বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:১৭ পিএম, ২৬ আগস্ট,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:০৬ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
দেশব্যাপী বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত চলমান বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত পরশু এবং গতকাল নরসিংদী, খুলনা, ঝিনাইদহ গাজীপুরের কালিগঞ্জ, নড়াইল, বরিশাল দক্ষিণ ও উত্তর জেলা, পটুয়াখালী ও মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বর্বরোচিত ও নিষ্ঠুর হামলা চালিয়ে নেতাকর্মীদেরকে গুরুতর আহত করেছে। পুলিশ গ্রেফতার করেছে অসংখ্য নেতাকর্মীকে। এছাড়া রাজশাহী মহানগরের অন্তর্ভুক্ত কাশিয়াডাঙ্গা থানা ছাত্রদলের আহবায়ক মোমিনুল ইসলাম রনিকে হত্যার উদ্দেশ্যে আওয়ামী দুষ্কৃতকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করেছে, তিনি এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মূমুর্ষ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা সংঘটিত এসব নৃশংস ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বর্তমান সরকার দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করার হীন চক্রান্তের অংশ হিসেবে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা প্রদান করছে। সরকারের নীল নকশা বাস্তবায়ন করতে সরকারদলীয় সন্ত্রাসী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, ভাংচুর, বানোয়াট মামলা দিয়ে গ্রেফতার এবং বিএনপির সভা-সমাবেশ পন্ড করার কাজে সিপাহসালারের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। গণবিচ্ছিন্ন আওয়ামী সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং দলীয় সন্ত্রাসীদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে দাম্ভিকতা, রক্তপাত আর মিথ্যাচারকে পুঁজি করে দেশ চালাতে গিয়ে রাষ্ট্রকে গভীর সংকটে নিপতিত করেছে। অন্যায় অবিচার ও ভয়াবহ অপশাসনের বিরুদ্ধে কেউ যাতে দুঃসাহস দেখাতে না পারে সেজন্য বিএনপিকে ধ্বংস করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে সরকার। তারা বিএনপি এবং বিরোধী দলগুলোর সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক কর্মসূচি বানচাল করতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে বেপরোয়াভাবে ব্যবহার করছে। দেশব্যাপী বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত চলমান বিক্ষোভ কর্মসূচি বানচালের লক্ষ্যে নরসিংদীর রায়পুরায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকন এবং সদস্য রফিকুল আমিন ভুঁইয়াসহ অনেক নেতাকর্মীকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার খুলনা জেলাধীন দিঘলিয়ায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পুলিশের ছত্রছায়ায় নিষ্ঠুর হামলা চালিয়ে খুলনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোল্লা খায়রুল ইসলাম, বিএনপি নেতা সোহেল পারভেজ, ইব্রাহিম শেখ, ছাত্রদল নেতা সবুজ গাজী, আমির হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন, রাব্বি রিয়াজ, জুলফিকার গাজীসহ কমপক্ষে ৩০ জন নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করে, গ্রেফতার করা হয় দিঘলিয়া উপজেলা যুবদল নেতা কুদরতে ইলাহী স্পিকার ও রাসেল আহমেদ নাসিমকে। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা দফায় দফায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুরসহ কবিরপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আবু তালেব মিয়ার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতা মোকতার হোসেন তারা, আবুল কালাম, আবুল মৃধা, আতিউর সরদার, মহিলা দলের মুন্সিগঞ্জ জেলা সভানেত্রী সেলিনা আক্তার বিনা এবং সহ-সভাপতি রোকেয়া বেগম, যুবদল নেতা শেখ রনি, ফারুক মৃধা, বিল্লাল হোসেন প্রিন্স, জেমস, মাসুদ, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রোজীন, শামীম সরদার, ছাত্রদল নেতা হাসিব, আকাশ, শিশির চৌধুরী আরিফ, তুর্জয় খান মুন্না, জানে আলম, সিয়াম শেখ এবং আরিফের ওপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে গুরুতর আহত করেছে। আরিফের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। মুন্সিগঞ্জে কর্মসূচিতে হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় থানা বিএনপির সদস্য সচিব হাফিজুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। রাজশাহী মহানগরের অন্তর্ভুক্ত কাশিয়াডাঙ্গা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোমিনুল ইসলাম রনিকে হত্যার উদ্দেশ্যে আওয়ামী দুষ্কৃতকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করেছে, তিনি এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। নেত্রকোনা জেলাধীন কেন্দুয়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যাপক হামলা চালিয়ে সান্দিকোনা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা বাবুসহ ১২ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করেছে, আহত নেতাকর্মীদের মধ্যে কয়েকজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নড়াইলের মাইজপাড়ায় কর্মসূচি পালনকালে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মাহবুব মুর্শেদ জাপল ও সদর থানা বিএনপির সদস্য সচিব মোজাহিদুর রহমান পলাশকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বরিশাল দক্ষিণ জেলার উজিরপুর উপজেলায় সমাবেশস্থলে আসার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় শ্রমিক দল নেতা সোলায়মান খান হাইয়ুম ও বিএনপি নেতা মিলন হাওলাদারসহ ২০ জনের অধিক নেতাকর্মী আহত হয়। গাজীপুরের কালিগঞ্জে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে যুবদল নেতা সাখাওয়াত হোসেন, মো. নিহার, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. বুলবুল, মো. তুষার শেখ, মো. শরিফ হোসেন, ছাত্রদল নেতা নুরুল আমিন আসিফ, তুষার শেখ, সেপু ও বিএনপি নেতা শাহ আলম কিরণ, মো. আলমগীর দর্জিসহ অনেক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করে এবং ৮টি মোটরসাইকেলসহ ৫টি অটোরিকশা ও দুটি সিএনজি ভাংচুর করে। পটুয়াখালীর গলাচিপায় আওয়ামী গুন্ডারা বিএনপির কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে ছাত্রদল নেতা রাশেদুল ইসলাম ও রাজীব মাহমুদকে আহত করেছে। খাগড়াছড়িতে বাঘাইছড়ি উপজেলায় কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে ছাত্রদল নেতা আল আমিন, যুবদল কর্মী রফিকসহ ৬-৭ জন নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। এসব ঘটনা প্রমাণ করে সরকার জনবিস্ফোরণের আতঙ্কে ভুগছে, আর তাই তারা দিগি¦দিক জ্ঞানশূন্য হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। তবে সকল অপকর্মের জন্য সরকারের পতন এখন খুবই সন্নিকটে।
বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহ্বান জানান। তিনি গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তিসহ আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।