বিএনপি নয়, ক্ষমতাসীনরাই অগ্নি সন্ত্রাসের মূল হোতা : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১৭ পিএম, ৯ নভেম্বর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:১৬ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
বিএনপি নয়, ক্ষমতাসীনরাই অগ্নি সন্ত্রাসের মূল হোতা বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার বিকালে তিনটি সমমনা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শেষে সরকারের মন্ত্রী-নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই চলমান আন্দোলনের যে ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছে এবং তার যে গতি প্রতিদিন বাড়ছে এটাতে ভীত হয়ে তারা (ক্ষমতাসীনরা) আগের যে বিষয়গুলো সেই বিষয়গুলোকে নিয়ে আসছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে যেটা সত্য কথা সেটা হচ্ছে, এই যে অগ্নি সন্ত্রাসের মূল হোতা কিন্তু আওয়ামী লীগ নিজেই, সরকার নিজেই। সে সময়ে যতগুলো ঘটনা ঘটেছে প্রত্যেকটি ঘটনায় দেখা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগের লোকেরাই এর (অগ্নি সন্ত্রাস) সঙ্গে জড়িত। বাসের (অগ্নিসংযোগ) ব্যাপারটা নিশ্চয়ই মনে আছে আপনাদের। যেটা দেখা গেলো যে, বাসের মালিক হচ্ছে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য, স্বেচ্ছাসেবক পার্টির প্রধান এবং চৌদ্দগ্রামে যেটা ঘটেছিলো দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আসামি করে যে মামলাগুলো দেয়া হয়েছে সব কিছুর মূলে দেখা যায় যে, ছাত্রলীগ-যুব লীগ-আওয়ামী লীগের লোকেরাই জড়িত।
বিএনপি কোনো সন্ত্রাসের সাথে জড়িত নয় দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা (বিএনপি) একটা মুক্ত লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, আমরা নির্বাচন করা দল। কখনোই অগ্নি সন্ত্রাস বা সন্ত্রাস করে আমরা ক্ষমতায় যাইনি অতীতে, আমরা এখনো যেতে চাই না। তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, এতোগুলো সমাবেশ হয়েছে প্রত্যেকটা সমাবেশে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপরে কি রকম অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে। কিন্তু আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে, আমাদের দল থেকে কোনো রকমের কোনো সন্ত্রাস বা উস্কানি দেয়া হয়নি। তারাই উস্কানি দিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। অর্থাৎ এই চলমান আন্দোলনকে আবার ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য তারা এই পদ্ধতিটা বেছে নিয়েছে। কিন্তু তাতে কাজ করবে না। জনগণ দেখছে প্রতিমুহূর্তে কারা কি করছে না করছে।
এখন তারা সারভাইবেলের জন্য যেটাই করুক না কেনো এখন সেটা কাজ দেবে না। জনগণের একটাই দাবি এই সরকারকে পদত্যাগ করে চলে যেতে হবে। ‘কোনো ছাড় দেয়া হবে না’ সরকারের মন্ত্রীদের এরকম বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ছাড় কেউ কাউকে দেয় না তো। দাবি আদায় করে নিতে হয়। আর ওনারা যে বডি ল্যাংগুয়েজে কথা বলছেন- ওটা থাকে না। শেষ পর্যন্ত এই ধরনের ফ্যাসিস্ট সরকারের দেখা যায় যে, তাসের ঘরের মতো সমস্ত পড়ে যায়। ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এরশাদের একই ধরনের কথাবার্তা ছিলো, বডি ল্যাংগুয়েজ ছিলো। ৬ তারিখে কিন্তু ধপাস।
বিকাল ৪টায় মাইনোরিটি জনতা পার্টি, বিকাল সাড়ে ৪টায় বাংলাদেশ ন্যাপ ও বিকাল ৫টায় সাম্যবাদী দলের সঙ্গে সংলাপে বসেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মাইনোরিটি জনতা পার্টির চেয়ারম্যান সুকৃতি কুমার মন্ডল, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী এবং বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলেরে সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলাম নিজ নিজ দলের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। মাইনোরিটি জনতা পার্টির প্রতিনিধি দলে ছিলেন দিলীপ কুমার দাস, মোহাম্মদ আবদুল হাই, কমলেশ কুমার দাস, নিরদ বরণ মজুমদার, অশোক কুমার সরকার, ভবতোষ মুখার্জী সুবীর, শন্তু নাথ দাস, পল্লব চ্যাটার্জী, উজ্জ্বল চন্দ্র দাস, শেখর চন্দ্র সরকার, সুমন কুমার সরকার, কেয়া সেন ও মিঠুর ভট্টাচার্য। বাংলাদেশ ন্যাপের প্রতিনিধিরা হলেন, পরেশ চন্দ্র সরকার, আব্দুল বারিক, নুরুজ্জামান, মেহেদি হাসান এবং ওমর ফারুক। সাম্যবাদী দলের অন্য সদস্যরা হলেন, সুরাইফুল ইসলাম মাহফুজ, সাইফ উদ্দিন মাহমুদ, এরশাদ আলী, মেহেবুব মিয়া, আবু তাহের, শামসুল হক, আব্দুল গনি খান, সুমন হাওলাদার ও নুরুদ্দিন ঢালী।
বিএনপি মহাসচিবের সাথে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সরকার পতন আন্দোলনের কর্মকৌশল চূড়ান্ত করতে গত সেপ্টেম্বর থেকে বিএনপি মহাসচিব ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপ শুরু করেন।