রূপগঞ্জের চনপাড়ার ডন আ’লীগ নেতা, বজলু গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৯ পিএম, ১৮ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৫১ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ক্রাইম জোন চনপাড়ার ডন ও আওয়ামী লীগ নেতা কায়েতপাড়া ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান-১ বজলুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। র্যাবের ওপর হামলার অভিযোগে আজ শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে তাকে চনপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর চনপাড়া একালার কায়েতপাড়ায় অভিযানে গেলে র্যাবের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। র্যাবের ওপর হামলার অভিযোগে চনপাড়ার প্যানেল চেয়ারম্যান-১ বজলুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১।
র্যাব-১ জানায়, গত ১০ নভেম্বর রাতে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সিটি শাহীন নিহত হয়। সিটি শাহীনের সব অপকর্মের সেল্টারদাতা ছিলেন বজলু চেয়ারম্যান। এছাড়া র্যাবের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেন বজলু।
জানা যায়, নিহত সিটি শাহীনের একটি বড় অপরাধ বাহিনী রয়েছে এলাকায়। সে ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং চনপাড়া মাদক নির্মূল কমিটির সদস্য সচিব ছিল। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। হামলা-নির্যাতনের ভয়ে শাহীন ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস নেই কারও। প্রায় অর্ধশাতাধীক নারী, পুরুষ ও তরুণের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, চনপাড়ায় হয় না এমন কোনো কিছু নেই। চনপাড়ায় রাতকে দিন আবার দিনকে রাত বানিয়ে দেওয়া যায়। এখানে এমন কিছু মানুষ আছেন যাদের নিয়ন্ত্রণে পুরো বস্তিবাসী। বস্তিতে কোনো অনুষ্ঠান করতে গেলেও লাগে আ’লীগের প্রভাবশালীদের অনুমতি। তাদের কথা না শুনলে চলে নির্যাতন ও চাঁদাবাজি।
স্থানীয়রা জানায়, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী স্থানীয় এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার প্রভাবশালী ছেলে পাপ্পা গাজী সেল্টারে থাকা বজলু চেয়ারম্যানের ভয়ে চনপাড়ায় কারো মুখ খোলার সাহস নেই। বজলুসহ তার চার ভাই নিয়ন্ত্রণ করে পুরো চনপাড়া বস্তি। সঙ্গে রয়েছে কিছু অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। এসব অপরাধীরা দিনে-দুপুরে মাদক কারবারি, মারধর ও খুনসহ নানা অপরাধে জড়িত।
বস্তির লোকজন বজলু ও তার লোকদের বিষয়ে ভয়েও মুখ খোলে না। কথিত আছে, বজলুর কথা ছাড়া সেখানকার গাছেরে পাতাও নড়ে না। তার নামে ভয় দেখিয়ে ঘুম পাড়ানো হয় বস্তির শিশুদের। বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশ খুনের জেরে আলোচনায় এসেছে চনপাড়া বস্তির নাম।
বজলুর নামে কেবল রূপগঞ্জ থানাতেই হত্যা, অস্ত্র, মাদকের মামলা মিলিয়ে ১২টি মামলা রয়েছে। অস্ত্র ও খুনের মামলায় একসময়ের জেলখাটা বজলু এখন নাম লিখিয়েছিলেন সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তির খাতায়।