বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের নিন্দা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৫৪ পিএম, ৭ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৩৩ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতাকর্মীদের ওপর বর্বরোচিত হামলা, নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মীদের নির্মমভাবে হত্যার ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ।
আজ বুধবার(৭ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ এর সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের আহবায়ক প্রফেসর ডাঃ এজেডএম জাহিদ হোসেন ও সদস্য সচিব সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী বলেন, আজ রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টন এলাকায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ১০ তারিখের গণসমাবেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশ নির্বিচারে টিয়ারসেল নিক্ষেপ, হামলা, লাঠিচার্জ ও গুলি করে। বিএনপি অফিসের ভেতরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। সেখানে টিয়ারগ্যাস ছুড়ে এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার সৃষ্টি করে। অফিসের ভেতরে থাকা মহিলা নেতা-কর্মীরাও তাদের হাত থেকে রেহাই পায় নি। শুধু তা-ই নয়, আশেপাশের ভবনগুলোতে প্রবেশ করে সেখানে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করে। দুপুরের পর থেকে পুলিশ ও সরকারিদলের গুন্ডাবাহিনীর হামলায় গোটা এলাকায় এক ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করে। খুব কাছ থেকে গুলি করে বিএনপির দুইজন কর্মীকে নির্দয়-নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। গুলিবিদ্ধ হন অসংখ্য নেতা-কর্মী। নয়াপল্টনের পিচঢালা কালো রাস্তা রঞ্জিত হয় শহীদান ও আহতদের রক্তে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রিজভী আহমেদ, ঢাকা মহানগর (উত্তর) বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির আহবায়ক আবদুস সালাম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে। আমরা এই হত্যাকান্ড ও জাতীয় নেতাদের গ্রেফতারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এই বীভৎস তাণ্ডবের চিত্র দেখে সত্যিই আমরা হতভম্ভ।
আমরা নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও সহকর্মীদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। সেই সাথে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে এ হত্যার সাথে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে পেশাজীবিদের এই দুই নেতা বলেন, ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হওয়ার কথা, যা বানচাল করতেই সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে পুলিশ ও আওয়ামী হেলমেট বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছে। পুলিশের প্রত্যক্ষ মদদে লাঠিসোঁটা ও অস্ত্র সজ্জিত আওয়ামী লীগের হেলমেট গুন্ডাবাহিনী কর্তৃক বিএনপির কার্যালয়ে হামলা দেশে গুন্ডাতন্ত্র কায়েমের আরেক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এটি কল্পনাও করা যায় না।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় আরো বলেন, আগের রাতে ব্যালট পেপারে সিল মেরে ব্যালট বক্সভর্তি করে জোর করে ক্ষমতা দখলকারী গণধিকৃত এই সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ক্রমেই বেসামাল হয়ে পড়েছে। দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট, গুম, খুন, ক্রসফায়ার, ধর্ষণ, বিনাবিচারে হত্যা ও আয়নাঘর স্থাপন করে ভিন্নমতের নেতা-কর্মীদের আটকে রেখে নির্যাতন, জুলুম-নিপীড়নের কারণে ফ্যাসিস্ট সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। তারা ভাবছে পুলিশ ও দলীয় অস্ত্রধারীদের লেলিয়ে দিয়ে খুন করে, জেলেপুড়ে, জুলুম-নিপীড়ন চালিয়ে এবং সভা-সমাবেশে পন্ড করে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকবে। আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারকে হুশিয়ার করে জানিয়ে দিতে চাই, খুন করে, রক্তঝরিয়ে বেশি দিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। দেশের জনগণ আজ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। তারা দুঃশাসনের অবসান চায়। তারা বাঁচার মতো বাঁচতে চায়। তারা স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চায়। তা-ই জনগণ মনে করে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনই হচ্ছে মুক্তির একমাত্র পথ। জনগণের এ আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে। একই সঙ্গে সকল পেশাজীবিসহ দেশবাসীকে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানো আহবান জানাচ্ছে।