সরকার হটাতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মৃত্যুকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে : মির্জা আব্বাস
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৪৮ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৪৯ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
সরকার হটাতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মৃত্যুকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
আজ মঙ্গলবার বিকালে তেজগাঁওয়ে এক সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন। ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তর তেজগাঁও জোনের উদ্যোগে সোনারগাঁও হোটেলের লেকের পাশে জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতি, সারাদেশে দলের কর্মসূচিতে হামলা ও নেতা-কর্মী হত্যার প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা মহানগরীর উত্তর ও দক্ষিণে মোট ১৬টি জনসভার মধ্যে ১৪টি জনসমাবেশ হয়। মীরপুরের পল্লবীর সমাবেশ শুরুর আগে পুলিশি হামলায় পন্ড এবং লালবাগের সমাবেশ স্থগিত করা হয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে শাওনরা (নারায়ণগঞ্জে পুলিশের গুলিতে নিহত শাওন প্রধান ও মুন্সিগঞ্জে শহীদুল ইসলাম শাওন), বিএনপির কর্মীরা বুক পেতে দিতে শিখেছে, মৃত্যুকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। কোনো সমস্যা নাই। এই সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকার কোনো অবস্থা আমি দেখতে পাচ্ছি না। আমি বলতে চাই, যত কথা বলেন, যত কৌশল নেন সরকারে টিকে থাকবেন? সম্ভব না। অবৈধভাবে সরকারে টিকে থাকতে হবে কেনো? এতো বছর দেশ শাসন করতে হবে কেনো? গুলি করার জন্যে, ব্যাংক লুট করার জন্যে।
সরকারের উদ্দেশ্যে মির্জা আব্বাস বলেন, যে বন্দুক দিয়ে গুলি করছেন সেই বন্দুকের গুলি কিন্তু আমার-আপনার ট্যাক্সের পয়সায় কেনা, বন্দুকটাও আমাদের টাকায় কেনা। একটা কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, অতীতের কোনো স্বৈরশাসক এটা বুঝতে পারে নাই। বন্দুকের নল ঘুরে যেতে পারে। যখন বুঝতে পারে তখন সময় থাকে না। সরকারকে বলছি, সময় সময় বন্দুকের নল ঘুরে যাবে এটা মনে রাখবেন। এখনো সময় আছে সাবধান হয়ে যান। দেশবাসীর ক্ষমতা দেশবাসীর হাতে দেন। ভোট চুরি করার আবার যত প্রক্রিয়ায়ই অবলম্বন করুন কোনো লাভ হবে না।
ফের ক্ষমতায় আসার নানা কৌশল করছে আওয়ামী লীগ এমন মন্তব্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, সরকার ভোট চুরি করার জন্য আবার ক্ষমতায় থাকার জন্য কত প্রক্রিয়া করতেছেন। নির্বাচন কমিশন আবার ইভিএম কিনবে? কিসের ইভিএম। ৮ হাজার কোটি টাকা দিয়ে এই মেশিন কিনে আনবে তারা। আমি বলতে চাই, এই ব্যয় হবে অবৈধ। কারণ অবৈধ সরকারের অবৈধ নির্বাচন কমিশনের কোনো টাকা ব্যয় করতে পারে না। আমি এই ইভিএম ক্রয়ের জোর প্রতিবাদ করছি। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচন বাংলাদেশে হবে না, হতে দেয়া হবে না।
মির্জা আব্বাস বলেন, বাংলাদেশের যে সমস্ত এলাকায় বিএনপি করে এমন শীর্ষ স্থানীয় ব্যক্তির নাম দিতে হবে থানা, উপজেলা, গ্রাম যেখানেই হোক এক থেকে পাঁচ জনের নাম দিতে হবে, কারা মিটিংয়ে যায়, কারা সভা করে এগুলো নাকি নাম দিতে হবে। এটা তো সরকারের কাজ হতে পারে না। বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সমস্ত ঠিকানা তারা (পুলিশ) সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে। একটা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তা প্রকাশ পেয়েছে। আমার প্রশ্ন হলো এই নাম-ঠিকানা দিয়ে আপনারা কি করবেন? যদি এদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে একজনকেও গ্রেফতার করা হয় সারা বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে আমরা রাজপথে নামবো।
মির্জা আব্বাস বলেন, বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে গম আমদানি করবে। অর্থাৎ গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট গম আসবে। এর মধ্যে আবার মধ্যস্বত্বভোগী বা মিডলম্যান বা কমিশন এজেন্ট বসিয়ে দিয়েছে। গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট কোনো জিনিস ক্রয় করা হলে সেটাতে মিডলম্যান কেনো থাকবে? টাকার চুরির রাস্তা। এতে এই গমের দাম কয়েক গুণ বেড়ে যাবে, এতে দেশের মানুষকে বেশি দামে আটা কিনতে হবে। তেল-ডালসহ প্রত্যেকটা জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। আবারো মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘার মতো বেশি দামে দিয়ে গম আমদানি করছে সরকার।
ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবদুস সালাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেনসহ ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, জাসাস, ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।