সেদিন সংসদের মেম্বারস ক্লাবের ঘটনার ব্যাখ্যা দিলেন এমপি রাজী ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০২ এএম, ২৪ জুলাই,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:১২ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
গত ১৬ জুন জাতীয় সংসদের মেম্বারস ক্লাবে কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভায় কী ঘটেছিল তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন কুমিল্লা-৪ সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। তিনি বলেছেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমি বিব্রত। আমার বক্তব্য না নিয়েই বিভিন্ন মিডিয়া সংবাদ প্রকাশ করেছে। অপ্রাসঙ্গিক কিছু ঘটনায় আমার নাম জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, এগুলো উদ্দেশ্যমূলক।
আজ রবিবার (২৪ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন রাজী মোহাম্মদ ফখরুল।
সেদিনের ঘটনায় সংসদ ভবনের এলডি হলে সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানের হাতাহাতি শিরোনামে একটি প্রতিবেদন দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তোলে।
সেই ঘটনার বিবৃতিতে রাজী বলেছেন, দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় ধরে দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে নেতৃত্ব বাছাই ও সংগঠনকে গতিশীল করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা মোতাবেক গত ২১ জুলাই সম্মেলনের দিন নির্ধারিত হয়। কিন্তু কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী মাস্টার এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ শুরু থেকেই এ সম্মেলন পণ্ড করতে তৎপর ছিলেন। শুধু তাই নয়, গত ৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় কুমিল্লা (উত্তর) জেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক রানাকে ফোন করে সম্মেলন প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ভানী ইউনিয়ন আ.লীগের কর্মীসভা বন্ধ করতে হুমকি দেন আবুল কালাম আজাদ। উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন, ভানী ইউনিয়নে কর্মী সভায় কেউ এলে সে হাত-পা নিয়ে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরে যেতে পারবে না।
সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের অভিযোগ, গত ২ জুলাই সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে ফেরার পথে উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের সমর্থকরা আমার গাড়ি কুমিল্লায় অবরোধ করে রাখে। এ সময় আমার সঙ্গে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং দেবিদ্বার থানা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম মনিরুজ্জামান মাস্টারকে হত্যার উদ্দেশ্যে হুমকি দেওয়া হয়।
১৬ জুনের ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে রাজী বলেন, গত ১৬ জুন জাতীয় সংসদের মেম্বারস ক্লাব এ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা সম্পন্নের পর ব্রিফিংও শেষ, ঠিক এমন সময় এলাহাবাদ ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণা কেন্দ্র করে অনুযায়ী উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়। তখন আমি সবাইকে শান্ত হতে বলি। এ সময় কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ আমাকে উদ্দেশ্য করে গালাগাল (যা প্রকাশ যোগ্য নয়) করতে থাকেন। একপর্যায়ে আক্রমণের জন্য তেড়ে আসেন। অল্পের জন্য বড় আঘাত থেকে রক্ষা পাই। এমতাবস্থায় উপস্থিত নেতাকর্মীরা আমাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম. রুহুল আমিন তাকে শান্ত করতে গেলে তার বুকে ধাক্কা দেন। যার সিসিটিভি ফুটেজ এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পরে আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতার হস্তক্ষেপে আবুল কালাম আজাদ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
রাজী বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী মাস্টার এককভাবে ফেসবুকে এলাহাবাদ কমিটি ঘোষণা করলে তৃণমূলে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, কুমিল্লা (উত্তর) জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমাদের সবার অভিভাবক। তার ওপর জেলার সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী মাস্টার ও আবুল কালাম আজাদের অশ্লীল ভাষায় গালাগাল এবং পরবর্তী সময় শারীরিক নির্যাতন অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক। পাশাপাশি সংসদ ভবনের অভ্যন্তরে একজন আইন প্রণেতার প্রতি আক্রমণ শুধু ন্যক্কারজনক নয়, দেশের সব সংসদ সদস্যের প্রতি অবমাননার শামিল।
সেদিন সংসদ ভবনের এলডি হলে ঘটে যাওয়া ঘটনার ব্যাপারে তদন্তপূর্বক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল।