ফেনীর স্টেশন এলাকায় যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে পতিতাবৃত্তিসহ নানা অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:১৭ এএম, ৭ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০২:৩৪ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
ফেনী রেলওয়ে স্টেশন এখন অপরাধীদের নিরাপদ আখড়ায় পরিণত হয়েছে।স্টেশন ও আশপাশে চুরি, ছিনতাই, ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি, মাদক ব্যবসা, জুয়ার আসর, পতিতাবৃত্তি থেকে শুরু করে সব ধরনের অপরাধ কর্মকান্ড চলছে সমানতালে। স্থানীয় সরকার দলীয় একটি চক্র, কিছু পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং রেলের অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে স্টেশনকে ঘিরে এসব অপরাধ কর্মকান্ড চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব অপরাধ কর্মকান্ডে সক্রিয় আছে অন্তত ৫টি চক্রের অর্ধশত সদস্য। চক্রের হোতাদের বিরুদ্ধে আছে একাধিক মামলাও। প্লাটফর্ম এলাকায় যাত্রী ব্যতীত সাধারণ মানুষ প্রবেশ সংরক্ষিত থাকলেও ফেনী স্টেশনের প্লাটফর্মগুলোতে দিন-রাত ছোটাছুটি করে অপরাধীরা। প্লাটফর্মের যাত্রী বসার সিটগুলো মাদকাসক্ত, টোকাই ও বখাটেদের দখলে থাকে। পুলিশ ক্যাম্পের পাশেই আছে সবচেয়ে বড় মাদকের আখড়া কলোনি। দিন দুপুরে প্রতিনিয়ত চলছে মাদকের কারবার।
জানা গেছে, রেলস্টেশন সংলগ্ন জিআরপি থানা ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যারাকের সামনে রয়েছে টিনের ছাউনির কয়েকটি দোকান ঘর। এসব ঘরে প্রতিদিন মাদক বিক্রি করা হয়। অপরদিকে রেল স্টেশনে অবস্থিত জয়নালের পরিচালিত রেস্ট হাউস এখন পতিতালয় এবং মাদক ব্যবসার নিরাপদ জোনে পরিণত হয়েছে। রেলে পাচার হওয়া মাদকের হাত বদলও এসব রেস্ট হাউস থেকে হয় বলে সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া রেস্ট হাউসে বসে জুয়ার আসর। দিনমজুর ও শ্রমিকদের পাশাপাশি বিত্তবান পরিবারের বখে যাওয়া সন্তানরাও অংশ নেয় এই জুয়ার আসরে। জুয়ার পাশাপাশি গভীর রাত পর্যন্ত চলে এখানে মদ ও বিভিন্ন নেশার আসর।
স্টেশনে চুরি ছিনতাইঃ ফেনী রেল স্টেশনকে ঘিরে সক্রিয় রয়েছে ছিনতাইকারীদের একাধিক গ্রুপ। ১৫ থেকে ২০ জনের ওই সব গ্রুপের কাছে জিম্মি রেলের সাধারণ যাত্রীরা। যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল এবং ব্যাগ ছিনতাই এখন রেল স্টেশনে নিয়মিত ঘটনা।
সুত্র জানায়, রেলস্টেশন এলাকায় চুরি-ছিনতাই,মাদক, জুয়া ও দেহ ব্যবসাসহ সকল অপকর্মের নেতৃত্বে আছে স্থানীয় যুবলীগ নেতা রনি চৌধুরী।যাত্রী সাধারণ থেকে আশপাশ এলাকার ব্যবসায়ী পর্যন্ত কেউ রনি চক্রের কাছ থেকে নিরাপদ নয়। নিরাপদে আছে শুধু অপরাধীরা। স্টেশনে চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রতিদিন ঘটলেও অধিকাংশ ঘটনায় থানায় মামলাও হয় না। ক্ষতিগ্রস্তরা থানা পুলিশ, আরএনবি এবং স্টেশন ম্যানেজারকে মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়ে চলে যায়।
মাদক ও জুয়ার আসরঃ রেল স্টেশন এলাকা দীর্ঘদিন ধরে মাদকের প্রধান হাট হিসেবে পরিচিত। রেলস্টেশন সংলগ্ন কলোনি, রেলের প্লাটফর্ম এলাকায় চলে অবাধে মাদক বেচাকেনা। এসব মাদক পরিচালনা করছেন ফাতেমা ও কাল্লু নামের দুই ব্যবসায়ী। প্রতি মাসে স্টেশন এলাকা থেকে ধরা পড়ছে একাধিক মাদকের চালান। স্টেশন এলাকায় সব কিছুই চলে অপরাধীদের ইচ্ছেমতো। মাদক, জুয়া এবং পতিতা ব্যবসার আধিপত্য নিয়ে একাধিকবার স্টেশন এলাকায় বিবদমান গ্রুপগুলোর মধ্যে রক্তক্ষয়ীসংঘর্ষে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।সম্প্রতি পুলিশ সোর্স বাবলু ও সুমনকে ছুরিকাঘাত করে বখাটেরা।
ফেনী রেলওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের এসআই নফিল উদ্দিন জানান, স্টেশন এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী, টিকিট কালোবাজারিসহ চুরি-ছিনতাইয়ে জড়িতদের পাওয়া মাত্র আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। চুরি-ছিনতাইয়ে জড়িতদেরও ছাড় দেয়া হচ্ছেনা।