সরকার পতনের আন্দোলন ‘গুলি-টিয়ারগ্যাসে’ বন্ধ করা যাবে না : গয়েশ্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৮ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:৩১ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
সরকার পতনের আন্দোলন ‘গুলি-টিয়ারগ্যাসে’ বন্ধ করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। সকাল সাড়ে ১১টায় জিয়া মঞ্চের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম ও সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়েজুল্লাহ ইকবালের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীদের নিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতার মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। ১৯৯৩ সালে জিয়া মঞ্চ প্রতিষ্ঠা হয়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা এখন যে সকল দাবিতে আন্দোলন করছি, এগুলো বিএনপির দাবি বললে ভুল হবে, এসব জনগণের দাবি। দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতি মানে প্রতিটা পরিবারের নাভিশ্বাস। আয়ের সাথে তাদের ব্যয়ের কোনো রকমের সঙ্গতি নাই। উত্তরোত্তর ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে আবার উত্তরোত্তর আয় হ্রাস পাচ্ছে। এই কষাঘাত থেকে মানুষ মুক্তি চায়। কোনো বাধা-প্রতিবন্ধকতা কখনো ফ্যাসিবাদকে, স্বৈরাচারকে টিকিয়ে রাখতে পারে নাই। পৃথিবীর পূর্বের ইতিহাস এবং বাংলাদেশের ইতিহাস তাই বলে। জনগণের মৌলিক সমস্যার সমাধান না করে শুধু টিয়ার গ্যাস-গুলি ইত্যাদি দিয়ে কখনো কোনো আন্দোলন ব্যর্থ করা যায়নি, এই আন্দোলনও বন্ধ করা যাবে না।
তিনি বলেন, আপনারা লক্ষ্য করবেন যে, বিএনপির যেকোনো কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করছে। ভবিষ্যতে আরো ব্যাপকভাবে করবে। হয়ত একটা সময় আসবে আন্দোলন জনগণ সফল করবে, শুধু আমরা সেখানে উপস্থিত থাকবো। এই ব্যাপারে আমরা খুব আশাবাদী।
সংকট উত্তরণের একমাত্র পথ সরকারের পদত্যাগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা প্রতিবাদ করেছি দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতির, আমরা দাবি করছি সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত এবং একটা অরাজনৈতিক নির্দলীয় সরকারের অধীনের একটি নির্বাচন। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে আমাদের ৫ জন শহীদ হয়েছেন। আজকে এই আন্দোলনের সাথে সে শহীদের রক্ত জড়িত। সুতরাং একদিকে আন্দোলন এবং অন্যদিকে শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধের একটা প্রতিশ্রুতি আমাদের সকলের থাকবে। সেই অর্থে আমি বলব, যারা শহীদ হয়েছেন তাদের হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন। কিন্তু মূলত সরকার পতনের আন্দোলন। অর্থাৎ এই সরকারকে নো বলছে সবাই, এই সরকারকে দেখতে চায় না। জনগণের একটা সরকার চায়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জনগণের কাছে তাদের অবস্থান শূন্যের কোঠায়। সাধারণত এই ধরনের ফ্যাসিবাদী সরকার হামলা, মামলা, খুন এবং সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে আমাদের কন্ঠ রোধের চেষ্টা করবে এটা আমরা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করি। এখন আপনি দেখবেন যে, আমাদের কর্মীরা যে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে তারা খুব স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে মানসিক বল নিয়ে করে, তারা বাধাপ্রাপ্ত হলে সেই বাধা অতিক্রম করার জন্য রুখে দাঁড়ায়। এটাই হলো আগামী আন্দোলনের সফলতার একটা পূর্বাভাস। যতক্ষণ পর্যন্ত লক্ষ্য অর্জন না হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হবে, যতদিন পর্যন্ত একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি না হবে বিএনপির আন্দোলন চলবে। এ সময়ে জিয়া মঞ্চের সহ-সভাপতি আবু তালেব, মহানগর উত্তরের শাহাদাত হোসেন পলাশ, আনিসুল ইসলাম সায়েম, দক্ষিণের আবদুল হামিদ মামুন ও রেজওয়ান মাসুদ চৌধুরী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।