বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের জামিন না মঞ্জুর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৩৭ পিএম, ৯ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৪৩ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের হওয়া মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ শুক্রবার বিকাল ৫টার পর ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীম তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে বিকাল সোয়া ৪টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীমের আদালতে উপস্থাপন করে বিস্ফোরক মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দুই নেতাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম।অন্যদিকে ফখরুল ও আব্বাসের জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন তাদের আইনজীবীরা।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক দুই বিএনপি নেতার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালত সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গত বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। আহত হন অনেকে। এসময় বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে চাল, পানি, নগদ টাকা ও বিস্ফোরকদ্রব্য পাওয়া যায় বলে জানায় পুলিশ।
অভিযান চলাকালে নয়াপল্টন থেকে রিজভী, আমান উল্লাহ আমান, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সংঘর্ষের ঘটনায় ৪৭৩ জনের নাম উল্লেখ করে পল্টন মডেল থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। মামলায় ৪৭৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত দেড় থেকে দুই হাজার বিএনপির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। যদিও পরে আমান ও জুয়েল জামিনে ছাড়া পেয়েছেন।
ওই মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও কেন্দ্রীয় নেতা মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলে পুলিশ। এ জন্য আদালত এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।
প্রসঙ্গত, ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমাবেশ ঘিরে গত বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সড়ক বন্ধ করে দলটির নেতাকর্মীদের জমায়েত হওয়ায় পুলিশ তাদের সরাতে গেলে দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বেধে যায়। সকাল থেকেই নয়াপল্টনে কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে জমায়েত বড় হয়ে রাস্তার একপাশ বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে গেলে দুইপক্ষের মধ্যে পালটাপালটি ধাওয়া শুরু হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
দুই পক্ষের পালটাপালটি ধাওয়া ও সংঘর্ষে মকবুল হোসেন নামে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেক বিএনপি নেতাকর্মী।
সংঘর্ষের দিন ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল জোনের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, সমাবেশের স্থান নিয়ে যখন আলোচনা চলছে তখন এ সংঘর্ষ শুরু হলো। সকাল থেকেই পল্টনে বিএনপির নেতাকর্মীরা ভিড় করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। আমরা তাদের সরে যেতে বারবার অনুরোধ করি কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেননি। একপর্যায়ে তাদের সরিয়ে দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।
এ সংঘর্ষের পর আজ (৯ ডিসেম্বর) বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ ও আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের জানান, শনিবার রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠেই হচ্ছে তাদের বিভাগীয় গণসমাবেশ।