পতনের ভয়ে চিৎকার করছে সরকার : রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:২৭ পিএম, ২১ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৫৩ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ওরা (আওয়ামী লীগ) স্বৈরাচারের যে শৃঙ্খল তৈরি করেছে সেটা ভেঙেই মানুষ এখন রাজপথে উপচে পড়ছে। তাদের পতনের ধ্বনি তারা শুনতে পাচ্ছে না। আর শুনতে পেলেও অগ্রাহ্য করছে। তারা বিরোধী দলকে যে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছে, চিৎকার করছে এটা তাদের পতনের ভয় ছাড়া আর কিছুই না।
আজ শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মানব সেবা সংঘ আয়োজিত মুক্তির পঙ্ক্তিমালা গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আগামীকাল (আজ) খুলনাতে বিএনপির পক্ষ থেকে জনসমাবেশ। ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদ নানান ধরনের কথা বলছেন। হাছান মাহমুদ বলছেন জব্বারের বলী খেলায় যত লোক হয় বিএনপির সমাবেশে তত লোক হয় না। আবার ওবায়দুল কাদের বলছেন লাখ খানিক-এর মত মানুষ হবে এটা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি। তবে ওরা (বিএনপি) যদি ঢাকাতে ১০ লক্ষ লোক জড়ো করে আমরা ৩০ লক্ষ লোক জড়ো করবো। আমাদেরকে নিয়ে এত তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছেন।
আগামীকাল (আজ) খুলনাতে আমাদের জনসমাবেশ পথে পথে বাধা দিচ্ছেন কেন? শ্রমিক ইউনিয়ন, পরিবহন মালিক সমিতিকে দিয়ে ধর্মঘট ডাকিয়েছেন কেন?
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অংশ হচ্ছে সমাবেশ করা, মিছিল করা, সমালোচনা করা। কিন্তু ওদের জেনেটিক্যালি হচ্ছে এক ধরনের জমিদারি শাসন নাৎসিবাদের শাসন। প্রতিপক্ষের কোন অধিকার তারা কখনো স্বীকার করেনি। আর স্বীকার করেনি বলে যখনই তারা ক্ষমতায় এসেছে তখনই প্রতিপক্ষকে হত্যা গুম, মিছিল সমাবেশে বাধা দিয়েছে। এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য। আওয়ামী লীগের শাসনের ঐতিহ্য।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আপনারা যদি এতই বাহাদুর তাহলে সমাবেশ বানচাল করার জন্য নিজের লোকদেরকে দিয়ে ধর্মঘট ডাকাচ্ছেন কেন? বাংলাদেশের মানুষ কি এতই বোকা? এতই বেকুব যে শ্রমিক ইউনিয়ন, পরিবহন মালিক সমিতি কারা কার নির্দেশে চলে এটা জানে না? এটা সবাই জানে।
রিজভী বলেন, আসল ঘটনা হলো শেখ হাসিনা আওয়ামী সরকার ভেতর থেকে ভয় পেয়েছে। তাদের যদি জনসমর্থন থাকতো তাহলে বিরোধী দলের সমাবেশে বাধা দিবে কেন?তাদের জনসমর্থন একেবারে তলানিতে চলে গেছে। সরকার জানে তাদের কোন গণভিত্তি নেই। তাই রাষ্ট্রশক্তিকে কাজে লাগিয়ে যেভাবেই হোক বিরোধী দলের সমাবেশকে পন্ড করতে চায়। এই কারণে যত প্রকার পরিবহন আছে সবগুলোকে সেখানে (খুলনায়) বন্ধ করে দিয়েছে। অলিখিত হরতাল সেখানে জারি করেছে। তারপরেও ট্রেন বোঝাই করে মানুষ খুলনার দিকে রওনা দিয়েছে। ট্রেনের ছাদে ভিতরে মানুষ একেবারে থৈ থৈ করছে। অর্থাৎ ওরা (আওয়ামী লীগ) যে বেড়াজাল তৈরি করেছে সেই বেড়াজাল ছিন্ন করে মানুষ উপচে পড়ছে খুলনাতে এবং সারাদেশেও তাই হবে।
দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেশের জন্য ত্যাগের কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, 'আমাদের প্রিয় নেত্রী যিনি দেশকে ভালবাসেন দেশের মানুষকে ভালবাসেন। তাঁকে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য সরকার কত সুযোগ দিয়েছে। তার (হাসিনা) আন্দোলনের ফসল ১-১১ তত্ত্বাবধায়ক সরকার তারাও চেষ্টা করেছে কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা যান নাই। শেখ হাসিনা কিন্তু ঠিকই গিয়েছিলেন। তারপর তিনি ওয়ান ইলিভেনের যারা নায়ক তাদেরকে বললেন খালেদা জিয়াকে বের করতে পারো না আমাকে এখানে রেখেছো আমিও দেশে ফিরে যাব। তারপর তিনি ফিরে আসলেন। কারণ ওই সরকার ও তো তাদের সরকার ছিল।
তিনি বলেন, যে নেত্রীকে রাষ্ট্র ক্ষমতা দিয়েও তার দেশবোধ, জনগণের প্রতি তার যে মায়া ভালবাসা কেড়ে নিতে পারেনি। তাকে (বেগম খালেদা জিয়া) বন্দি করতে পারেন কিন্তু পরাজিত করতে পারবেন না। বেগম খালেদা জিয়াই বিজয়ী। বিশ্বে যারা স্বাধীনতার নায়ক তারাও বন্দি ছিল। তারা কি পরাজিত হয়েছে? ইতিহাসের এক একটা অধ্যায়ে তারা জ্যোতিষ্কের মত জ্বলছে। বেগম জিয়াকে এই দানবীয় সরকার বন্দি করতে পারে কিন্তু তিনি মানুষের হৃদয়ের মধ্যে আছে। এই বিজয় বীরকে আপনি (হাসিনা) পরাজিত করতে পারবেন না।
মানব সেবা সংঘের সভাপতি সঞ্জয় দে রিপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল প্রমুখ।