মিথ্যা ও গায়েবি মামলা বন্ধ করে, গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির আহবান বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৪৪ পিএম, ১ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৫৬ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
অবিলম্বে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা বন্ধ করে, মামলাগুলো প্রত্যাহার করে গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের মুক্তির আহবান জানিয়েছে বিএনপি। সোমবার রাতে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ আহবান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাফত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ^র চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। সভায় নিম্নবর্ণিত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়।
১। সভায় বিগত ২১ নভেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ পঠিত ও অনুমোদিত হয়। মহাসচিব সিদ্ধান্তসমূহ সম্ভাবনাময় অগ্রগতি সম্পর্কে সভাকে অবহিত করেন।
২। সভায় জ্বালানি তেল, গ্যাস, পানি ও সকল নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিতে ভোলায় আব্দুর রহিম ও নূরে আলম, নারায়ণগঞ্জে শাওন, মুন্সিগঞ্জে শাওন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নয়ন মিয়ার হত্যা, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে যশোরে আলীম, সিলেটে কামাল, পটুয়াখালির সাবেক এমপি শাহজাহান খানের হত্যার প্রতিবাদে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভারপ্রাফত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ প্রায় ৪০ লক্ষ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে চলমান বিভাগীয় গণ-সমাবেশ কর্মসূচিতে কুমিল্লা মহানগরের কুমিল্লা বিভাগের গণ সমাবেশ সফল করার জন্য কুমিল্লা বিভাগের জনগণ, কুমিল্লা বিভাগের বিএনপিসহ সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়। সভা মনে করে এই সমাবেশ বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলনেকে আরও বেগবান করবে।
৩। সভায় চলমান গণ-আন্দোলকে দমন করার লক্ষ্যে অবৈধ সরকার পুলিশকে ব্যবহার করে ব্যাপক হারে পুনরায় সাজানো গায়েবি নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলা দিচ্ছে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। প্রতিদিন অসংখ্য নেতা-কর্মীদের বাড়ি-বড়ি তল্লাশি ও হয়রানি করছে। ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে প্রায় ৬ শতাধিক, মামলা হয়েছে প্রায় ২২ হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। একদিকে কোথাও বাধা দেয়া হবে না বলেও নির্বিচারে আটক ও গ্রেফতার চালাচ্ছে পুলিশ। সভা এই ধরনের নিকৃষ্ট দমন নীতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। সভায় অবিলম্বে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা বন্ধ করে, মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের মুক্তির আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় উদ্ভূত পরিস্থিতির সকল দায় এই অবৈধ সরকারকে বহণ করতে হবে।
৪। সভায় পূর্বে ঘোষিত ১০ ডিসেম্বর ২০২২ ঢাকা বিভাগীয় গণ-সমাবেশের স্থান নির্বাচন নিয়ে এই অবৈধ সরকারের দুরভিসন্ধিমূলক তৎপরতা নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় পূর্বে ঘোষিত ১০ ডিসেম্বরের গণ-সমাবেশ নয়া পল্টনে অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত পুনর্ব্যক্ত করা হয়। সকল দুরভিসন্ধি, বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে রাজশাহী ও ঢাকায় গণ-সমাবেশকে সকল করার জন্য জনগণকে আহ্বান জানানো হয়।
৫। সভায় গত একযুগে সীমাহীন দুর্নীতির শিকার দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর অধিকাংশ ক্রমশ দুর্বল হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েকটি কাগুজে কোম্পানীকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ প্রদানের ঘটনা গণ-মাধ্যমে ফাঁস হওয়ায় নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে এই অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে পরিকল্পিতভাবেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নজিরবিহীন দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ধ্বংস করে ফেলেছে। অর্থনীতি চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। সভায় সামগ্রিক আর্থিক খাত বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন তৈরি করে প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে জনগণের সামনে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৬। সভায় সিলেট মহানগরের বিএনপির সাংগঠনিক ওয়ার্ড ২৭ থেকে ৪২টি ওয়ার্ড বর্ধিতকরণের প্রস্তাব গৃহীত হয়। ৭। সভায় কয়েকটি সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা হয়। ৮। সভায় ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের আওতায় গ্রেফতারকৃত মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, একই আইনে সাবেক রাজবাড়ির স্মৃতি বেগম এবং মুন্সিগঞ্জের সদস্য সচিব কামরুজ্জামান রতনসহ আটককৃত সকল নেতা-কর্মীর মুক্তির দাবি করা হয়।