চরফ্যাশনে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যুবলীগের হামলা : আহত ৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:১৪ পিএম, ২৭ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:১৬ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
চরফ্যাশন জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যুবলীগ অতর্কিত হামলা করে যুবদলের ৫০ জন নেতা-কর্মীকে আহত করেছে। আহতরা হলেন, উপজেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক মিলন নক্তি, উপজেলা যুবদল নেতা ফজলে রাব্বি, যুবদলের সহ-তথ্য গবেষণা সম্পাদক জহির উদ্দিন সাদ্দাম সাইমুন, উপজেলা যুবদলের নেতা সৈকত মালতিয়া, উপজেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি সোহেল খান, উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হানিফ, ওমরপুর ইউনিয়ন যুবদলের নেতা বেল্লাল মোস্তসন, আছলামপুর যুবদলের সাংগঠনিক জাকির, মনপুরা উপজেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মেহেদী ফরাজি, নুরাবাদ যুবদলের নেতা বাবুল পাটওয়ারি, আমিনাবাদের যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোবারক উল্লাহ, বাকিদের নাম পাওয়া যায়নি। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে যার যার নিরপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। এরা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশংকাজনক। তাদের বরিশাল পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল দশটায় চরফ্যাশন পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক সংসদ নাজিম উদ্দিন আলমের বাসভবনে যুবদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছিল। কেক কাটার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আশরাফ উদ্দিন দিপু ফরাজীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন (টেলিকনফারেন্সর মাধ্যমে) সাবেক সংসদ নাজিম উদ্দিন আলম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন আলমগীর মালতিয়া, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আ ন ম আমিরুল ইসলাম মিন্টিজ মিয়া, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জাকির হোসেন বাবলু, চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোফরান মহাজন, চরফ্যাশন পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সোহেল, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম আক্তার ময়িন, উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক আলমগীর মিয়া, উপজেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক মাতব্বর, উপজেলা বিএনপির দফতর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির আপ্পায়ন বিষয়ক সম্পাদক মো কাউছ মিয়া, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মীর সাহাদাত হোসেন ছায়েদসহ আরো অনেকে। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে নেতাকর্মীরা যখন বাথরুম থেকে বেরিয়ে যার যার কর্মস্থলে যেতে শুরু করেছে ঠিক সেই সময়ই উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লবের নেতৃত্বে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যুবদল নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ওই সময প্রায় ৫০ জনের বেশি যুবদল নেতাকর্মী আহত হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন থাকলেও তাদেরকে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে।
যুবদল সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম দুলাল জানান, প্রশাসনের সঙ্গে সকল ধরনের অনুমতি নিয়েই তারা ঘরোয়াভাবে তাদের রাজনৈতিক দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে যাচ্ছিল। অনুষ্ঠান সুন্দর সঠিকভাবে পালিত হলেও উপজেললার ২১টি ইউনিয়ন থেকে আশা নেতাকর্মীরা যার যার বাড়ি যাওয়ার পথে যুবলীগ-ছাত্রলীগ মিলে যৌথভাবে তাদের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালায়। এ সময় উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে আসা তাদের ৫০ জন নেতা কর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেন। তারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ : ভোলা জেলাধীন চরফ্যাশন উপজেলা যুবদলের উদ্যোগে জাতীয়তাবাদী যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি নাজিম উদ্দিন আলমের ভোলা জেলাস্থ চরফ্যাশনের বাড়িতে আয়োজিত শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে। হামলায় যুবদল নেতা মিলন নকতি, জামাল, রিপন, ফজলে রাব্বি ও সাদ্দামসহ ৫০ জনের অধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে মিলন নকতি, জামাল ও রিপনের অবস্থা গুরুতর। হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নাজিম উদ্দিন আলমের বাসভবনে ভাঙচুর চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে। আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দ্বারা সংঘটিত হামলা ও নেতাকর্মীদেরকে আহত করার ন্যক্কারজনক ঘটনাকে কাপুরুষোচিত আখ্যায়িত করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যুবসমাজ জেগে উঠেছে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশ সফল করতে যুবকরা এগিয়ে আসছে। সরকারের বিরুদ্ধে যুবসমাজের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ভীত হয়ে হামলা চালাচ্ছে সরকারি বাহিনী। অগণতান্ত্রিক পন্থায় জোর জবরদস্তিমূলকভাবে ক্ষমতা দখল করে ভয়াবহ দুঃশাসন জারি রাখতেই এসব হামলা। সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ভর করে দেশ শাসনের কারণেই দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। যার ফলশ্রুতিতে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের জানমাল এখন চরম হুমকির মুখে। জাতীয়তাবাদী যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ভোলার চরফ্যাশনে আজ শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করার সময় যুবদলের নেতাকর্মীদের ওপর সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলায় আবারো প্রমাণিত হলো-বাংলাদেশ এখন সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য এবং আওয়ামী লীগ দেশের প্রভু হয়ে থাকতে চায়। দমন-পীড়ন চালিয়ে জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ এবং বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর ক্রমাগত জুলুম-নির্যাতনের যে হিড়িক চলছে তাতে দেশের মানুষ এখন সর্বদা আতঙ্কগ্রস্ত। আওয়ামী সরকারের এই ধরনের সহিংস জুলুম ও রক্তপাতের বিরুদ্ধে দেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প পথ নেই। বিএনপি মহাসচিব ভোলার চরফ্যাশনে যুবদলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলাকারী আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহবান জানান। তিনি আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।