না’গঞ্জে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এসপি অফিসের সামনে কিশোর খুন : গ্রেপ্তার-৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২৯ পিএম, ১ আগস্ট,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ১১:৩৫ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ কার্যালয়ের সামনেই সজীব (১৭) নামের কিশোর খুন হয়েছে। নিহত পরিবারের অভিযোগ, চারজন মিলে সজীবকে বাড়ি থেকে ডেকে নেওয়ার পরেই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে। সজিব নিহতের ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো সিয়াম (১৮) সাব্বির (১৮), তৈয়ব (১৮) রাহাত (১৮) লিংকন চন্দ্র দাস (১৮) নাজমুল (১৮) ও রাকিব (২০)।
গতকাল রবিবার (৩১ জুলাই) রাতে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে লিংক রোডের মোড় থেকে সজীবকে আহত অবস্থায় উদ্ধারের পর হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত্যু হয়।
সজীব শহরের চাষাঢ়া রামবাবুর পুকুরপাড় এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে। কামাল হোসেন একটি ভাঙারির দোকান চালাতো। সজীব সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনার পর আর পড়াশোনা করেনি। সে বেকার ছিল।
সজীবের বড় বোন শাহীনূর আক্তার জানান, সজীবকে একটি কাজে লাগানোর চেষ্টা ছিল। সে সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হয়। পরে রাতে শুনি তাকে ছুরি মেরে হত্যা করেছে।
সজীবের বাবা কামাল হোসেন জানান, সন্ধ্যায় চারজন মিলে সজীবকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাদের মধ্যে তিনজন এসে জানায় সজীবকে মেরে ফেলা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যায় চাঁদমারী মাউরাপট্টি এলাকাতে কিশোর গ্যাংদের একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। সেখানে একজন আহত হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর কিছু সময় পরেই পুলিশ সুপারের মূল ফটকের সামনে লিংক রোডের মোড়ে সজীবকে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার শরীরে ছুরিকাঘাতের দাগ ছিল।
পুলিশ সুপার কার্যালয়ের দক্ষিণের সড়কটি গিয়ে মাউরাপট্টিতে সংযোগ হয়েছে। এ সড়কে প্রায়শই সন্ধ্যার পর মাদক বিক্রেতা ও সেবকদের আনাগোনা থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী সহকারী সিদ্দিকুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, কোর্ট থেকে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের বরাবর লিংক রোডে কে বা কারা একটি যুবক বয়সের ছেলেকে ছুরিকাঘাত করেছে তা দেখিনি। কিন্তু ছেলেটার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে তাকে ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেছেন।
১০০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ছেলেটির মৃত্যু হয়েছে। তার বুকে একটি ছুরিকাঘাতের জখম রয়েছে।
সজিব নিহতের ঘটনায় নিহতের বাবা কামাল হোসেন আজ সোমবার (১ আগস্ট) সকালে বাদী হয়ে গ্রেফতাকৃত সাতজন সহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ্য এবং অজ্ঞাত নামা আরো ৭-৮ জনকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে।
নিহত সজিবের বাবা জানায়, সন্ধ্যার দিকে বাড়ীর সামনের খেলার মাঠ থেকে তৈয়ব তার পুত্র সজিব কে ডেকে নিয়ে যায় চানমারীস্থ নীট হাউজের সামনে। সেখানে নিয়ে গিয়ে তার পুত্রকে অভিযুক্ত আসামীরা এলোপাতাড়ি ভাবে ছুরিকাঘাত করে। এসময় তার ছেলের ডাক চিৎকারে নিহত সজিবের বন্ধু রিফাত এগিয়ে গেলে তাকে ও আসামীরা ছুরিকাঘাত করে। এ সময় সজিব ও রিফাতের ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে তাদেরকে পথচারীরা শহরের জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রাত ৮টার দিকে সজিবকে মৃত ঘোষনা করে। এবং রিফাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার হাজীগঞ্জ ফাড়ির ইনচার্জ বিপ্লব কুমার চৌধুরী জানায়, আধিপত্য ও প্রভাববিস্তারকে কেন্দ্র করে খুন হয় সজিব।