খুলনায় গয়েশ্বরের অবস্থানরত বাসায় পুলিশের অভিযান, আটক ১২ নেতাকর্মী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ২০ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৫৭ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
আগামী ২২ অক্টোবর বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে বৃহস্পতিবার খুলনায় এসেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিভাগীয় গণসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি মহানগর বিএনপি অফিসে সংবাদ সম্মেলন করেন।
রাত সাড়ে ৮টার পর তিনি নগরীর বসুপাড়া বাঁশতলা এলাকার একটি বাসায় অবস্থান করেন। সেখানে তার রাতে থাকার কথা ছিল। গয়েশ্বর চন্দ্র বাসায় থাকা অবস্থায় বিভিন্ন নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে সাক্ষাত করতে আসেন। এ সময় ওই বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। অন্তত ১০-১২ জন নেতাকর্মীকে আটক করে প্রশাসন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো. তারিকুল ইসলাম জহীর।
তিনি জানা যায়, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে হোটেলে না থেকে মোরেলগঞ্জের বিএনপি সমর্থিত এমপি প্রার্থী খাইরুজ্জামান শিপনের বাসায় রাতে থাকার কথা ছিল। বসুপাড়ায় অবস্থিত শিপনের বাসার নাম কাজী ম্যানশন। গয়েশ্বর সেখানে যাওয়ার পর নেতাকর্মীরা তার কাছে সাক্ষাতের জন্য গেলে বাড়িটি পুলিশ ঘিরে ফেলে। এরপর সেখান থেকে গয়েশ্বর ছাড়া সব নেতাকর্মীকে আটক করা হয়।
এর আগে সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, চলমান আন্দোলন বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়, তাদের হটানোর আন্দোলন। কর্মসূচিতে যত বাধা আসবে, ততই আন্দোলনে সফলতা আসবে।
তিনি বলেন, একদিকে সরকারি পুলিশ আরেক দিকে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসী বাহিনী বাধা তৈরি করছে। গ্রেপ্তার করছে, ভয় দেখাচ্ছে। যত তারা বাধা দেবে, তত জনগণের অংশগ্রহণ বাড়বে। কারণ, জনগণের আন্দোলন কখনো বাধা দিয়ে কোনো হ্যাডামি করে থামিয়ে রাখা যায় না। নেতা–কর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে, ভয়ভীতি দেখিয়ে লাভ হবে না।
মামলা, হামলা হলেও বিএনপির নেতা-কর্মীরা বুকটান করে রাজপথে থাকবেন উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, আমাদের অনেকের বিরুদ্ধে অনেক মামলা আছে, সেই মামলার তোয়াক্কা আমরা করি না। কারণ, মৃত্যুর চেয়ে বড় শাস্তি নেই। এখন বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ মৃত্যুর মুখোমুখি। অভাব-অনটন, নিরাপত্তাহীনতা, অবিচার—সবটা আছে। এমন কোনো কাজ নেই, যা এখন হচ্ছে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘দেশের পক্ষে থাকেন, জনগণের পক্ষে থাকেন। আমরা যা কিছু করছি, সংবিধান মেনেই করছি। যাঁরা বাধা দিচ্ছেন, তাঁরাই সংবিধান মানছেন না। আপনারা জানমালের নিরাপত্তা দেন। আন্দোলনরত নেতা–কর্মীদের হয়রানি করবেন না। সরকারের অন্যায় আদেশ মান্য করা আপনাদের দায়িত্ব নয়। সার্ভিস রুল অনুসরণ করুন। নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বর্তমান সরকার যদি কোনো ক্ষয়ক্ষতি করে; গণতান্ত্রিক সরকার এলে আপনাদের ক্ষয়ক্ষতি আমরা সুদে-আসলে বুঝিয়ে দেব।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম করছে বিএনপি। এই সরকার উন্নয়নের নামে সিংহভাগ টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করছে। পাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা সবাই সরকারের সঙ্গে জড়িত। সরকারের ব্যর্থতা ও লুটপাটে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন। বিএনপি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে আন্দোলন করছে, অবৈধ পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠনের পর নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে। সরকার ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করলে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।