প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে বাংলাদেশের দৃশ্যমান কোনো অর্জন নেই : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪৯ এএম, ৯ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৪৯ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে বাংলাদেশের ‘দৃশ্যমান কোনো অর্জন’ নেই বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগীর।
আজ শুক্রবার সকালে শেরে বাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে বাংলাদেশের কি অর্জন হয়েছে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি ‘‘এই সফরে বাংলাদেশের অর্জন এখন পর্যন্ত আমরা যেটা দেখতে পারছি যে, ৫৩ কিউসেক পানি কু্শিয়ারা নদীর। এছাড়া এখন পর্যন্ত আমরা দৃশ্যমান কোনো অর্জন দেখতে পাইনি।”
‘‘ বরঞ্চ যেটা দেখতে পারছি যে, ৫‘শ মিলিয়ন ডলারের একটা প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়েছে যানবাহন কেনার জন্য ভারতের কাছ থেকে। আর বলা হয়েছে যে, সীমান্তে হত্যা জিরোতে আনা হবে। যেদিন এই কথা বলা হয়েছে সেদিনই দিনাজপুরের সীমান্তে একজনকে হত্যা করা হয়েছে, আর দুই জন নিখোঁজ হয়েছে- এই হচ্ছে প্রাপ্তি। আমাদের দৃশ্যমান প্রাপ্তি আমরা এগুলো দেখি।”
‘আর দেখেছি যে, অত্যন্ত সুন্দর সুন্দর কথা বলা হচ্ছে, তাদের ভালোবাসা-প্রেম নিজেদের মধ্যে- সেগুলোর কথাগুলো খুব জোরেজোরে বলা হচ্ছে-সেটাই আমরা বুঝতে পেরেছি।’ বলেন মির্জা ফখরুল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে চারদিনের সফর শেষ করে বৃহস্পতিবার রাতে দেশে ফিরেছেন। এই সফরকালে কুশিয়ারা নদীর পানি প্রত্যাহার, রেলের আধুনিকায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে ভারতের সঙ্গে সাতটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বিএনপি বলেন, ‘‘আমরা আগেও বলেছি যে, সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে যে, এই সফরের আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রী(একে আব্দুল মোমেন) বলেছিলেন যে, তিনি ভারতীয় নেতৃবৃন্দের কাছে অনুরোধ করেছেন যে, আওয়ামী লীগ সরকারকে যেকোনো উপায়ে টিকিয়ে রাখার জন্যে তারা যেন ব্যবস্থা নেয় সে কথা বলেছেন।”
‘‘আমরা সব সময় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং এটা আমরা বিশ্বাস করি যে সমস্ত দেশ গণতান্ত্রিক দেশ, গণতান্ত্রিক বিশ্ব তারা সবসময় সারা বিশ্বে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার জন্য, জনগণের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য তারা তাদের ভুমিকা অক্ষুন্ন রাখবে। ভারত আমাদের বন্ধু প্রতিম দেশ, গণতান্ত্রিক দেশ। আমরা বিশ্বাস করি, ভারতও তাদের যে গণতান্ত্রিক যে চরিত্র সেই চরিত্রকে অক্ষুন্ন রাখবে।”
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ১১টায় সংগঠনটির সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব। পরে প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতেও অংশ নেন তিনি।
এই সময়ে মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, নাজমুননাহার বেবী, নেওয়াজ হালিমা আরলী, চৌধুরী নায়াব ইউসুফ প্রমূখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
‘ফের রেইন অব ট্রেরর শুরু হয়েছে’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে। ঠিক আগের মতো যেটাকে আমরা বলেছিলাম যে, গায়েবী মামলা সেই গায়েবী মামলা দেওয়া হচ্ছে। আপনারা জানেন যে, ইতিমধ্যে আমাদের তিন জন নেতা- যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের নেতা তারা নিহত হয়েছেন। আমি গতকাল দেখতে গিয়েছিলাম পাকুন্দিয়াতে মারাত্মকভাবে আহত ছাত্র দলের ১৪ বছরের এক ছেলেকে।তার ফুসফুসে গুলিবিদ্ধ হয়েছে, লিভারে গুলিবিদ্ধ হয়েছে, তার কিডনিতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। সে রক্ত বমি করছে ডাক্তাররা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তার জীবনরক্ষার জন্য। এটা একটা ঘটনার কথা বললাম আমি।”
‘‘এছাড়াও অনেকের চোখ চলে গেছে, কারো মাথা ফাঁক হয়ে গেছে। সারাদেশে এখন আবার ‘রেইন অব ট্রেরব’, সন্ত্রাসের রাজত্ব তারা আবার শুরু করেছে। আমি বলতে চাই, সন্ত্রাস দিয়ে কখনো টিকে থাকা যায় না।”
তিনি বলেন, ‘‘আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে, আইনমন্ত্রী এবং সেতু মন্ত্রী তারা তো বলতে শুরু করেছেন যে, আমরা সভা-মিছিল এগুলোতে বাঁধা দেবো না। কিন্তু বিএনপি যদি সন্ত্রাসী কাজ করে।
‘‘বিএনপি সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে না, সন্ত্রাস করেও না। এখন পর্যন্ত আপনারা দেখেছেন যে, মিডিয়াতে কোথাও কোনো সন্ত্রাসের চিত্র আসেনি। সন্ত্রাসের চিত্র যা এসেছে, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসের চিত্র এসেছে। ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা তারা চড়াও হয়েছে গণতন্ত্রকামী মানুষের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির উপরে। আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং জনগণের শক্তি দিয়ে এদেরকে পরাজিত করব।”
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিকাল ৪টায় মহিলা দল নয়া পল্টনের কার্যালয় থেকে বর্ণাঢ্য র্যালী বের করবে ।