রংপুরের সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আমগীর ঘোষণা
বিএনপি‘র দাবী হাসিনার পদত্যাগ ও তত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:১৯ পিএম, ২৯ অক্টোবর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৪৩ এএম, ১৪ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সমাবেশের একটাই লক্ষ্য হাসিনার পতন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা। নির্বাচনের পরে সকল দল নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা। আজ শনিবার রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে রংপুর বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তেব্য তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আরো বলেন, বর্তমান সরকার দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে। দেশের অর্থনীতি আজ বিপর্যস্ত। ব্যবসা বাণিজ্য কোথাও স্বস্তি নেই। বিশ্ব জেনে গেছে মানবাধিকার নিয়ে এই সরকার মিথ্যাচার করে। সমাবেশ দেখে সরকার ভয় পেয়েছে। ভয় না পেলে গাড়ি বন্ধ করে দিত না। এই সমাবেশের ওপর বিশ্ব মিডিয়া গুরুত্ব দিয়েছে। সমাবেশের একটাই লক্ষ্য হাসিনার পদত্যাগ। দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন ও জনগণের লুণ্ঠিত ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। যা ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল। শেখ হাসিনা ও এই বিনা ভোটের সরকার সেই চেতনা ধ্বংস করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার নাকি জনগণকে ভয় পায় না তাহলে দুইদিন আগে গাড়ি বন্ধ করল কেন? বাংলাদেশের মানুষ অবশ্যই জেগে উঠবে এবং এই ভয়াবহ একনায়ক হাসিনা সরকারের পতন ঘটাবে। এই সমাবেশের একটাই কারণ। একজন মাত্র ব্যক্তি, একটামাত্র দল গত ১৫ বছর ধরে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নির্যাতন করছে। বিএনপির ওপর নির্যাতন করছে। আমাদের সমস্ত দেশটাকে তারা কুঁলে কুঁরে খেয়ে ফেলছে।
ফখরুল বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম কেন হাসিনার এই বাংলাদেশে দেখার জন্য? আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম একটি স্বাধীন-সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবো সেজন্য। এখন কি আমরা ভোট দিতে পারি? আগের রাতেই ভোট হয়ে গেছে। এর আগে ’১৪ সালে ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করেছে। আমরা সেই নির্বাচন বাংলাদেশে হতে দেব না।
নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সোজা কথা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া শেখ হাসিনার অধীনে এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না; সাফ কথা। আমাদের একটাই দাবি শেখ হাসিনার পদত্যাগ। আমাদের দাবি সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, তাদের মাধ্যমেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোট হবে এবং জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে।
আওয়ামী লীগ সরকার বলেছিল ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। এখন কি ঘরে ঘরে চাকরি আছে? চাকরি দিয়েছে? আওয়ামী লীগের লোক হলে চাকরি দেয়। ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ দিলে চাকরি হয়। ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না। তাই এই ঘুষখোর, এই ভোট চোরদের আর মানুষ দেখতে চায় না।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখন আবার নতুন একটি ধুয়া তুলছে। জঙ্গিবাদ আবার বাংলাদেশের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এটা হচ্ছে আরেকটি চক্রান্ত। বলেছে যারা অগ্নিসংযোগ করেছে জঙ্গিবাদের সাথে জড়িত তাদের রেহাই দেয়া হবে না। ওই অস্ত্র আপনাদের ভোঁতা হয়ে গেছে। ওই অস্ত্র আর চলবে না। আপনাদের আসল চেহারা সকলেই জেনে গেছে। পৃথিবীর মানুষ জেনে গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমেরিকা তাদের রিপোর্টে লিখেছে এই সরকার যা বলে মিথ্যে বলে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকার মানবাধিকার সম্পর্কে যে সকল রিপোর্ট দেয় তা মিথ্যে। এখানে মানবাধিকার নেই। মানুষ গুম হয়ে যাচ্ছে কথা বলতে দেয় না। নির্বাচনের পূর্বে সভা করতে দেয় না, নির্বাচনের ভোট কেন্দ্রে যেতে দেয় না। কথায় কথায় হকিস্টিক, রামদা, আর বন্দুক নিয়ে আসে।
ফখরুল বলেন, আর এভাবে চলতে দেবে না এদেশের মানুষ। দেশের মানুষ এখন রুখে দেবে। ওই বন্দুক, ওই পিস্তল, ওই লাঠি, ওই হকিস্টিক সব ভেঙ্গে চুরমার করে দেবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপির ভিত বাংলাদেশের জনগণ। আওয়ামী লীগের জনগণ নাই। তাই তারা সন্ত্রাসী ভাষায় কথা বলে। আগে হরতাল দিত বিরোধী দল। এখন হরতাল দেয় সরকারি দল। আগে সরকারি দলকে মোকাবিলা করতো বিরোধী দল। এখন বিরোধী দলকে মোকাবিলা করে সরকারি দল। রংপুরের সমাবেশ দেখে মনে হচ্ছে এখন এটা আর আন্দোলন নয়। এখন এটা বিপ্লব। শেখ হাসিনা দেশে দুর্ভিক্ষ দেখছেন। দুর্ভিক্ষ আসার আগেই হাসিনাকে বিদায় করা হবে।
