এজাহারে ফখরুল-আব্বাসের নাম নেই : বিএনপির আইনজীবী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৩৩ পিএম, ৯ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:৫৭ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গত বৃহস্পতিবার রাত ৩টায় বাসা থেকে তুলে নেয়ার পর আজ শুক্রবার মিথ্যা নাশকতার মামলায় আদালতে পাঠানোর পর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসকে আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন ডিবির পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম। অন্যদিকে আদালতে বিএনপির এই দুই নেতার পক্ষে জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে জামিন আবেদন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। পরে পুলিশ তাদের কারাগারে নিয়ে যায়।
বিএনপি পক্ষের আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার বলেন, এই মামলার এজাহারে দুজন আসামিকে ইতিমধ্যে জামিন দেয়া হয়েছে। এজাহারে যাদের কথা বর্ণনা করা হয়েছে, তাদের বলা হয়েছে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের কর্মী। মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস এই মামলায় কোন অপরাধ করেছেন এমন কোনো কথা বলা হয়নি।
মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার বলেন, ৭ তারিখের মামলায় ৯ তারিখ পর্যন্ত এই দুদিনের কোনো বিষয় আসেনি। আমরা আদালতকে বলেছি- মির্জা আব্বাস এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বয়স্ক মানুষ এবং অসুস্থ। ওষুধ ছাড়া তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন চলে না। আগামীকাল একটি জনসভা আছে। সেখানে মির্জা ফখরুল প্রধান অতিথি এবং মির্জা আব্বাস বিশেষ অতিথি। তারা শান্তিপূর্ণ রাজনীতি করেন, ইতিমধ্যে আপনারা দেখেছেন। আর এজাহারে তাদের নাম নেই। তাই এই কথিত ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। যেহেতু এজাহারে আমানুল্লাহ আমান এবং আব্দুল কাদের ভূঁইয়ার নাম আছে তাদের জামিন দিয়েছেন। সেহেতু এজাহারে তাদের নাম নেই তাই তাদের জামিন দিয়ে দেন। এই বয়স্ক দুই মানুষকে গ্রেফতার করে পুলিশ যে ফরওয়ার্ডিং আদালতে পাঠিয়েছে সেখানেও তাদের কোনো অভিযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ১০ তারিখের সভাকে সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পুলিশকে ব্যবহার করে ফ্রাস্টটেডিং করতে চাচ্ছে। এই সরকার ভোটারবিহীন সরকার, তাদের ভয় হলো জনগণ একত্রিত হয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে তাদের যেকোনো সময় পতন হবে। সে জন্য তারা জনগণ দেখলেই ভয় পায়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত ৩টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে আসে ডিবি। সে সময় তার বাসার কেয়ারটেকারদের মারধর করা হয়। এদিকে একই সময়ে মির্জা আব্বাসকে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে আসে। তার স্ত্রীকে সে সময় ডিবি পুলিশ জানায় যে, তার সাথে আলাপ করতে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হচ্ছে। আলাপ শেষে তাকে বাসায় ফেরত পাঠানো হবে। ডিএমপির ডিবিপ্রধান হারনুর রশিদও প্রথমে জানিয়েছিলেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। পরে ছেড়ে দেয়া হবে। পরে অবশ্য তিনি তাদের আটকের কথা জানান।
উল্লেখ্য, গত বুধবার পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে ও নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায়। সেদিন পুলিশের টিয়ারশেল ও গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী মকবুল হোসেন মারা যান। পুলিশ নয়াপল্টন কার্যালয় থেকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ ৪ শতাধিক নেতাকর্শীকে আটক করে নিয়ে যায়।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নেতাকর্মীদের হত্যা ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করে বিএনপি। ৯টি সমাবেশে লাখ লাখ নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। সেসব সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখে বিএনপি মহাসচিব। আজ ঢাকায় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ। এর আগেই গ্রেফতার করা হলো বিএনপির শীর্ষ নেতাদের।