আওয়ামী সরকার রক্ত ঝরানোর খেলায় উন্মাদ হয়ে উঠেছে : মির্জা ফখরুল

আওয়ামী অবৈধ সরকার রক্ত ঝরানোর খেলায় উন্মাদ হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শান্তিপূর্ণ কর্মীসভায় যাবার পথে বিএনপি’র ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এর গাড়ীবহরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা, কৃষকদলের সহ-সভাপতি আবুল বাশার আকন্দ এর গাড়ীসহ অন্যান্য নেতাদের গাড়ী ভাংচুর ও নেতাকর্মীদেরকে আহত করা হয়েছে। শেরপুরে নেতাকর্মীদের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে তাদেরকে আহত করাসহ মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের এই কাপুরুষোচিত, পৈশাচিক এবং ন্যাক্কারজনক হামলা ও মামলা দায়েরের ঘটনাকে অমানবিক, নির্দয় আখ্যায়িত করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা নিঃসন্দেহে চরম কাপুরুষতা। ক্ষমতার নড়বড়ে অবস্থা অনুধাবণ করেই আওয়ামী অবৈধ সরকার রক্ত ঝরানোর খেলায় উন্মাদ হয়ে উঠেছে। জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে গিয়ে সরকার নিজ দলের সন্ত্রাসীদেরকে দিয়ে বিরোধী মত ও বিশ্বাসের মানুষকে ধ্বংস করে দিতে চাচ্ছে। অশুভ উদ্দেশেই তারা এধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। আর এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকার নিজ দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর চালা্েচ্ছ নারকীয় তান্ডব। নেতাকর্মীদেরকে আহত করাসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে ঘায়েল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে অবৈধ আওয়ামী সরকার। আর এজন্য বিএনপি’র সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী কাউকেই ছাড় দিচ্ছে না তারা। বিএনপি’র ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এর গাড়ীবহরে হামলা, নেতাকর্মীদেরকে আহত করা এবং শেরপুরে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করাসহ ৬৬ জনের নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। ফুলপুরে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি রোকনুজ্জামান সরকার, উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি শামসুল হক, উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালমান ডুনন, সাধারণ সম্পাদক রায়হান শরীফ হলুদ, যুগ্ম সম্পাদক ফারুক হোসাইন, জেলা বিএনপি নেতা আমিরুল ইসলাম ভূইয়া মনিকে আহত করেছে আওয়ামী দুস্কৃতিকারিরা। ফুলপুরে আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের ওপর হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে উল্টো ফুলপুর উপজেলা যুবদলের সভাপতি সানোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক বিপুল কবির, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হক টুটুল, জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান সিরাজসহ ৩০/৩৫ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। গতরাতে গ্রেফতার করা হয়েছে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহবায়ক ওয়াজেদুল ইসলামকে।

তিনি বলেন, শেরপুরে গুরুতর আহত করা হয়েছে বিএনপি নেতা মো: আব্দুস সাত্তার কাউন্সিলর, মো: হারুন মিয়া, রিপন তালুকদার, ছাত্রদল নেতা সাগর আহাম্মেদ, হৃদয় হাসান, খালিদুজ্জামান আসিফ, আবু আছরা রনিসহ ১০০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে। শেরপুরে শহর বিএনপি সভাপতি এ বি এম  মামুনুর রশিদ পলাশ, জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: শফিকুল ইসলাম মাসুদ, বিএনপি নেতা রেজাউল করিম রুমি, আমিনুল ইসলাম শিপন, মো: সাইফুল ইসলাম, মো: দুলাল হোসেন, যুবদল নেতা মো: আতাউর রহমান আতা, ছাত্রদল নেতা মো: শওকত হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো: মামুন অর রশিদসহ ৬৬ জনের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব ঘটনা বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর চলমান জুলুম-নির্যাতনের খন্ডচিত্র।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার সকল ক্ষেত্রে নজীরবিহীন ব্যর্থতা আড়াল করতেই সরকার দেশব্যাপী একের পর এক অমানবিক ও নৃশংস তান্ডব ঘটাচ্ছে। আর দেশব্যাপী নারকীয় তান্ডবে সরকারের সহযোগী হিসেবে সহিংস সন্ত্রাসে মেতে উঠেছে আওয়ামী দুস্কৃতিকারিরা। ক্ষমতার মোহে আওয়ামী সরকার দেশ থেকে গণতন্ত্রকে কবরস্থ করার মাধ্যমে নিজেদেরকে হিংস্র করে তুলেছে। গণতন্ত্রের মূলোৎপাটন করে সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানুষকে নির্মমভাবে স্তব্ধ করতে সরকার বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কিন্তু জনগণ এখন আওয়ামী সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসন প্রতিরোধে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি নেতাকর্মীদের ওপর হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করছি। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবী করছি।