সরকারের ‘পতনের ঘণ্টা’ বেজে গেছে : মান্না
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৪২ পিএম, ২৮ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০১:০১ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
সরকারের ‘পতনের ঘন্টা’ বেজে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা আকরাম খাঁ হলে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে ‘২৮ অক্টোবর রাজনীতিতে হৃদয়হীনতা এবং বর্তমান’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে, আমি মনে করি, এই সরকারের পতনের ঘন্টা বেজে গেছে। চীনের মাও সেতুং একটা কথা বলতেন, আমাদের ওই শাসকগোষ্ঠীর পতন অত্যাসন্ন। ও মারা গেছে মনে করো, কিভাবে দাফন করবে সেটা ঠিক করো। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন শুধু দিনের ব্যাপার। সময় গুনতে থাকবেন। এরকম একটা পরিস্থিতি আসবে, যখন জনগণ নামবে, দেশের অর্থনীতি খারাপ হয়ে যাবে। সব কিছু মিলে সরকারের পালাবার পথ থাকবে না। পালাবার পথ থাকবে না মানে পালানো ছাড়া উপায় থাকবে না, ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে। নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো কেমন হবে তা ব্যাখ্যা করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা মাহমুদুদুর রহমান মান্না বলেন, আপনারা বলেন কেয়ারটেকার সরকার তাই তো। আমি বলি, আমাদের জোট গণতন্ত্র বলে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কেয়ারটেকার সরকার মানে শুধু নির্বাচন করবে। কিভাবে ভালো নির্বাচন হয় তার কেয়ার করবে। এই সময়ের মধ্যে দেশে যে জিনিসপত্রের দাম এতো বেশি সে ব্যাপারে তারা কিছু করতে পারবে, এই সময়ের মধ্যে চুরি-ডাকাতি যদি হয়, এই সময়ের মধ্যে ১০টা মেয়েকে যদি রেপ করা হয় তাহলে সে করতে পারবে না কোনো ব্যবস্থা, এই যে কারো চাকরি নেই কিছু করতে পারবে না। যদি এরকম হয় সরকার পড়ে গেছে কিন্তু পুলিশ যেরকম আছে সেরকমই আছে। মনে করেন যে, ভালো ভোট করতে পারবেন? পুলিশ এবং প্রশাসনকে এ সরকার যেভাবে পরিচিত করেছে যদি এটাকে ঢেলে সাজাতে না পারেন তাহলে ভোটও করতে পারবেন না ভালোভাবে। এই কারণে আমরা বলি অন্তর্বর্তী সরকার। যেই সরকার সেইরকম একটা পরিস্থিতি তৈরি করবে যাতে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়। যেনতেন প্রকারের একটা নির্বাচনের কথা বললে সত্যিকারভাবে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। অতএব আমরা বলছি, ওই সরকারের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে চলে যান।
তিনি বলেন, বিএনপিও একটা কেয়ারটেকার সরকার চায়। সেই অন্তর্বর্তী ব্যবস্থার জন্য আমরা যেন তৈরি থাকি এবং একটা সুন্দর গণতান্ত্রিক নির্বাচন করবার জন্যে যাতে সমস্ত অবস্থা তৈরি করি সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। শর্ত হচ্ছে- এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না, এই নির্বাচন কমিশন থাকতে পারবে না, এই সংসদ বাতিল করতে হবে এবং ইভিএম চলবে না। এই কয়টা শর্তের কোনোটার সাথে কোনোর কমপ্রোমাইজ নাই। আমরা প্রশাসনকে ঢেলে সাজাবো, নির্বাচন করবার উপযুক্ত করব এবং দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি বলব, গণতান্ত্রিক জনতার জয় হবেই হবে।
বিএনপির সমাবেশগুলোতে ব্যাপক লোকসমাগমের প্রসঙ্গ টেনে মান্না বলেন, বিএনপির সমাবেশে মানুষ জেগেছে। মানুষ আওয়ামী লীগকে ছেড়ে দিয়েছে এবং এরপরে বিএনপির যতগুলো সমাবেশ হবে আপনি লঞ্চ বন্ধ করেন, বাস বন্ধ করেন না লাঠিসোটা নিয়ে দাঁড় করেন, না ১৪৪ ধারা দেন কোনো কিছু টিকবে। নাউ টাইম হেজ কাম। সময় এসছে, মানুষ বিদ্রোহ করেছে। সরকার বলেছিলো যে, বিএনপির পেছনে মানুষই নাই। বিএনপি দেখিয়েছে তাদের পেছনে মানুষ আছে, আওয়ামী লীগের পেছনে নাই। আমি শেখ হাসিনা সরকারের পতন দেখতে চাই। বিএনপি আরো বড় সমাবেশ করুক আমি খুশি হবো।
বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উপদেষ্টা এম নাজমুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সভাপতি এম সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মোহাম্মদ শাহজাদা মিয়া, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, কৃষক দলের সহ সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক ছাত্রনেতা ইসমাইল তালুকদার খোকন, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আমীর হোসেন বাদশা, আমির হোসেন আমু প্রমুখ ।