রাজশাহীর সমাবেশস্থলে তিন দিন আগেই বিএনপি নেতাকর্মীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৭ এএম, ১ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৫৮ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
আর দুই দিন পরেই রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে (হাজি মুহম্মদ মুহসীন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে) বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ। তবে গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর থেকেই সমাবেশস্থলে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। দূর-দূরান্ত থেকে চাল, ডাল, মুড়িসহ অন্যান্য শুকনো খাবার নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছেন তারা।
গতকালই বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। এরপর থেকেই শুরু হয়েছে মঞ্চ প্রস্তুত এবং মাঠে বাঁশ-খুঁটি পোঁতার কাজ। তবে পুলিশের শর্ত অনুযায়ী, যারা মাঠে কাজ করছেন, কেবল তারাই সেখানে প্রবেশ করতে পারছেন।
ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা নেতাকর্মীরা এখনো মাদ্রাসার ময়দানে প্রবেশ করতে পারছেন না। তারা আশ্রয় নিয়েছেন মাদ্রাসা মাঠের পাশে রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম (রহ.) কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে। গতকাল সন্ধ্যা থেকে আসা নেতাকর্মীরা খোলা আকাশের নিচে রাতটি সেখানেই কম্বল মুড়ি দিয়েকাটিয়েছেন। তবে নেতাকর্মীদের কোনো কোনো দল তাঁবু টানিয়েছে।
গতকাল দিনগত রাত ১২টার দিকে ঈদগাহ মাঠে গিয়ে দেখা যায়- চাল, ডাল, শুকনো খাবার, হাঁড়ি-পাতিল, লাকড়ি ও ব্যাগে প্রয়োজনীয় গরম কাপড় নিয়েই নেতাকর্মীরা এসেছেন। বেশির ভাগ নেতাকর্মী বাতাস ঠেকাতে একপাশে শুধু পলিথিনের বেড়া দিয়ে কম্বল জড়িয়ে শুয়ে পড়েছেন। কোথাও কোথাও রান্নার আয়োজন চলছে। কোথাও স্লোগান দিচ্ছেন নেতাকর্মীরা। রাজশাহীর স্থানীয় নেতারা ঘুরে ঘুরে তাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন।
জানতে চাইলে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার একটি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলিনুর রহমান আন্না বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হচ্ছে। তাই আগের দিনই আমরা চলে এসেছি। আমরা প্রায় ৪০০ নেতাকর্মী চারটি বাসে করে আসছিলাম। রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা কলেজ মোড়ে পুলিশ আমাদের বাস থেকে নামিয়ে দিয়েছে। পুলিশ গাড়িগুলো আটকে রেখেছিল। এরপর প্রায় ১৩ কিলোমিটার রাস্তা আমরা হেঁটে এসেছি।’
পাবনার বেড়া পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘লাল কার্ড’ দেখাতে সব বাধা অতিক্রম করে আমরা তিন দিন আগেই সমাবেশস্থলে এসে হাজির হয়েছি। যত কষ্টই হোক, সমাবেশ সফল করেই ফিরব আমরা।’
এদিকে রাজশাহীর এই সমাবেশে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ জড়ো করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। যদিও এই সমাবেশের আগে গত ২৬ নভেম্বর মহাসড়ক থেকে নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করাসহ ১১টি দাবি জানায় পরিবহন মালিক সমিতি। দাবি আদায় না হলে ১ ডিসেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়।
তবে এসব দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের কোনো পর্যায় থেকে পরিবহন মালিকদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। ফলে আলটিমেটাম অনুযায়ী পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে মালিক-শ্রমিকের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সমাবেশে নেতাকর্মীদের আগমন ঠেকাতে এই ধর্মঘট সরকারের চাপিয়ে দেওয়া। এর আগেও বিএনপির অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশের আগে ওই এলাকায় ধর্মঘট হয়েছে।