দফা দাবী আদায়ায়ের লক্ষে ১৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসুচী সফল করার আহবান জানানো হয়।
বাংলাদেশ লেবার পার্টি ১০ দফার ভিত্তিতে আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলবে :
১. বর্তমান অনির্বাচিত অবৈধ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে ভোটবিহীন, গণতন্ত্র হরণকারী, লুটেরা ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ।
২. বিদ্যুৎ, জ্বালানি, গ্যাস ও পানিসহ জনসেবা খাতের মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল।
৩. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনা, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারকে সিন্ডিকেট মুক্ত করা।
৪. গত ১৫ বছর ধরে বিদেশে অর্থ পাচার, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত ও শেয়ার বাজারসহ রাষ্ট্রীয় সব ক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্নীতি চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠন/দুর্নীতি চিহ্নিত করে অতি দ্রুত যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।
৫. ১৯৯৬ সালে সংবিধানে সংযোজিত ধারা ৫৮-খ, গ ও ঘ'-এর আলোকে একটি দল নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার/অন্তর্র্বতীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন।
৬. নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ সরকার/অন্তর্র্বতীকালীন তত্ত্ববধায়ক সরকার বর্তমান অবৈধ নির্বাচন কমিশন বাতিল করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, উক্ত নির্বাচন কমিশন অবাধ নির্বাচনের অনিবার্য পূর্বশর্ত হিসাবে 'লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' নিশ্চিত ও রাজনৈতিকদল নিবন্ধন শর্ত শিথিলে আরপিও সংশোধন।
৭. খালেদা জিয়াসহ সব বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, সাংবাদিক এবং আলেমদের সাজা বাতিল, সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও রাজনৈতিক কারাবন্দিদের অনতিবিলম্বে মুক্তি, দেশে সভা-সমাবেশ ও মত প্রকাশে কোনো বাধা সৃষ্টি না করা, সব দলকে স্বাধীনভাবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে প্রশাসন ও সরকারি দলের কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ বা বাধা সৃষ্টি না করা।
৮. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪সহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী সব কালা-কানুন বাতিল করা।
৯. গত ১৫ বছরে গুমের শিকার সব নাগরিককে উদ্ধার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করে যথাযথ শাস্থি নিশ্চিত, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ভাঙচুর এবং সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা করা।
১০. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে সরকারি হস্তক্ষেপ পরিহার করে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া।