হাসপাতালগুলোকে চিকিৎসা বর্জ্য আলাদা করে হস্তান্তর করতে হবে : তাপস
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৩ পিএম, ৩০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০২:০৬ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল প্রতিষ্ঠানে সৃষ্ট সাধারণ বর্জ্য হতে চিকিৎসা বর্জ্যকে আলাদা করে সিটি করপোরেশন নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
আজ বুধবার দুপুরে খিলগাঁও তালতলা কবরস্থান ও মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এ মন্তব্য করেন।
মেয়র বলেন, চিকিৎসা বর্জ্য ধ্বংসে আমাদের প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে এখন পর্যন্ত হাসপাতালগুলো যথানিয়মে সাধারণ বর্জ্য হতে চিকিৎসা বর্জ্যকে পৃথক করছে না। এটা স্ব স্ব হাসপাতাল, ক্লিনিককে পৃথক করতে হবে। কিন্তু তারা সাধারণ বর্জ্যরে সাথেই চিকিৎসা বর্জ্য মিলিয়ে এগুলো ফেলে দিচ্ছি বা দিয়ে দিচ্ছে। সুতরাং সকল হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইনস্টিটিউটসহ চিকিৎসার কাজে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখন থেকেই সাধারণ বর্জ্য হতে চিকিৎসা বর্জ্যকে পৃথকীকরণের কার্যক্রম শুরু করতে হবে। যে সকল প্রতিষ্ঠানকে চিকিৎসা বর্জ্য সংগ্রহের জন্য আমরা নিবন্ধন দেবো, তাদের কাছে এটা হস্তান্তর করতে হবে। তারা সরাসরি আমাদের মাতুয়াইল ভাগাড়ে ইনসিনারেশন প্লান্টে নিয়ে আসলে আমরা সম্পূর্ণভাবে চিকিৎসা বর্জ্য থেকে ঢাকাবাসীকে মুক্ত করতে পারবো।
চিকিৎসা বর্জ্য সংগ্রহে অঞ্চলভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন দেয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসা বর্জ্য সংগ্রহ ও ধ্বংস করার প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে একটি ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল। ২০০৬ সালে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠানের সাথে এ নিয়ে একটি চুক্তি করা হয়েছিল। পরে সেই চুক্তির মেয়াদও বৃদ্ধি করা হয়নি। আমরা কিন্তু আমাদের কেন্দ্রীয় মাতুয়াইল ভাগাড়ে জায়গা দিয়েছি। সেখানে একটি ইনসিনারেশন, অটোক্লেভ করা হয়েছে। যাতে করে চিকিৎসা বর্জ্যগুলো আলাদা আলাদাভাবে নেয়া যায় এবং যেসব বর্জ্য ধ্বংসযোগ্য বা ধ্বংস করা অত্যাবশ্যক সেগুলোকে ধ্বংস করা যায়। পরে পরিবেশ অধিদফতর থেকে এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালাও করা হয়। সেই নীতিমালা অবলম্বন করে আমরা এখন প্রত্যেকটি অঞ্চলে আলাদা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করছি। যারা নীতিমালার আলোকে সকল কিছু পরিপালন করে সুষ্ঠুভাবে এগুলো সংরক্ষণ করবে এবং আমাদের মাতুয়াইল ভাগাড়ে নিয়ে সেগুলো ধ্বংস করবে।
পরিকল্পিত নগরায়নের মাধ্যমে ঢাকাবাসীর কল্যাণে সকল উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, আজকে আমরা এখানে একটি কবরস্থান ও মসজিদের উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করলাম। এই কবরস্থানের জমি দীর্ঘদিন ধরে দখল অবস্থায় ছিল। জমি নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা ছিল। আমরা পুরোটা দখলমুক্ত করেছি। পরিপূর্ণ জায়গা নিয়ে আমরা একটি সুন্দর কবরস্থান করছি। তার সাথে সাথে কবরস্থানের জন্য আনুষঙ্গিক যে বিষয়গুলো থাকে মসজিদ, গোসলখানা, জানাজার স্থান নির্মাণ করা হচ্ছে। এখানে ৩,৪০০টি কবর দেয়া যাবে। সুতরাং ঢাকাবাসীর কবরের জন্য যে চাহিদা রয়েছে, অত্র এলাকা সেই চাহিদা মেটাতে পারবে বলে মনে করি।
আইন অনুযায়ী যেসব প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা বর্জ্য উৎপাদন করে তাদেরকে উৎসেই তা আলাদা করার বিধান আছে উল্লেখ করে ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, পরিবেশ আইনেই এই বিধানটি সুস্পষ্টভাবে বলা আছে। আসলে অতীতে কিন্তু এটা নিয়ে আমরা কেউ ভাবি নাই। এখন আমরা প্রতিটি বর্জ্য এবং বর্জ্যরে উৎসস্থল চিহ্নিত করছি।
কবরস্থান ও মসজিদের উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে মেয়র কবরস্থান প্রাঙ্গণে একটি কৃষ্ণচূড়া ও ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী একটি রাধাচূড়া গাছের চারা রোপণ করেন।
এর আগে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস টিকাটুলি জামে মসজিদ পুনর্নির্মাণ, বাংলাদেশ মাঠ ভবন ও ধানমন্ডি নগর সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং এলিফ্যান্ট রোডে নবনির্মিত গণশৌচাগার উদ্বোধন করেন।
এসব অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব আকরামুজ্জামান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মাহী ও মিরাজ হোসেন, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের মধ্যে অঞ্চল-৪ এর মো. হায়দর আলী, অঞ্চল-১ এর মেরীনা নাজনীন, অঞ্চল-২ এর সুয়ে মেন জো, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক এবং কাউন্সিলরদের মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মাহবুবুল আলম, ৩৯ নম্বরের রোকন উদ্দিন আহমেদ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলোর কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।