রংপুরের গণসামাবেশে পরিবহন বন্ধের ডাক মালিক সমিতির
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৩১ পিএম, ২৭ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৫৭ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
রংপুরে স্মরণকালের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শনিবার। সমাবেশকে সফল করতে সকল প্রস্তুতি ইতমধ্যেই সু সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সমাবেশের আয়েজক কমিটি। এই সমাবেশকে ঘিরে নেতাকর্মীরা নানা ধরণের প্রস্তুুতি নিয়েছেন। এরই মধ্যে শুক্রবার ভোর থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি। এর ফলে দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষজনের মাঝে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা। অনেকেই এতে ভোগান্তিতে পড়বেন। তবে এবারের গণ-সমাবেশে দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে সাড়া ফেলেছে তারা ‘চলো চলো রংপুর চলো’ স্লোগান দিয়ে পায়ে হেটে সমাবেশ স্থলে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে সমাবেশের জন্য জিলা স্কুল মাঠ চেয়ে আবেদন করলেও মহানগর পুলিশ অনুমতি দিয়েছে কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠের। ইতিমধ্যেই মাঠে মঞ্চ বানানোর কাজ শুরু হয়েছে। অনুমতি পাওয়ার পর থেকেই গত কয়েকদিন ধরে দলীয় নেতাকর্মীরা রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে অবস্থান নিয়েছেন। রংপুর নগরীসহ বিভাগের সকল জেলা-উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন এমনকি ওয়ার্ড-গ্রাম পর্যন্ত পোস্টার- ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে।দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে সাড়া ফেলেছে ‘চলো চলো রংপুর চলো’ স্লোগান।
এরই মধ্যে দলীয় নেতাকর্মীসহ মানুষজন রংপুরের গণ-সমাবেশে আগাম হাজির হচ্ছে। কেউ কেউ চিড়া-মুড়ি-গুড়সহ সাথে এনেছেন কাঁথা-কম্বলও। অনেকেই নগরীর আবাসিক হোটেল, ছাত্রবাস, স্বজন, পরিজন ছাড়াও নগরীর বাইরে বিভিন্ন উপজেলার আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে অবস্থান নিচ্ছেন।
আজ বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবারের মধ্যেই সমাবেশের ৪০ ভাগ লোক রংপুরে প্রবেশ করবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। তবে পুলিশ নেতাকর্মীদের এখনও গ্রেফতার না করলেও ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানীর আশংকা করছেন দলের নেতারা।
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের শ্রীরামপুর ইউনিয়নের আজিজপুর গ্রাম থেকে সমাবেশস্থলে এসেছেন মোস্তাফিজুর রহমান (৪৬) ও রহিদুল ইসলাম (৪০)। তারা বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় ট্রেনে করে পাটগ্রাম থেকে রংপুর স্টেশনে এসে পৌঁছান তারা। স্টেশনে চিড়া-মুড়ি খেয়ে রাতযাপনের পর বৃহস্পতিবার সকালে সমাবেশস্থলে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে প্রতিদিন সভা-সমাবেশ করছেন বিএনপি সহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। যার প্রভাবে সংগঠনের তৃণমূলে সৃষ্টি হয়েছে সংগ্রামী চেতনা। তবে সমাবেশে যোগ দিতে নেতাকর্মীদের পুলিশী হয়রানীর অভিযোগ করছেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
অন্যদিকে হঠাৎ করে উতপ্ত হয়ে উঠেছে রংপুরের রাজনীতি। বিএনপির সমাবেশের দুই দিন আগে রংপুর জিলা স্কুলের মাঠ নির্ধারণ করে বিভাগীয় ছাত্রসমাবেশের ডাক দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। এছাড়াও আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছে দলটির নেতারা। এনিয়ে রংপুরের রাজনীতিতে উত্তজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করছেন সচতেন নাগরিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন স্থানে গুলিতে নেতা নিহত হওয়ার প্রতিবাদসহ বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। এই ধারাবাহিকতায় আগামী ২৯ অক্টোবর শনিবার বিভাগীয় গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে তারা। প্রাথমিকভাবে প্রশাসন রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে বলে জানান শীর্ষ নেতারা। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খশরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা গণসমাবেশে অতিথি উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে সমাবেশ সফল করতে ইতোমধ্যে রংপুুর মহানগরীসহ বিভাগের ৯ সাংগঠনিক জেলায় এবং বিভিন্ন উপজেলায় প্রস্তুতি সভা করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা। এতে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্মমহাসচিব সংসদ সদস হারুন অর রশিদ, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুসহ কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকছেন। তারা দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন।
এছাড়াও গণ-সমাবেশ সফল করতে বিভিন্ন উপ-কমিটির সদস্যরা দিন-রাত কাজ করছেন।যে কোন মূল্যে গণ সমাবেশ সফল করার ঘোষনা দিয়েছেন তারা।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই সমাবেশে যোগদিতে নেতাকর্মিরা রংপুরে আসতে শুরু করেছেন।তারা বিভিন্ন হোটেল ও আত্মীয় স্বজনের বাসাবাড়ীতে অবস্থান নিয়েছেন। এদিকে সমাবেশ ঘিরে গোটা বিভাগে পুলিশী ততৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে তারা তল্লাশী অভিযান পরিচলনা করছেন।