জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় 'সরকারের গভার্নেন্সের চিত্র' ফুটে উঠেছে : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০৮ এএম, ২২ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:০৬ এএম, ২৮ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
ঢাকায় দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় 'সরকারের গভার্নেন্সের চিত্র' ফুটে উঠেছে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) সকালে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী হামলায় আহত সাবেক সাংসদ রুমনা মাহমুদকে দেখার পর সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ''চারদিকে তাঁকালে চোর, চুরি, গুন্ডামি, মারামারি। তারা এতো কিছু করছেন, গুলি করে একজন দিনমজুরকে নাড়ীভুড়ি বের করে দিতে পারছেন। আর আপনাদের (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) সামনে দিয়ে জঙ্গি উদাও হয়ে যাচ্ছে। বুঝতেই পারেন তাদের (সরকার) গভার্নেন্স। কোন জায়গায় তারা গভার্নেন্সকে নিয়ে এসেছে।"
মির্জা ফখরুল বলেন, ''বাংলাদেশে একটা গভীর সংকটে পড়ে গেছে, একেবারে খাদে এসে গেছে। একদিকে অর্থনৈতিক সংকট, আরেক দিকে রাজনৈতিক সংকট। এর সমাধান না হলে এদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। আমরা এখনো মনে করি, এই সমস্ত সন্ত্রাস, অত্যাচার-নির্যাতন বাদ দিয়ে তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং দেশে একটা সত্যিকার অর্থে একটা অন্তবর্তীকালীন কেয়ার টেকার সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। অন্যায় কোনো মতেই সমস্যার সমাধান করার সম্ভাবনা আমরা দেখি না।"
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ''আওয়ামী লীগ দেশকে-জাতিকে গভীর সংকটে ফেলেছে বলে আমি মনে করি। এটা একটা ক্রিটিক্যাল টাইম মুভমেন্ট। যদি নির্বাচন ঠিক মতো না হয়, নির্বাচনে যদি জনপ্রতিনিধি সঠিকভাবে নির্বাচিত না হয়, সে দেশ কিভাবে চলবে? আপনারা পাশের দেশগুলোর দিকে দেখেন। ভারতের কি কম সমস্যা আছে? ভারতে নির্বাচন হচ্ছে, সকলে সেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করছে। নেপালে একেবারে বিপরীতমুখী রাজনৈতিক দলগুলো, সোশ্যালস্টি, র্যাভ্যুলেশনারী, লিবারেল ডেমোক্রেন্সি- ইলেকশন করছে এবং সবাই নির্বাচনে যাচ্ছে। সেখানে নির্বাচনে যাওয়ার পরিবেশ আছে। পাকিস্তানের মতো দেশ তারা পর্যন্ত নির্বাচনে যাচ্ছে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতি তাদের (রাজনৈতিক দল) বিশ্বাস আছে, আস্থা আছে। দুর্ভাগ্যজনক আমরা সেটা করতে পারি নাই। ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে আওয়ামী লীগ এই সংকট সৃষ্টি করেছে।"
'সর্বত্র ত্রাস সৃষ্টি করছে'
মির্জা ফখরুল বলেন, ''সিরাজগঞ্জে শুরু থেকে অর্থাৎ আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে একটা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা হয়েছে। এর মূল টার্গেটটা হচ্ছে, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও তার স্ত্রী। যেহেতু ২০০৮ সাল টুকু সাহেব নির্বাচন করতে পারেননি, নির্বাচন করেছেন ভাবী। সেজন্য নির্বাচনে জিতে এসছে এই যে প্রতিরোধ, প্রতিহিংসার ব্যাপার আছে। এটা তারা কনটিনিউ করে গেছে। আওয়ামী লীগ কোনো মতেই সন্ত্রাস ছাড়া টিকতে পারে না, প্রতিপক্ষকে তারা সহ্য করতে পারে না এবং সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে প্রতিপক্ষকে তারা নির্মূল করতে চায়। ত্রাস না করলে তারা শাসন করতে পারে না- এটা হচ্ছে তাদের পুরনো অভ্যাস। তারা সারাদেশে ত্রাস সৃষ্টি করছে।"
সাবেক সাংসদ রুমানা মাহমুদ জানান, গত ১৮ অক্টোবর সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার জামতৈলি রেলস্টেশন বাজার এলাকায় আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী বিভাগীয় সম্মেলনের লিফলেট বিতরনের এক অনুষ্ঠানে জেলার সভাপতি রুমনা মাহমুদসহ নেতা-কর্মীদের ওপরে আওয়ামী লীগ, যুব লীগ ও ছাত্র লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালায় তার গাড়ি ভাংচুর করে।
রুমনা মাহমুদের স্বামী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বাসায় বিএনপি মহাসচিবের সাথে মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন ও সদস্য শায়রুল কবির খান যান উপস্থিত ছিলেন।