বাংলাদেশ সীমান্তে গোলা নিক্ষেপের ঘটনায় বিএনপির উদ্বেগ
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ভবিষ্যৎ কর্ম পরিকল্পনা পর্যালোচনায় কমিটি গঠন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৪ পিএম, ৭ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ১২:১৮ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
মিয়ানমার বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশ সীমান্তে গোলা নিক্ষেপের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপি। গত সোমবার রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ উদ্বেগ প্রকাশ হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভা মনে করে পরপর এই ধরনের মর্টারশেল নিক্ষেপ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ওপর মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। এই অনির্বাচিত সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে বাংলাদেশের সীমান্তে এই সব ঘটনা ঘটছে। সভায় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
সভায় আলোচ্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে নিম্নে বর্ণিত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়।
১। সভায় বিগত ৩০ আগস্ট অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ পঠিত ও অনুমোদিত হয়।
২। সভায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সারাদেশে বিএনপি আয়োজিত অনুষ্ঠান ও র্যালির ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী ও কতিপয় দলবাজ পুলিশ সদস্যের যৌথ হামলা, ভাঙচুর, হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা বিশেষ করে নারায়গঞ্জে পুলিশের কর্মকর্তা জনৈক কনক কর্তৃক বেআইনিভাবে চাইনিজ রাইফেল দিয়ে গুলিবর্ষণ করে যুবদল কর্মী শাওনকে হত্যা এবং অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও একই দিনে সিরাজগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নড়াইল, কিশোরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, বরগুনা, ফরিদপুরসহ আরও বেশ কয়েকটি জেলায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, বরগুনার সাবেক সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম মনিসহ অসংখ্য নেতাকর্মী মারাত্মকভাবে আহত হয়। এই সব ঘটনায় পুলিশ বেশির ভাগ জায়গায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা করে এবং পরবর্তীকালে কয়েক হাজার নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করে যাচ্ছে। অনির্বাচিত আওয়ামী লীগের এই অবৈধ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য হত্যা, খুন, নির্যাতন শুরু করেছে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়ার নীল নকশা তৈরি করেছে। সভায় অবৈধ সরকারের বিরোধী দলকে নির্মূল করার হীন চক্রান্তের তীব্র সমালোচনা করা হয়। একদিকে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আচরণের কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা অন্যদিকে বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর গুলিবর্ষণ করে নেতাকর্মীদের হত্যা ও নির্যাতন এই সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্রই উদঘাটন করছে।
সভায় অবিলম্বে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ, এই অবৈধ সরকারের পদত্যাগ দাবি করা হয়। সভায় এই সকল হত্যাকান্ড, জ¦ালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে আন্দোলন আরও বেগবান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় আরও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, যেসব জেলায় পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আক্রমণ চালিয়েছে সেই সব এলাকার জেলাগুলোতে আহত নেতাকর্মীদের দেখ-ভাল করার জন্য সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে পাঠানো হবে।
৩। সভায় পুলিশের গুলিতে নিহত, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়ে প্রতিটি ঘটনায় মামলা দায়েরের জন্য কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ে খবমধষ পবষষ গঠন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৪। সভায় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ভবিষ্যৎ কর্ম পরিকল্পনা পর্যালোচনা করা এবং তা জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে উপস্থাপন করে অনুমোদনের জন্য ড. আবদুল মঈন খানকে আহ্বায়ক, জাবিউল্লাহ, জহির উদ্দিন স্বপন, এবিএম মোশারফ সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি অতি দ্রুত প্রস্তাব পর্যালোচনা করে জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে উপস্থাপন করবে।
৫। সভায় এক সপ্তাহের মধ্যে পুনরায় মিয়ানমার বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশ সীমান্তে গোলা নিক্ষেপের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে পরপর এই ধরনের মর্টারশেল নিক্ষেপ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ওপর মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। এই অনির্বাচিত সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে বাংলাদেশের সীমান্তে এই সব ঘটনা ঘটছে। সরকারের ব্যর্থতার কারণে এখন পর্যন্ত সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্ঠন সমস্যার সমাধান না হওয়া এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের কোনো ইতিবাচক কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। সভা এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানায়।
৬। সভায় দেশের চরম অর্থনৈতিক সংকটের মাঝে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রচার চালাতে জনগণের ১৩২ কোটি টাকার অর্থ অপচয়ের এলইডি প্রকল্প গ্রহণের তীব্র সমালোচনা করা হয়। সভা মনে করে শুধমাত্র দুর্নীতি ও নির্বাচনের পূর্বে ফায়দা নেয়ার জন্য এই ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।