আগে রিজার্ভের বড়াই করত, এখন রিজার্ভও নাই : টুকু
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, আজকের সমাবেশ শেখ হাসিনার জন্য বড় বার্তা। আওয়ামী লীগের মতো একটা অবিশ্বাসীর দল মাথার ওপরে জোর করে বসে শাসন করছে। সেই আওয়ামী লীগের ইতিহাস বাংলাদেশের মানুষকে ঠকানোর ইতিহাস।
তিনি বলেন, ঋণ শোধ করতে গিয়ে ফকির হয়ে গেছে। শেখ হাসিনা বলেন, দুর্ভিক্ষ এল, দুর্ভিক্ষ এল। আপনারা ক্ষমতায় গেলে দুর্ভিক্ষ আসে। বাংলাদেশকে আপনি মিথ্যা উন্নয়নের বুলি শুনিয়েছেন। আগে বড়াই করত, এত রিজার্ভ। এখন রিজার্ভও নাই। বিশ্বব্যাংক থেকে হিসাব এসেছে রিজার্ভ নাই।
জনতা বিক্ষুব্ধ হয়েছে, আওয়ামী লীগের দিন শেষ : সেলিমা
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, রংপুর মিছিলে মিছিলে মুখরিত। পায়ে হাঁটা মিছিল, ভ্যানের মিছিল। যদি জনতা বিক্ষুব্ধ হয়, তাহলে তাদেরকে কোনো শক্তি দমিয়ে রাখতে পারে না। আজকে তারা জানান দিচ্ছে, বর্তমান সরকার অবৈধ। এদের বিদায় করা এখন সকল মানুষের কর্তব্য। আওয়ামী লীগ লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ খুন করে ক্ষমতায় গিয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দেশে কোনো নির্বাচন হয় নাই। জনগণ ভোট দিতে পারে নাই। এই সরকার অবৈধ সরকার। ক্ষমতা জবর দখলকারী সরকার। এই সরকারকে হটাতে হবে।
সময় থাকতে পদত্যাগ করুন : ডা. জাহিদ
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ বলেন, গত দুদিন ধরে সরকারের বাধা উপেক্ষা করে নেতা-কর্মীরা গণসমাবেশে উপস্থিত হয়ে সরকারকে বলে দিয়েছে, এই রংপুর আর সেই রংপুর নাই। এটা শহীদ জিয়ার রংপুর। এটা খালেদা জিয়া ও আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের রংপুর। আগামীতে রংপুরে ধানের শিষের চারা গজাবে। সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সময় থাকতে পদত্যাগ করুন। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সেইফ এক্সিট নেবেন। সময় থাকতে থাকতে বিদায় হন।
১০ তারিখের ১০ দিন আগে ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিব : এমপি হারুন
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ বলেছেন, ১০ ডিসেম্বরেরে ১০ দিন আগেই তারা ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নেবেন। তিনি বলেছেন, ধর্মঘট দিয়ে মানুষের আসা বন্ধ করতে পারেননি। সমাগম দেখে আপনাদের মনে কম্পন তৈরি হয়েছে। ১০ তারিখের ১০ দিন আগে ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিব।
তিনি বলেন, বাধা উপেক্ষা করে সমবেত হয়েছেন সবাই। ওবায়দুল কাদের বলছেন, খেলা হবে। ১০ ডিসেম্বরের পরে খেলা দেখাবেন। মানুষ ১৫ বছর ধরে আপনাদের খেলা দেখছে। সম্পদ লুট করে পাচার করছেন, ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আছেন। গণতন্ত্রের মাকে বন্দি করে রেখেছেন। তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশের বাইরে রেখেছেন। নাটক বন্ধ করেন। কাদের, নাটক বন্ধ করেন। ছোটবেলায় সার্কাস দেখতাম। সেখানে জোকার থাকত। রং বেরংয়ের পোশাক পরত। জোকারি বাদ দেন, ধানাই পানাই বাদ দেন।
তিনি আরও বলেন, মানুষ ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের কর্মকান্ড দেখেছে। বিনাদোষে গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে রেখেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নির্যাতন করে আসুস্থ করেছে। তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেলে তার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশে আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে। তাই বিপন্ন গণতন্ত্র ও অর্থনীতি উদ্ধারে মানুষ সংগ্রাম করছে। এটা আমার নতুন মুক্তির সংগ্রাম।
নির্বাচন কমিশন ডাকাত সরদার : দুলু
বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু বলেছেন, কোনো বাধা বিপত্তি বিএনপিকে রোধ করতে পারবে না। সময় কমে আসছে। গাইবান্ধায় নির্বাচনে ডিজিটাল প্রযুক্তি দিয়ে চোর চিহ্নিত করেছি। কিন্তু আপনারা কাউকে গ্রেফতার করেন না, ডিসি এসপিকে প্রত্যাহার করেন নাই। নির্বাচন কমিশন ডাকাত সরদার। তাদের সরে যেতে হবে। মানুষ গণতন্ত্র উদ্ধারের লড়াইয়ে নেমেছে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নেমেছে। কেউ আর আটকাতে পারবে না। আজ রংপুরে নতুই ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। গণসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। রাজপথে বিএনপি নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ নেমে এসেছে।
রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুর সভাপতিত্বে ও রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু এবং মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন নবী ডনের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জামিল, বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম, রংপুর বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, ড্যাব মহাসচিব ডা, আব্দুস সালাম, যুবদল সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, কৃষক দল সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম বাবুল, মৎস্যজীবী দল আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহাতাব, , স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী, শ্রমিক দল সভাপতি আনোয়ার হোসেন, মহিলা দল যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন, রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে চোখ হারানো গঙ্গাচড়া উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক তুষার আহম্মেদ তুহিন প্রমুখ।
মাঠে ঠাঁই নেই, সড়ক-অলিগলিও কানায় কানায় পূর্ণ
বেলা ১২টায় পবিত্র কোনআন তিলাওয়াতের মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ। মঞ্চে স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দিয়েছেন। এরই মধ্যে রংপুরের কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠের সমাবেশস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। মাঠে দাঁড়ানোর ঠাঁই নেই। তীব্র রৌদ্রের মধ্যেও কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য শুনতে মুখিয়ে আছেন বিভাগের আট জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা। মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে মাঠে জায়গা না পেয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও সড়কের অলিগলিতে অবস্থান নিয়েছেন নেতাকর্মীরা। সমাবেশস্থলের চারদিকে প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা কানায় কানায় পূর্ণ। হাঁটা চলার মতোও নেই পরিবেশ।
এদিকে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে খন্ড খন্ড মিছিলে নিয়ে আসছেন নেতাকর্মীরা। তবে মাঠ ও রাস্তাঘাট নেতাকর্মীদের চাপে মিছিলগুলো সমাবেশস্থলে পৌঁছাতে পারছে না।
এদিকে, রংপুরের সমাবেশের মঞ্চে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য একটি ফাঁকা আসন রাখা হয়েছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, অন্যায়ভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছে সরকার। তিনি মুক্ত থাকলে এখানে উপস্থিত থাকতেন। তাই আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা দাবিতে বিএনপি দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে। এর ধারাবাহিকতায় আজ রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে বিএনপির চতুর্থ গণসমাবেশ চলছে।
সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের হাত থাকা লাঠি কেড়ে নিয়েছে পুলিশ
রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীদের হাতে থাকা লাঠি রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে কেড়ে নিয়েছে পুলিশ। এ সময় নেতাকর্মীদের নিরুপায় হয়ে লাঠির মাথায় লাগানো জাতীয় ও দলীয় পতাকাসহ দলের বিভিন্ন সেøাগান সম্বলিত ব্যানার খুলে নিয়ে পুলিশের হাতে লাঠি তুলে দিতে দেখা গেছে।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রংপুর-পীরগাছা সড়কের হাউদারপাড় ও বদরগঞ্জ সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে নেতাকর্মীদের হাত থেকে লাঠি কেড়ে নেয়ার দৃশ্য দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠ বিভিন্ন সেøাগানে মুখর হয়ে উঠছে। পরিবহন ধর্মঘট উপক্ষো করে সমাবেশে যোগ দিতে এসেছেন নেতাকর্মীরা। দলীয় প্রতীক ধানের শীষ ছাড়াও ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন নিয়ে আসা নেতাকর্মীরা এসেছেন।
কর্মীদের হাতে হাতে জিয়া-খালেদা-তারেক ও ধানের শীষের ছবি
বিএনপির রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশের কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠ কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল। তিল ধারণের জায়গা ছিল না। বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ও ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে এসেছেন। প্রায় সব কর্মীর হাতে ছিল দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলের প্রতীক ধানের শীষের ছবি।
নগরীর তামপাট এলাকার শহিদুল সাকু ও রফিকুল ইসলাম জানান, তারা ধানের শীষ হাতে নিয়ে এসেছে। বর্তমানে ধানের শীষের রব উঠেছে। তাই তিনি ধানের ক্ষেত থেকে ধানের এ মুঠি নিয়ে এসেছেন।
রাজারহাট এলাকা থেকে আসা আমজাদ হোসেন ও সাঘাটা উপজেলার ঘুড়িদহ এলাকার আরিফুল ইসলাম বলেন, বিএনপি তাদের হৃদয়ের স্পদন। তাই জিয়া-খালেদা ও তারেক রহমানসহ ধানের শীষের ছবি নিয়ে সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।