দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহাসড়কে ছাত্রলীগের শোডাউন : গ্রেফতার ৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:১৩ পিএম, ২৮ আগস্ট,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৩১ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কে শোডাউন করে। এতে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে।
আজ রবিবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিং এ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোঃ শাহজাহান (পিপিএম)। পুলিশ সুপার জানান, গত ২৫ আগষ্ট বিকেল ৫ টার দিকে কানাইপুরের ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কে রামদা, ছোড়া, লাটিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র-সজ্জিত হয়ে মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়ানো বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রচারিত হলে পুলিশের নজরে আসে। আমরা তৎক্ষণাৎ এ বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করি। অনুসন্ধানে জানা যায় সাবেক এসপি আলিমুজ্জামান চলে যাওয়ার সাথে সাথে কানাইপুর এলাকায় সন্ত্রাসী খাজা বাহিনীর সশস্ত্র মহড়া শিরোনামে বিভিন্ন পোস্ট ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলেও বিষয়টি ছিল কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সৃষ্ট। কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিলে একটি গ্রুপ ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম আসলাম এবং ছাত্রলীগের কর্মী ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের পদপ্রার্থী সোহাগ মিলে অপর একটি গ্রুপের বিরোধকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও শোডাউন। শোডাউনের মাধ্যমে আসলাম ও সোহাগকে ভয় দেখানোর জন্য থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সৌরভ স্থানীয় সন্ত্রাসী খাজাগ্রুপের দিদার, শহীদ, সোহেলসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজনকে নিয়ে এসে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে মহাসড়কে দেশীয় অস্ত্র সজ্জিত হয়ে শোডাউন করে। এই শোডাউন এর উদ্দেশ্য ছিল কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগের পদপ্রার্থী সোহাগকে আক্রমণ করা, তাদের ভয়-ভীতি দেখানো এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করা। পুলিশী তদন্ত চলাকালে কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি এস.এম আসলাম বাদী হয়ে সন্ত্রাসী খায়রুজ্জামান খাজাসহ মোট এজাহারনামীয় ১৩ জন ও অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে দলবদ্ধ হয়ে অবৈধ শক্তির মহড়া প্রদর্শনের মাধ্যমে জনমনে ভয়-ভীতি, ত্রাস ও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও বাড়িঘর ভাংচুর করার বিষয়ে ২৮ আগষ্ট কোতোয়ালী থানায় ২০০২ এর ৪-৫ ধারায় আইন-শৃঙ্খলা বিঘœকারী আপরাধ (দ্রুত বিচার) আইনে একটি মামলা দায়ের করেন যার নং- ৭২। পরবর্তীতে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হওয়া শোডাউনের ভিডিও ফুটেজ দেখে সুনির্দিষ্ট ভাবে পাঁচ জন আসামিকে সনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। ভিডিও ফুটেজ দেখে মিছিলের অগ্রভাগে থাকা রামদা বা ছেনদা হাতে ০৩ জন সাগর বেপারী, নাজমুল, রাকিব এবং লোহার রড হাতে থাকা তুষারকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া মিছিলের অন্যতম আয়োজক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির ও তুষার সহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সুপার আরও বলেন, সন্ত্রাসের প্রতি জিরো টলারেন্স অবস্থানকে সমুন্নত রেখে এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনতে কঠোর অভিযান চলমান আছে । ফরিদপুর শহরের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য কাউকে ন্যূনতম প্রশ্রয় দেয়া হবে না। ফরিদপুর শহরে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সকল অভিযান চলমান থাকবে এবং আরো বেগবান করা হবে। ফরিদপুরের মাটিতে সন্ত্রাসীদের কোনো জায়গা দেয়া হবে না।