ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিদেশী শক্তির দ্বারস্থ হচ্ছে সরকার : প্রিন্স
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০৬ পিএম, ৬ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:১৪ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, জনবিচ্ছিন্ন সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে জনগণকে বাদ দিয়ে বিদেশী শক্তির দ্বারস্থ হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখতে তিনি ভারতের সহযোগিতা চেয়েছেন।
ভারত সফররত প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভারতের সহযোগিতা চাচ্ছেন কি না, জাতি তা জানতে চায়। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আগের মতই 'হাটে হাড়ি ভেঙ্গে' দিতে পারেন, সেই আশঙ্কায় কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাদ দিয়েই প্রধানমন্ত্রী দিল্লীতে উড়াল দিলেন?
তিনি বলেন, তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ১৭০ জনের বিশাল লটবহর নিয়ে বিদেশ সফর মহাদুর্ভোগের শিকার মানুষের সাথে উপহাসের শামিল।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আজ মঙ্গলবার বিকেলে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার গাড়ো পাহাড় সংলগ্ন দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের চাড়িয়াপাড়া বাজারে ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখছিলেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি বলেন, সরকারের সব কৌশল-অপকৌশল জাতির সামনে উন্মোচিত হয়ে যাচ্ছে। বিদেশে দেন-দরবার করে কোনও লাভ নাই। সরকারের অপকর্ম বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তিনি বলেন, একদিকে তারা গণতন্ত্র, ভোটাধিকার,মানবাধিকার হরণ করে কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসন কায়েম করেছে, অন্যদিকে দুর্নীতি। লুটপাট করে অর্থনীতিকে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। ভুল ও অপরিনামদর্শী নীতি, সিদ্ধান্তে জ্বালানী তেল, সার, নিত্যপণ্য মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। উচ্চমূল্য দিয়েও কৃষক সার পাচ্ছে না, ফসলকর ক্ষেতে পানি দিতে পারছে না। ফসল উৎপাদন নিয়ে কৃষক দিশেহারা। অদূর ভবিষ্যতে তীব্র খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসব দিকে সরকারের নজর নাই। তারা নজর শুধু ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচনে।
তিনি বলেন, জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভয় পায়। সেজন্য বিদেশী শক্তির উপর নির্ভর করে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। সে আশা গুড়েবালি উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের বিশ্বাস যোগ্যতা দেশ-বিদেশে তলানীতে ঠেকেছে। বার বার প্রতারণা, ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। তাদের এমপিরা এখন 'ফ্রুটিকা খেয়ে সত্য কথা বলার' বিজ্ঞাপনের মতো বলতে শুরু করেছেন, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হন নাই। আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন নয় সিলেকশন হয়, এটা প্রমাণিত সত্য। তাই আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন গণদাবীতে পরিণত হয়েছে। দাবী না মানলে সরকারের পতন ঘটিয়ে গণদাবী আদায় করা হবে। 'বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবারে তোমায় ঘুঘু বধিব পরান' প্রবাদ বাক্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার আর ঘুঘুকে ধান খেতে দেয়া হবে না। কড়ায়-গন্ডায় ধান মেপে জনগণ এবার ফসল ঘরে ওঠাবে ইনশাআল্লাহ।
বিক্ষোভ সমাবেশে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, জনদুর্ভোগ সৃস্টিকারী সরকার গণ আন্দোলনে ভয় পেয়ে ভয় দেখিয়ে আন্দোলন দমন করতে নিষ্ঠুরতার পথ বেছে নিয়েছে। আমরা ভয়কে জয় করে আন্দোলন এগিয়ে নিচ্ছি। গণ আন্দোলন দমন করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাড় করানোর পরিণতি কারো জন্য ভালো হয় না।
জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা গুলি করে পাখির মতো মানুষ হত্যা করে জনপদ রক্তাক্ত করছে। সেদিন বেশী দুরে নয়,যেদিন এর জবাব তাদেরকে দিতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল হাশিমের সভাপতিত্বে অনুস্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আজহাজ্ব মফিজ উদ্দিন, অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম কাজল,আনিসুর রহমান মানিক, ফরহাদ রাব্বানী সুমন, মোয়াজ্জেম হোসেন খান লিটন, উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি আজহারুল হক, যুগ্ম সম্পাদক আবদুল কুদ্দুছ, গোয়াতলা ইউপি চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম টোটন, দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির, বিএনপি নেতা গাজীউর রহমান, জুয়েল খান, আব্দুল খালেক মাস্টার, ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মোফাজ্জল হোসেন, জেলা যুবদলের সহ সভাপতি আবুল কাশেম ডলার, যুগ্ম সম্পাদক ফরহাদ আল রাজি, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক নয়ন মন্ডল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব কামরুল হাসান সুমন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক ফারুক হোসাইন, উপজেলা তাঁতী আহ্বায়ক ওসমান গণি, শ্রমিক দল নেতা ওবায়দুল ফকির, ওলামা দল নেতা মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা ওবায়দুল হক, আবদুস সাত্তার, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জালাল উদ্দীন, ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি আবদুল খালেক, যুবদল সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান, যুবদল নেতা হানিফ মন্ডল, ইয়াকুব আলী, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুস সাত্তার, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুসতাকিন হোসেন, বর্তমান সভাপতি ইবরাহিম মিয়া বক্তব্য রাখেন।