গণতন্ত্র মঞ্চের আত্মপ্রকাশ 'ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে'র সাফল্য : নজরুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৪ পিএম, ৯ আগস্ট,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:৪৪ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
গণতন্ত্র মঞ্চের আত্মপ্রকাশ 'ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে'র সাফল্য হিসেবে দেখছেন নজরুল ইসলাম খান।
জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সমন্বয়ের গঠিত 'গণতন্ত্র মঞ্চ' এর আত্মপ্রকাশের বিষয়ে মঙ্গলবার সকালে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, '' গণতন্ত্র মঞ্চের আত্মপ্রকাশকে আমরা স্বাগত জানাই। তারা যেসব দাবি উল্লেখ করেছেন, এই দাবিগুলো আমরাও দীর্ঘদিন যাবত করে আসছি যে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বাতিল করতে হবে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে, নির্বাচন কমিশন পূনর্গঠন করতে হবে- এই সবগুলো কথা তাদের দাবিতে আছি আমরা দেখলাম।''
'' কাজেই আমি মনে করি যে, এটা আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের যে প্রয়াস দীর্ঘদিন ধরে আমরা চালিয়ে আসছে সেটা আর একটা সাফল্য। আগামীদিনে আরো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের পক্ষে এটা একটা অগ্রগতি বলে আমরা মনে করি।"
গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাতটি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে গঠিত 'গণতন্ত্র মঞ্চে'র আত্মাপ্রকাশ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব।
গতকাল যুব দলের সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য বলেছেন, যে প্রক্রিয়ায় আপনারা আন্দোলন করছেন তাতে এই সরকারকে হঠানো বা দাবি আদায় সম্ভব না। আরো কঠোর কর্মসূচি, হরতাল-অবরোধের কথা উনারা বলেছেন। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, '' আপনারা জানেন যে, ২০১৪-১৫ সালের দিকে কী আন্দোলন হয়েছে? প্রয়াত সাংবাদিক এবিএম মুসা বলেছিলেন যে, এটা এখন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নয়, এটা গণপ্রজাতন্ত্রী ঢাকা সরকার। কারণ গোটা বাংলাদেশের ওপর এই সরকারের আর কোনো প্রভাব নাই।"
'' তারপরেও অনেক মন্ত্রীরা আছেন তারা বলেন, আমরা নাকী আন্দোলন করতে পারি না। এখন তারা আন্দোলন করতে যা বুঝেন এগুলো যদি সবাই বুঝতে চান তাহলে আমরা বিপদের মধ্যে আছি। আন্দোলন মানে হচ্ছে জনণের সংঘবদ্ধ প্রতিবাদ-প্রতিরোধ।সেটা হরতালের মাধ্যমে হতে পারে, আরো বিভিন্ন মাধ্যমে হতে পারে এবং মনে রাখতে হবে যে, আমরা শ্লোগান দিতে পারি না তা নয় কিন্তু যখন-তখন দেবো কেনো? আমরা হরতাল করি না বা করতে পারি না তা নয় কিন্তু যখন তখন করব কেনো? আমরা অবরোধ এর আগে করি নাই বা করতে পারি নাই তা নয় কিন্তু যখন তখন করবো কেনো? যখন করার সিদ্ধান্ত হবে আপনারা জানতে পারবেন। ইনশাল্লাহ আমরা মনে করি, জনগণের মধ্যে যে ক্ষোভ-বেদনা, যে বিক্ষোভ কাজ করছে এবং সরকার অযোগ্যতা, রাষ্ট্র পরিচালনায় যে ব্যর্থতা-অক্ষমতা এর বিরুদ্ধে যে মগ সংগঠিত হচ্ছে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যেভাবে সংগঠিত হচ্ছে তাদের আগামী দিনে যখনই আমরা কোনো কর্মসূচি দেবো তাতে জনগণ সম্পৃক্ত হবে।"
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বিএনপির বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ''আপনারা সাংবাদিক মানুষ আপনারা ভালো জানেন এটা। এই ব্যাপারগুলো আলোচনার মাধ্যমে হয় এবং এটা আগে থেকে বুঝা গেলে পরে এটা ব্যর্থ করে দেয়ার লোক আছে। সেজন্য আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি এবং খুব শিগগিরই আপনারা জানতে পারবেন।"
'' যেসব কথা শুনছেন এগুলোর কথার কোনো অর্থ নাই। মানুষ যখন ভয় পায়, অন্ধকারের মধ্যে রাত্রে হাটতে গেলে জোরে জোরে গান গায়। এটা এই কারণে যে, তারা ভয় পাচ্ছে। ওদের কথা বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। বড় বিপদে আছে তারা।"
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আশুরা উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হয়। মিলাদপূর্ব আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করীম শাহিন, শামীমুর রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, ধর্ম বিষয়ক সহ সম্পাদক আবদুল বারী ড্যানি, উলামা দলের যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা মাহমুদুল হাসান শামীম বক্তব্য রাখেন।
উলামা দলের সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম তালুকদারের সভাপতিত্বে এই মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে স্বেচ্ছাসেবক দলের রফিক হাওলাদার, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, মতস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, শ্রমিক দলের সুমন ভুঁইয়াসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।