গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে : খন্দকার মোশাররফ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৩ পিএম, ৩০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৩৬ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বর্তমান অবৈধ সরকার ব্যাংক লুটপাট নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে পারছে না। অর্থনীতি ধংস্ব করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশে দুর্ভিক্ষ আসছে। কিন্তু যারা দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছে তারা দুর্ভিক্ষ তাড়াতে পারবে না। তাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে এই সরকারকে টেনে হিছড়ে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে।
আজ বুধবার (৩০ নভেম্বর) বিকেল পৌনে ৫টায় ময়মনসিংহ নগরীর হরিকিশোর রায় সড়কে সারাদেশে বিরোধীমতের নেতাকর্মীদের হত্যা, মিথ্যা গায়েবী মামলায় গ্রেফতার ও পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে মহানগর বিএনপির আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দিনের ভোট রাতে দিয়েছিল। সিট পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে তারা দিনের ভোট রাতে করত না। তারা জানে- এদেশের জনগণ নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে আওয়ামী লীগের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। কারণ তারা দুর্নীতি লুটপাট করে দেশের অর্থনীতি ধংস্ব করে দিয়েছে। গণতন্ত্র হত্যা করেছে। সাত শত মানুষকে গুম করেছে। দশ হাজার মানুষকে বিচারবর্হিভূত ভাবে হত্যা করেছে।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, জনগণের দাবি নিয়ে বিএনপি মাঠে নেমেছে। এতে সরকার ভীত হয়ে সারাদেশে গায়েবী মামলায় গ্রেফতার শুরু করেছে। নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে ভয় ভীতি সৃষ্টি করেছে। ময়মনসিংহ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ফয়সাল, সোহেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নেত্রকোনায় নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সমাবেশে পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আপনারা গায়ের জোরে সরকারের অবৈধ নির্দেশনা অনুসারে এদেশের মানুষের মধ্যে নতুন করে ভয় ভীতি সৃষ্টি করবেন না। আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি। শপথ নিয়েছেন জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করবেন। এখনো সময় আছে এই অবৈধ সরকারের নির্দেশনা না মেনে জনগণকে অনুসরণ করুন। জনগণ বার্তা দিয়ে দিয়েছে তারা এই সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর অবৈধ সরকারকে বিদায় করতে কর্মসূচি আসছে। ওই কর্মসূচিতে যুগপৎ আন্দোলন শুরু হবে। এই স্বৈরাচার সরকার বিদায় না হওয়া পর্যন্ত যুগপৎ আন্দোলন চলমান থাকবে।
ময়মনসিংহসহ সারাদেশে বাস ধর্মঘট দিয়ে, সন্ত্রাসী হামলা করে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ঠেকাতে পারেননি উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ওই হামলায় সাবেক এমপি শাজাহান খান সরকারের পেটুয়া বাহিনীর হামলায় মৃত্যুবরণ করেছে। এনিয়ে আরও ৭জনকে হত্যা করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া দেশের মানুষের রাজনীতি করেন, তারেক রহমান দেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করে। তাই এই সরকার মিথ্যা মামলায় তাদের মুখ বন্ধ করতে সাজা দিয়েছে। সেই সঙ্গে সারাদেশে এক লাখ মামলায় বিএনপির ৩৭ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশে এই নজির নেই। এই অবৈধ সরকার সব করছে গায়ের জোরে।
কিন্তু দেশের জনগণ চ্যালেঞ্জ নিয়েছে, তারা বার্তা দিয়ে দিয়েছে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজনীতির সুযোগ করে দিতে হবে। এই জন্য এই স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় করতে হবে। কারণ কোনো স্বৈরাচার আপনি আপনি বিদায় হয় না। তাই এই সরকারকে টেনে-হেছড়ে বিদায় করতে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে। কোনো ইভিএম নয়, নিজের হাতে নিজের ভোট দিতে হবে। শেখ হাসিনার সময় শেষ, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ তারেক রহমানের বাংলাদেশ।
এই সরকার আপোষে যাবে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার নেই। র্যাব-পুলিশের বড় বড় কর্তাদের উপর আমেরিকা স্যাংশন দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার। এই সরকারের কথায় যদি আর কোনো অফিসার নির্যাতন করে, তাহলে আমরা আর বসে থাকতে পারব না।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে দিশেহারা। ক্ষমতা ধরে রাখতে তারা সারাদেশে মিথ্যা গায়েবী মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে ভীতি সৃষ্টি করতে চায়। কিন্তু এসব করে কোনো লাভ হবে না। দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। অচিরেই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করা হবে।
সমাবেশে মহানগর বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে যুগ্ম আহবায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ ও অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলীর যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কাজী রানা, শাহ শিব্বির আহম্মেদ ভুলু, অ্যাড. এমএ হান্নান খান, লিটন আকন্দ, একেএম মাহাবুবুল আলম, শামীম আজাদ, কায়কোবাদ মামুন প্রমূখ। এ সময় বিএনপির অংঙ্গ সংগঠনের র্শীষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।