সরকার আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে : বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৮ পিএম, ৬ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৫১ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বেআইনিভাবে ব্যবহার করে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক ও ভীতিকর করে তুলতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। সোমবার রাতে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় বক্তরা এ অভিযোগ করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। সভায় নিম্নবর্ণিত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়।
১। সভায় বিগত ২৮ নভেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ পঠিত ও অনুমোদিত হয়। মহাসচিব সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে সভাকে অবহিত করেন।
২। সভায় আগামী ১০ ডিসেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিতব্য গণ-সমাবশের প্রস্তুতি বিষয়ে এই সমাবেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বিস্তারিত আলোচনা করেন। সভায় শান্তিপূর্ণভাবে ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর ২০২২ গণ-সমাবেশ সফল করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার অনুরোধ করা হয়।
৩। সভায় ঢাকার সমাবেশকে কেন্দ্র করে অনির্বাচিত সরকার পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে বেআইনি মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার এবং পুলিশি নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করা হয়। ইতিমধ্যে যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু এবং সহ-সভাপতি নুর ইসলাম নয়নকে রাজশাহী থেকে ফেরার পথে আটক করে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালত কর্তৃক ৪ দিনের রিমান্ডে নেয়ার তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করা হয়। ঢাকা মহানগর এবং সারা দেশে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫০০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার, বাড়ি-বাড়ি তল্লাশি, নির্যাতনে দেশে একটা ভয়াবহ ভীতি ও ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি হয়েছে। সভায় অবিলম্বে এই ধরনের বেআইনি গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা, পুলিশি তল্লাশি বন্ধ করে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। সভা মনে করে বিএনপির সংবিধান সম্মত ১০ ডিসেম্বর গণ-সমাবেশ নস্যাৎ করার হীন উদ্দেশ্যে এই ধরনের নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে সরকার। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বেআইনিভাবে ব্যবহার করে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক ও ভীতিকর করে তুলতে চাইছে সরকার। এই ধরনের গণতন্ত্র বিরোধী কর্মকান্ড থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সভা মনে করে, জনগণ স্বতঃফূর্ত অংশ গ্রহণের মাধ্যমে ১০ ডিসেম্বরের ঢাকায় শান্তিপূর্ণ গণ-সমাবেশ সফল করবে শত বাধা উপেক্ষা করে।
৪। সভায় গত ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির গণ-সমাবেশকে শতবাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে সফল করার জন্য রাজশাহী বিভাগের জনগণ, গণ-সমাবেশকে আয়োজনের জন্য গঠিত টিমের সকল সদস্য, রাজশাহী মহানগরসহ বিভাগের সকল জেলার সকল ইউনিট অঙ্গ সংগঠনসমূহের সকল ইউনিটের নেতৃবৃন্দকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়। সভা মনে করে, সরকারের ইংগীতে পরিবহন ধর্মঘট, পথে-পথে পুলিশি বাধা, গ্রেফতার মামলাকে উপেক্ষা করে লক্ষ্য মানুষের পায়ে হেঁটে, ভ্যানে, অন্যান্য বাহনে সমাবেশে উপস্থিতি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলনকে অনেক বেগবান করেছে। ফ্যাসিস্ট কর্তৃত্ববাদী, একনায়কতান্ত্রিক অনির্বাচিত আওয়ামী সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা, সংসদ বিলুপ্ত করা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, দেশে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান, গণতন্ত্রের আপোসহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩৫ লক্ষ নেতা-কর্মীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য করার আন্দোলনকে সফল করার লক্ষ্যে রাজশাহীর গণ-সমাবেশ অত্যন্ত ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।