সরকারের দুর্নীতি ও চরম অব্যবস্থাপনার কারণেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিপর্যয় : বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:২০ পিএম, ১১ অক্টোবর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০২:৫০ এএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি ও চরম অব্যবস্থাপনার কারণেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। গতকাল সোমবার রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এই অভিযোগ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। গতকাল মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান সভায় আলোচ্য নিম্নবর্ণিত সিদ্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়।
১। সভায় বিগত ২৬ সেপ্টেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ পঠিত ও অনুমোদিত হয়।
২। সভায় জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ও রাজধানীসহ সারাদেশে অসহনীয় লোডশেডিং বৃদ্ধির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সভা মনে করে সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি ও চরম অব্যবস্থাপনার কারণেই বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি খাতে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এর ফলে একদিকে জন-জীবনে সৃষ্টি হয়েছে চরম অস্থিতিকর পরিস্থিতি অন্যদিকে কৃষি, শিল্প ও পরিবহন খাতে অস্থিতিশীলতা তৈরি হচ্ছে; এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অসহনীয় মুদ্রাস্ফীতি। বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি খাতের এই বিপর্যয়ের ওপরে বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত একটি প্রেস কনফারেন্স করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতায় নিন্দা করা হয় এবং অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ দাবি করা হয়।
৩। সভায় গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সকল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর ওপর দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তি ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, জ¦ালানি তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার দাবিতে এবং চলমান আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শাহাদত বরণকারী ভোলার নূরে আলম, আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জের শাওন, মুন্সিগঞ্জের শহিদুল আলম শাওন হত্যা ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে নিহত আজিমের হত্যার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে চলমান গণ-আন্দোলনের ঘোষিত বিভাগীয় সমাবেশগুলোকে সফল করার জন্য বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সারা দেশের সকল ইউনিটকে সর্বাত্মক উদ্যোগ ও অংশ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
৪। সভায় সম্প্রতি রাজবাড়ী জেলায় বিএনপি নেত্রী ও সমাজকর্মী সোনিয়া আক্তার স্মৃতিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক, বরিশাল জেলা ছাত্রদলের ১ নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফোরকান হোসেন ইরানকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া এবং চট্টগ্রামে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রাসেলকে র্যাব তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে সরকার পুনরায় গুম, মিথ্যা মামলা, গ্রেফতারের মাধ্যমে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করতে চায়। সভায় অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
৫। সভায় সম্প্রতি সরকারের সার্কুলারের মাধ্যমে ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্টের আওতায় ২৯টি বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে, যখন ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট এই কালো আইন বাতিলের জন্য দেশে এবং বিদেশে মানবাধিকার সংস্থা ও বিশে^র গণমাধ্যমে বিরূপ সমালোচনা হচ্ছে সেই সময়ে আরও ২৯টি বিভাগকে এই আইনের ১৫ ধারায় অন্তর্ভুক্ত করায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণ হরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে সরকারের লাগামহীন দুর্নীতিকে আরও প্রসারিত করার সুযোগ সৃষ্টি করা হলো। সভা অবিলম্বে এই সার্কুলার প্রত্যাহার ও ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট বাতিলের দাবি জানানো হয়।
৬। সভায় গত ১০ অক্টোবর গাজীপুরে বিএনপির পূর্ব ঘোষিত শান্তিপূর্ণ শোক র্যালির ওপর পুলিশের অতর্কিত আক্রমণ, লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস শেল নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। পুলিশের আক্রমণে প্রায় ২৫ জন গুরুতর আহত হয়। পুলিশ ১ জন মহিলাসহ ১২ জনকে গ্রেফতার করে। সভায় অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।