ফরিদপুরে গণসমাবেশকে ঘিরে পুলিশী গ্রেফতার ও হামলার অভিযোগে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০৮ পিএম, ৯ নভেম্বর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:৩২ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ফরিদপুরে বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার এবং তাদের মা-বোনদের সাথে ন্যাক্কারজনক আচরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
আজ বুধবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এছাড়া বাধা বিঘ্নের কারণে ১২ নভেম্বরের সমাবেশ দুদিন আগে থেকেই শুরু হবে বলেও তিনি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, গতকাল রাতে গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে নগরকান্দায় আটজন ও ফরিদপুরে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফরিদপুরের বিএনপি নেতা মিনান, পংকজ চেয়ারম্যান, লুৎফর, শাজাহান ও বাবুলের বাড়িতে হামলা হয়েছে। ছাত্রদল নেতা মোনায়েমকে থানায় আটকে রাখা হয়েছে। কতজনকে গ্রেফতার করবেন? দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। একজনকে গ্রেফতার করবেন একশোজন জেগে উঠবে। এভাবে আপনারা রহিম, নূরে আলম, শাওনকে হত্যা করে দমাতে পারেন নাই।
তিনি বলেন, ১২ নভেম্বর ফরিদপুরের বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠানের জন্য রাজেন্দ্র কলেজের মাঠ চেয়ে চিঠি দিলেও অনেক টালবাহানা করে আব্দুল আজিজ ইন্সটিটিউট মাঠে অনুমতি দেয়া হয়েছে। সেখানে নাকি আরেকটি দলের অঙ্গ সংগঠন দরখাস্ত করেছে। অথচ আমরা অনেক পূর্বেই সেই স্থানটি চেয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। বাস মিনিবাস মালিক সমিতি শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধা ৬টা পর্যন্ত ধর্মঘট ডেকেছে। সমিতির নাম ব্যবহার করছে তবে পেছন থেকে সুতার টান টানছে সরকার। তারা বহু চেষ্টা করছে গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে। বরিশালের মানুষকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে। তবে পদ্মা পাড়ের মানুষকে তারা কোনভাবেই দাবিয়ে রাখতে পারবে না। কোন বাধাবিঘœ প্রতিবন্ধকতা ফরিদপুরের এই গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। কোন অবস্থাতেই কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা যাতে না হয় সেজন্য আমরা সকলে সতর্ক রয়েছি। আমরা চাই অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে এই গণসমাবেশ সফল হোক। গণসমাবেশকে সফল করার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা সর্বত্রই জনগণের স্বতঃস্ফূর্ততা পাওয়া গেছে।
এদিকে বুধবার বিকেলে গণসমাবেশস্থল পরিদর্শনকালে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ১২ নভেম্বর শনিবার সকাল ১১টা থেকে কোমরপুর স্কুল মাঠে গণসমাবেশ শুরু করা হবে। তবে যানবাহনে বাধা সহ সরকারের তরফ থেকে নানাভাবে বিঘœ সৃষ্টির কারণে বৃহস্পতিবার থেকেই নেতাকর্মীরা গণসমাবেশস্থলে অবস্থান গ্রহণ করবেন। সরকারের বাধাবিঘ্ন সৃষ্টির কারণে এই গণসমাবেশ ১০ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে শনিবার পর্যন্ত তিনদিন অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশের মাঠ থেকে ফরিদপুর মহানগরী পর্যন্ত পৌছে যাবে এই জনসমুদ্র। কোন বাধাবিঘœ প্রতিবন্ধকতা দিয়ে গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া, ফরিদপুর বিভাগীয় গণ সমাবেশের সমন্বয়কারী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু,কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান মাসুক, মো. সেলিমুজ্জামান সেলিম, মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মাহবুবুল হাসান ভুঁইয়া পিংকু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ঈসা, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এএফএম কাইয়ুম জঙ্গি,জেলা বিএনপির সদস্য সচিব একেএম কিবরিয়া স্বপন, জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশ ও সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েল, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ, কোতয়ালী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান চৌধুরী রঞ্জন, এবি সিদ্দিকী মিতুল, জেলা যুবদলের সভাপতি রাজিব হোসেন, মহানগর যুবদলের সভাপতি বেনজির আহমেদ তাবরীজ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাসান কায়েস, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহরিয়ার শিথীল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, শহরের উপকন্ঠে কোমরপুরের আব্দুল আজিজ ইন্সটিটিউট মাঠে জনসভাস্থল প্রস্তুতের কাজ শুরু হয়েছে মঙ্গলবার থেকে। আজ বুধবার সেখানে মঞ্চ ও আলোকসজ্জার কাজ চলছে। এছাড়া ব্যানার ও ফেস্টুনে সাজানো হয়েছে সমাবেশের আশেপাশের স্থান। সকাল থেকেই বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সেখানে কাজের অগ্রগতি দেখতে যাচ্ছেন।