ছাত্রলীগ নারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অপকর্মে বাধ্য করছে : বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৩০ পিএম, ৩ অক্টোবর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:০৮ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
ছাত্রলীগ নারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অপকর্ম করতে বাধ্য করছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির নেতারা। তারা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া নেই। সেখানে ছাত্রলীগ খুন, ভর্তি বাণিজ্য, সিট বাণিজ্য করছে। নারীদের দাস বানাচ্ছে। তাদের দিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করাচ্ছে। যা কিছুদিন আগে ইডেন কলেজের ছাত্রীরা মিডিয়াতে প্রকাশ করেছে।
আজ সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন। ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের নজিরবিহীন কেলেঙ্কারি ও সারাদেশে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধনটির আয়োজন করে মহিলা দল।
অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, এই অবৈধ সরকার দেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তারা ছাত্রদের হাতে লাঠি, বন্দুক, রামদা তুলে দিয়েছে। ছাত্ররা তাদের মূল্যবোধ ভুলে গিয়ে বিরোধী দলের ওপর হামলা করছে। লুটপাট করছে, ভর্তি বাণিজ্য করছে। নারীদের বিভিন্ন অপকর্ম করতে বাধ্য করছে। তিনি আরও বলেন, আমি নিজেও ইডেন কলেজের ছাত্রী ছিলাম। আমি ইডেন কলেজের সাধারণ ছাত্রীদের বলব, আপনারা ঐক্যবদ্ধ হোন। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন। আপনাদের পাশে মহিলা দল থাকবে। সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ’৭২ থেকে ’৭৫ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন নারী অপহরণ, ধর্ষণ, ব্যাংক লুট এমন কোনো অপকর্ম নাই যা হয়নি। সেই সময় মায়েরা তাদের সন্তানকে ঘুম পাড়াতো, বর্গী আসছে বলে। দেশে সেই অপকর্মগুলো আবারও হচ্ছে।
এসময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশে আজ লেখাপড়া নেই। লেখাপড়া তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তুলে দিয়েছেন। ঢালাওভাবে সবাই জিপিও ফাইভ পায়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ২ শতাংশও চান্স পায় না। কোনো জাতি যদি শিক্ষায় উন্নতি করতে না পারে, তাহলে তারা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী তার প্রভুদের স্বার্থে আজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগকে দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দাস প্রথা চালু করছেন কি না জানতে চেয়ে রিজভী বলেন, তাও নারী দাস প্রথা। আমরা যে খবরগুলো শুনছি, খবরের কাগজে পড়ছি সেগুলো তো মধ্যযুগের কাহিনি। নারীকে দাসে পরিণত করে বিক্রি করে দিচ্ছে তারা।
তিনি বলেন, ‘অনেকেই বলে এই আওয়ামী লীগ আর সেই আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ কবে ভালো ছিল? ’৭২-৭৫ সালে আমরা দেখেছি লাল বাহিনী, নীল বাহিনী, সবুজ বাহিনী। রক্ষী বাহিনীর কথাও আমরা জানি। এখন আমরা দেখছি নানা বাহিনী- ছাত্রলীগ বাহিনী, যুবলীগ বাহিনী। আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও ইডেন কলেজে যা হচ্ছে তা অবর্ণনীয় ও ন্যক্কারজনক। আসলে সরকার ছাত্রলীগকে কী বানাচ্ছে? তাদেরকে তো খুনি বানাচ্ছেন। এর আগে দর্জি বিশ্বজিতকে হত্যা করেছে। আজকে ছাত্রলীগের নামে ছাত্র আছে। কিন্তু পড়ালেখা তো নেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদেরকে অনেকেই বলেন, বিএনপি ইডেনের বিষয়ে কী করছে? আমরা ইডেনে ছাত্রলীগের কুকর্মের প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই। আজকে এত এত মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের দেশের স্বাধীনতা কোথায়? আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকলেই খালি গণতন্ত্রের কথা বলে।
তিনি বলেন, ইডেনে ছাত্রলীগের কুকীর্তি ন্যক্কারজনক। আসলে ছাত্রলীগের উপরের দিকে যারা আছেন তারা ভালো নন। ফলে ছাত্রলীগ তো নারীদের ওপর আক্রমণ করবেই। তারা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ চাইবে না। তারা ইডেন কলেজকে ছাত্রলীগের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। সেখানে কোনো ভবন নির্মাণ কাজ হলে সেগুলো থেকে চাঁদা দাবি করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। তারা সেখানে হলগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের পরিচালনায় মানববন্ধনে মহিলা দলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ মহিলা দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।