আ.লীগ সরকার প্রহসনের একদলীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে : বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১৮ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৩৭ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
আওয়ামী সরকার গুম, খুন, মিথ্যা মামলা, হামলা করে ত্রাস সৃষ্টি করে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আর একটি প্রহসনের একদলীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। গত ১৯ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় বক্তারা এ অভিযোগ করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ^র চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। সভায় নিম্নবর্ণিত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়।
১। সভায় বিগত ১২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ পঠিত ও অনুমোদিত হয়।
২। সভায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর জ্বালানি তেল, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং ভোলা ও নারায়ণগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুর রহিম, ছাত্রদলের নুরে আলম ও যুবদলের শাওন হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তরের শান্তিপূর্ণ মোমবাতি প্রজ¦লন কর্মসূচিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলায় জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তরের বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদসহ প্রায় ৫০ জন আহত হওয়ায় গভীর নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সভায় একই দিনে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থেকে ঢাকা আসার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলু ও তার স্ত্রীকে নোয়াখালী হতে ঢাকায় আসার পথে মনোহরগঞ্জে একটি রেস্টুরেন্টে যাত্রা বিরতির সময় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা এবং মারাত্মকভাবে জখম করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানানো হয়। বরকত উল্লাহ বুলু এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ইতিপূর্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ^র চন্দ্র রায়ের কেরানীগঞ্জে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের আক্রমণ ও সারা দেশে বিভিন্ন জেলা, উপজেলায় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা, পুলিশের গুলিবর্ষণ প্রমাণ করে, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমন করতে চায়। হত্যার উদ্দেশ্যে বিএনপির নেতা, পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা, বাসা-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ, একই সঙ্গে সংবিধানসম্মত শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে হামলায় আবারও প্রমাণিত হচ্ছে যে, আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকার, গুম, খুন, মিথ্যা মামলা, হামলা করে ত্রাস সৃষ্টি করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আর একটি প্রহসনের একদলীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিরোধী দলবিহীন একটি সাজানো নির্বাচন অনুষ্ঠান করে ক্ষমতায় থাকাই তাদের মূল লক্ষ্য। সভায় এই সকল হামলা, মিথ্যা মামলা, দমনমূলক আচরণ অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। অবিলম্বে এই সকল হামলার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়। বিরোধী দলের গ্রেফতারকৃত সকল নেতা-কর্মীকে মুক্তি প্রদান ও আনীত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। অন্যথায় জনগণের প্রতিরোধের মাধ্যমেই অবৈধ সরকারকে বিদায় নিতে হবে। ৩। সভায় সম্প্রতি চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোমিনুর রহমানের প্রকাশ্যে জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে দোয়া চাওয়া প্রশাসনকে দলীয়করণের নগ্ন প্রকাশ বলে অভিহিত করা হয়। সভা মনে করে, অনির্বাচিত অবৈধ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য প্রশাসনসহ সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণের প্রচেষ্টা করছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর জন্য দোয়া চাওয়া সরকারি চাকরি বিধির সুস্পষ্ট লংঘন। সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে ১৯৭১ সালের সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধি ২৫ লংঘন করার দায়ে তাকে অবিলম্বে বরখাস্ত করাই জনগণের দাবি। এই ধরনের আচার আচরণবিধি অনুযায়ী অসদাচরণের দায়ে শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা ২০১৮-এর বিধান মতে দন্ডনীয় অপরাধ। শুধুমাত্র নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে অপসারণ করাই তার অপরাধের শাস্তি হতে পারে না। তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার দাবি সভায় করা হয়। সভায় সকল সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে কোনো দলীয় কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত না থাকার আহ্বান জানানো হয়। ৪। সভায় চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয়ে ও সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা হয়।