বিএনপি নিজেদের কর্মীকে মেরে বিশৃঙ্খলা করছে : তথ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৪২ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৩১ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বিএনপি দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিএনপি বিভিন্ন জায়গায় বিশৃঙ্খলা করছে, মুন্সীগঞ্জে নিজেদের কর্মীকে নিজেরা মেরেছে। তাদের উদ্দেশ্য হলো প্রয়োজনে নিজেদের কর্মীদের মেরে দেশে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করবে। সেটা যদি বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশের নামে আবারও করার অপচেষ্টা চালায়, তা সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে। জনগণও তাদের প্রতিহত করবে।
আজ শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম হলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ঠাকুরগাঁও গিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল পাকিস্তানই ভালো ছিল বলে বক্তব্য দিয়েছেন। আবার ঢাকায় লাঠি ও রডের মাথায় জাতীয় পতাকা লাগিয়ে কর্মসূচি পালন করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এসব ঘটনায় একই সূত্রে গাথা। তারা জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি অশ্রদ্ধা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।
এর আগে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে হরিজন সম্প্রদায়ের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিতরণ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মধ্যে সমাজসেবা অধিদফতরের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী আরও বলেন, কাগজে দেখতে পেলাম বিএনপি বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। আমরা দেখেছি ঢাকা শহরে তারা সমাবেশ করতে গিয়ে লাঠি ও রড নিয়ে সমাবেশে হাজির হয়েছে। আবার লাঠি ও রডের মাথায় জাতীয় পতাকাও বেঁধেছে। জাতীয় পতাকা বেঁধে দিয়ে তারা জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছে।
জেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় একটা মোনাজাতকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে, এটার কোনও তদন্ত হয়েছে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সেখানে শত শত মানুষের মধ্যে কেউ একজন মোনাজাত ধরেছেন। মুসলমান হিসেবে এখানে যদি কেউ মোনাজাত ধরে, আর আমি যদি এখানে মোনাজাত না ধরে দাঁড়িয়ে থাকি, তাহলে তো আমাকে বলবে বিধর্মী। সেই জন্য জেলা প্রশাসকও সেখানে মোনাজাত ধরেছেন। মোনাজাতের মধ্যে কে কি বললো, সেটার দায় জেলা প্রশাসকের ওপর বর্তায় বলে আমি মনে করি না।
তিনি আরও বলেন, এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসককে একটি শোকজ নোটিশ দেয়া দরকার ছিল। তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়ার দরকার ছিল, তার বক্তব্য নেয়া দরকার ছিল। বক্তব্য সন্তোষজনক না হলে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারতো।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশের মানুষের কথা ভাবেন। একেবারে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথাও তিনি ভাবেন। সেই ভাবনা থেকেই আজকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে হরিজন সম্প্রদায়ের মধ্যে অনুদান দেয়া হচ্ছে। হরিজন সম্প্রদায়ের আবাসন সমস্যা সমাধানের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে আমাদের সরকার। তাদের আবাসন সমস্যার অনেকটা সমাধান হয়েছে। যেটুকু বাকি আছে সেগুলোও দ্রুত সম্ভব আমরা করে ফেলবো।
তথ্যমন্ত্রী দাবি করেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার সঠিক সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বের কারণেই আমাদের নারী ফুটবল দল আজ সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তারা অসাধ্যকে সাধন করেছে। তাদের সব খেলোয়াড় একেবারে প্রত্যন্ত এলাকার বঙ্গমাতা টুর্নামেন্ট থেকে উঠে এসেছে। আজ তারা দেশের গর্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. বদিউল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, মুহাম্মদ মাহমুদ উল্লাহ মারূফ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, জেলার ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরোয়ার কামাল দুলু, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুল আলম, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য, জেলা পূজা পরিষদের সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত, সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার দেব, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ প্রমুখ।
এরপর তথ্যমন্ত্রী বিকেএসপি সম্মেলন কক্ষে আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ও পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা এবং মহানগর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।